ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার আদিল রশিদ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন ১৬ বছরের বেশি সময় আগে। বয়স এখন ৩৭, পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি হবেন ৩৮—তবুও অবসরের কোনো চিন্তা নেই। তাঁর কথায়, “দেশের জন্য খেলার ক্ষুধা এখনও আগের মতোই আছে।”
ব্যস্ত সূচির মাঝেও উদ্দীপনা
রশিদ বর্তমানে নিউজিল্যান্ড সফরে ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে তাঁর ৩৫তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলছেন। দীর্ঘ সফরজীবনের একঘেয়েমির মাঝেও তাঁর প্রাণবন্ত মনোভাব স্পষ্ট। কুইনস্টাউনে দলের বন্ধন মজবুত করতে ছোট্ট বিশ্রাম ভ্রমণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা প্রায়ই টানা ভ্রমণ, অনুশীলন আর ম্যাচে ব্যস্ত থাকি। মাঝে মাঝে একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাওয়া বিরল।”
রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্স
ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের রেকর্ড ২৩৬ রানের জয়ের ম্যাচে রশিদ নেন চার উইকেট — প্রতিপক্ষের সেরা পাঁচ রান সংগ্রাহকের চারজনই ছিলেন তাঁর শিকার। এ বছর তাঁর উইকেট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ — যা ইংল্যান্ডের যেকোনো বোলারের চেয়ে ছয়টি বেশি।

২০১০ সালে গ্রেম সোয়ান, ২০২২ সালে স্যাম কারান এবং ২০২১, ২০২২, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে রশিদ — এই চারবারই বছরে সর্বাধিক টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব তাঁদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়েছে।
বয়স বাড়লেও কমেনি আগ্রহ
আগামী ফেব্রুয়ারিতে ৩৮ পূর্ণ করবেন রশিদ। তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও পডকাস্ট সঙ্গী মইন আলি আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন, কিন্তু রশিদ এখনও দলের অপরিহার্য অংশ। তিনি বলেন,
“আমি শতভাগ নিশ্চিত — ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার ক্ষুধা এখনো আছে। দেশের প্রতিনিধিত্ব করাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। একদিন হয়তো সেই আগ্রহ কমে যাবে, তখন ভাবব পরবর্তী পদক্ষেপ। কিন্তু এখন আমি শুধু খেলতে চাই, দলের অংশ হতে চাই।”
দলের নতুন যাত্রা
রশিদের মতে, এটি শেষ নয়, বরং এক নতুন সূচনার সময়। “আমরা এখন এক নতুন অধ্যায়ে — নতুন অধিনায়ক, নতুন কোচ, নতুন উদ্দীপনা,” বলেন তিনি। “দলে অভিজ্ঞতা আছে, তরুণ রক্ত আছে, বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই — একে অপরকে সমর্থন করে জয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া।”

দলের ঐক্যই মূল শক্তি
রশিদ মনে করেন, কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও মানসিক দক্ষতা বিশেষজ্ঞ গিলবার্ট এনোকা দলে এক ধরনের পারিবারিক পরিবেশ তৈরি করেছেন।
“আমরা এখন এক ইউনিট, এক পরিবার। ভালো দিন হোক, বা খারাপ, সবাই সবার পাশে আছে। এই ঐক্যটাই আমাদের শক্তি,” বলেন রশিদ।
তিনি আরও যোগ করেন, “ম্যাককালাম খুবই শান্ত স্বভাবের কিন্তু মনোযোগী কোচ। তিনি নিশ্চিত করেন যেন আমরা আরামদায়ক পরিবেশে থেকেও, মাঠে নামলে সম্পূর্ণ মনোযোগী থাকি। এই ভারসাম্যই আমাদের সাফল্যের মূল।”
১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পরও আদিল রশিদ নিজেকে খুঁজে পান নতুন করে। বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন, তরুণদের সঙ্গে নতুন অধ্যায় আর দলের ঐক্য — সব মিলিয়ে, তাঁর আগ্রহ যেন তরুণ দিনের মতোই তীব্র।
“জীবন আর ক্রিকেট দুটোই অনিশ্চিত,” বলেন তিনি, “তাই আমি এক ম্যাচ, এক সময় ধরে এগোতে চাই, দেখি কোথায় নিয়ে যায় ভাগ্য।”
#ইংল্যান্ড, #আদিল রশিদ #টি২০# বিশ্বকাপ,# আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, #ব্রেন্ডন ম্যাককালাম,# সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















