০৭:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
পর্দার আলো থেকে হৃদয়ের গল্প—তাসনিয়া ফারিণের সাফল্যের সফর দ্য অ্যান্থোলজি’ নিয়ে রেকর্ড ভাঙলেন বিলি আইলিশ ‘Grey Days’—নিজের পরিচালনায় নতুন ইপি আনছেন বিটিএসের ভি সেলেনা গোমেজ অভিনয় করবেন টেহানো তারকা সেলেনা কিন্তানিয়াকে নিয়ে বায়োপিকে ২০২৬-এ যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে স্টেডিয়াম ট্যুরে স্ট্রে কিডস প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে ‘Citadel: Maya’-তে আলিয়া ভাট—নেটফ্লিক্সের নতুন ভারত অধ্যায় মার্ভেল সিনেমায় ব্ল্যাকপিংকের জেনি—‘Midnight Sons’-এ নতুন নায়িকা গাজায় মানবিক সহায়তা—ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতা নিয়ে আইসিজের মতামত আসছে ডিউন’-এর পর আবার ভিলনুভের সঙ্গে জেন্ডায়া—নতুন সাই-ফাই ‘Eclipse Station নেটফ্লিক্সের ‘Zero Day’-এ অভিনয়ে বিটিএসের জংকুক

কোরিয়ায় চুংচেওং প্রদেশের ২ লাখ ৯০ হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর ‘বাংবাং ডে’ উৎসব

তাজা বেক করা রুটির ঘ্রাণে ভেসে উঠেছিল চেওনান শহর। দক্ষিণ চুংচেওং প্রদেশের এই শহরে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের ‘বাংবাং ডে ফেস্টিভ্যাল’-এ অংশ নিয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৯০ হাজার মানুষ। দক্ষিণ কোরিয়ার উদীয়মান “পাউরুটির রাজধানী” হিসেবে চেওনানের সুনাম এখন দেশজুড়ে আলোচনায়।

ঐতিহ্য ও জন্মস্থান: ‘হোদু গওয়া’ থেকে রুটি সংস্কৃতির বিকাশ

কোরিয়ান ভাষায় ‘পাউরুটি’ শব্দটি শুধু রুটি নয়, বরং বিস্তৃতভাবে পেস্ট্রি ও নানা রকম বেকড খাবারকেও বোঝায়। চেওনান এ খ্যাতি অর্জন করেছে বিশেষ এক ঐতিহ্যের কারণে—১৯৩৪ সালে এখানেই প্রথম তৈরি হয় বিখ্যাত ‘হোদু গওয়া’ বা আখরোট পেস্ট্রি। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আখরোট ব্যবহার করে তৈরি এই মিষ্টান্ন সময়ের সঙ্গে হয়ে উঠেছে কোরিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় স্ন্যাকস।

এখন চেওনান শহর গর্ব করতে পারে—রাজধানীর বাইরে তৃতীয় সর্বোচ্চ বেকারির সংখ্যা রয়েছে এখানে। শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই বেকারি সংস্কৃতিকে ঘিরেই প্রতিবছর আয়োজিত হয় ‘বাংবাং ডে ফেস্টিভ্যাল’, যা এখন স্থানীয় ঐতিহ্যের বড় প্রতীক।

Lifestyle - The Korea Times

উৎসবের আয়োজনে স্থানীয় পণ্যের গুরুত্ব

শনিবার ও রবিবার দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই উৎসবে ছিল রুটি সংস্কৃতি, ইন্টারঅ্যাকটিভ ওয়ার্কশপ ও লোকাল পর্যটনের সমন্বয়। এবারের মূল থিম ছিল সহযোগিতা—স্থানীয় কৃষক, বেকারি ও ব্যবসায়ীদের একত্র করে স্বাস্থ্যকর ও স্থানীয় উপকরণভিত্তিক রুটি তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া।

চেওনানের ৫১টি স্থানীয় বেকারি অংশ নেয় এই উৎসবে। তারা উপস্থাপন করে আখরোট পেস্ট্রি, টার্ট, চালের তৈরি রুটি ও নানা সৃজনশীল বেকড খাবার। অনেক দোকানই শেষ পর্যন্ত বিক্রি শেষ করে দেয়। পাশাপাশি উৎসবে ছিল খোলা বাজার, হাতে-কলমে বেকিং শেখার কর্মশালা এবং শিল্পভিত্তিক প্রদর্শনী, যা পরিবারসহ সকল বয়সী দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

উৎসবস্থল ও সাংস্কৃতিক আয়োজন

চেওনান স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এ উৎসবে ছিল জনস্রোত। উৎসবের আকর্ষণ বাড়াতে পণ্যের মূল্য প্রদর্শনের স্বচ্ছতা রক্ষা ও বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়। নামইয়াং ডেইরি ও নংশিমের মতো বড় প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়—তারা বিনামূল্যে পণ্য বিতরণ ও স্থানীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণের আয়োজন করে। কৃষি বিপণন বিভাগও স্থানীয় ফল ও কৃষিপণ্য প্রচারে অংশ নেয়।

Cheonan Sports Complex crowds with locals and visitors during the 2025 Bbangbbang Day Festival in Cheonan, South Chungcheong Province, Sunday. Courtesy of Cheonan Metropolitan Government

সৃজনশীল প্রদর্শনী ও বিনোদন

উৎসবের প্রদর্শনী এলাকায় চেওনানের বিখ্যাত আখরোট, নাশপাতি ও আঙুর দিয়ে তৈরি খাদ্যশিল্পের অনন্য প্রদর্শন দেখা যায়। পাশাপাশি ছিল সঙ্গীত ও বিনোদনের মেলা—কে-পপ কনসার্ট, শিশুদের নাটক এবং রাতভর চলা ড্রোন লাইট শো শহরটিকে করে তোলে উৎসবমুখর।

স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব

চেওনানের ভারপ্রাপ্ত মেয়র কিম সক-পিল বলেন, “বাংবাং ডে শুধু খাদ্য উৎসব নয়, এটি আমাদের শহরের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও উদ্ভাবনকে একত্র করে। আমরা চাই আরও বেশি মানুষ চেওনানের স্বাদ ও প্রাণকে চিনুক এই রুটির মাধ্যমে।”

চেওনানের পাউরুটি উৎসব এখন শুধু একটি স্থানীয় আয়োজন নয়, বরং এটি কোরিয়ার বেকিং সংস্কৃতির এক প্রতীক হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কৃষি, উদ্ভাবনী খাদ্যশিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের মাধ্যমে শহরটি এখন সত্যিই নিজের অবস্থান শক্ত করছে—“কোরিয়ার রুটির রাজধানী” হিসেবে।

 

# চেওনান,# দক্ষিণ কোরিয়া, #বাংবাং ডে #ফেস্টিভ্যাল, #পাউরুটি সংস্কৃতি#, হোদু গওয়া, #স্থানীয় অর্থনীতি,# সারাক্ষণ রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

পর্দার আলো থেকে হৃদয়ের গল্প—তাসনিয়া ফারিণের সাফল্যের সফর

কোরিয়ায় চুংচেওং প্রদেশের ২ লাখ ৯০ হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর ‘বাংবাং ডে’ উৎসব

০২:২৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

তাজা বেক করা রুটির ঘ্রাণে ভেসে উঠেছিল চেওনান শহর। দক্ষিণ চুংচেওং প্রদেশের এই শহরে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের ‘বাংবাং ডে ফেস্টিভ্যাল’-এ অংশ নিয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৯০ হাজার মানুষ। দক্ষিণ কোরিয়ার উদীয়মান “পাউরুটির রাজধানী” হিসেবে চেওনানের সুনাম এখন দেশজুড়ে আলোচনায়।

ঐতিহ্য ও জন্মস্থান: ‘হোদু গওয়া’ থেকে রুটি সংস্কৃতির বিকাশ

কোরিয়ান ভাষায় ‘পাউরুটি’ শব্দটি শুধু রুটি নয়, বরং বিস্তৃতভাবে পেস্ট্রি ও নানা রকম বেকড খাবারকেও বোঝায়। চেওনান এ খ্যাতি অর্জন করেছে বিশেষ এক ঐতিহ্যের কারণে—১৯৩৪ সালে এখানেই প্রথম তৈরি হয় বিখ্যাত ‘হোদু গওয়া’ বা আখরোট পেস্ট্রি। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আখরোট ব্যবহার করে তৈরি এই মিষ্টান্ন সময়ের সঙ্গে হয়ে উঠেছে কোরিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় স্ন্যাকস।

এখন চেওনান শহর গর্ব করতে পারে—রাজধানীর বাইরে তৃতীয় সর্বোচ্চ বেকারির সংখ্যা রয়েছে এখানে। শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই বেকারি সংস্কৃতিকে ঘিরেই প্রতিবছর আয়োজিত হয় ‘বাংবাং ডে ফেস্টিভ্যাল’, যা এখন স্থানীয় ঐতিহ্যের বড় প্রতীক।

Lifestyle - The Korea Times

উৎসবের আয়োজনে স্থানীয় পণ্যের গুরুত্ব

শনিবার ও রবিবার দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই উৎসবে ছিল রুটি সংস্কৃতি, ইন্টারঅ্যাকটিভ ওয়ার্কশপ ও লোকাল পর্যটনের সমন্বয়। এবারের মূল থিম ছিল সহযোগিতা—স্থানীয় কৃষক, বেকারি ও ব্যবসায়ীদের একত্র করে স্বাস্থ্যকর ও স্থানীয় উপকরণভিত্তিক রুটি তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া।

চেওনানের ৫১টি স্থানীয় বেকারি অংশ নেয় এই উৎসবে। তারা উপস্থাপন করে আখরোট পেস্ট্রি, টার্ট, চালের তৈরি রুটি ও নানা সৃজনশীল বেকড খাবার। অনেক দোকানই শেষ পর্যন্ত বিক্রি শেষ করে দেয়। পাশাপাশি উৎসবে ছিল খোলা বাজার, হাতে-কলমে বেকিং শেখার কর্মশালা এবং শিল্পভিত্তিক প্রদর্শনী, যা পরিবারসহ সকল বয়সী দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

উৎসবস্থল ও সাংস্কৃতিক আয়োজন

চেওনান স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এ উৎসবে ছিল জনস্রোত। উৎসবের আকর্ষণ বাড়াতে পণ্যের মূল্য প্রদর্শনের স্বচ্ছতা রক্ষা ও বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়। নামইয়াং ডেইরি ও নংশিমের মতো বড় প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়—তারা বিনামূল্যে পণ্য বিতরণ ও স্থানীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণের আয়োজন করে। কৃষি বিপণন বিভাগও স্থানীয় ফল ও কৃষিপণ্য প্রচারে অংশ নেয়।

Cheonan Sports Complex crowds with locals and visitors during the 2025 Bbangbbang Day Festival in Cheonan, South Chungcheong Province, Sunday. Courtesy of Cheonan Metropolitan Government

সৃজনশীল প্রদর্শনী ও বিনোদন

উৎসবের প্রদর্শনী এলাকায় চেওনানের বিখ্যাত আখরোট, নাশপাতি ও আঙুর দিয়ে তৈরি খাদ্যশিল্পের অনন্য প্রদর্শন দেখা যায়। পাশাপাশি ছিল সঙ্গীত ও বিনোদনের মেলা—কে-পপ কনসার্ট, শিশুদের নাটক এবং রাতভর চলা ড্রোন লাইট শো শহরটিকে করে তোলে উৎসবমুখর।

স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব

চেওনানের ভারপ্রাপ্ত মেয়র কিম সক-পিল বলেন, “বাংবাং ডে শুধু খাদ্য উৎসব নয়, এটি আমাদের শহরের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও উদ্ভাবনকে একত্র করে। আমরা চাই আরও বেশি মানুষ চেওনানের স্বাদ ও প্রাণকে চিনুক এই রুটির মাধ্যমে।”

চেওনানের পাউরুটি উৎসব এখন শুধু একটি স্থানীয় আয়োজন নয়, বরং এটি কোরিয়ার বেকিং সংস্কৃতির এক প্রতীক হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কৃষি, উদ্ভাবনী খাদ্যশিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের মাধ্যমে শহরটি এখন সত্যিই নিজের অবস্থান শক্ত করছে—“কোরিয়ার রুটির রাজধানী” হিসেবে।

 

# চেওনান,# দক্ষিণ কোরিয়া, #বাংবাং ডে #ফেস্টিভ্যাল, #পাউরুটি সংস্কৃতি#, হোদু গওয়া, #স্থানীয় অর্থনীতি,# সারাক্ষণ রিপোর্ট