লেখিকা লিলি কিং স্মরণ করছেন তাঁর কৈশোরের প্রথম প্রেমের গল্প। এক কিশোরীর নীরব ভালোবাসা, যা গ্রীষ্মের ছুটির সাগর-বাতাসে জন্ম নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে তাঁর জীবনের দিকনির্দেশ করেছে।
মায়ের নতুন ভালোবাসা ও জীবনের পালাবদল
লিলি কিং তখন চৌদ্দ বছরের। ঠিক সেই সময় তাঁর মা প্রেমে পড়লেন এক ব্যক্তির—জর্জ নামের ছোটখাটো, একটু মোটা, টাকমাথা এক ব্যাংককর্মীর। চোখে মোটা কাঁচের চশমা, মুখে সবসময় কৌতুকময় হাসি। হাসলেই তাঁর মুখে ফুটে উঠত আনন্দের “O”-আকৃতি, যা লিলির মাকে মুগ্ধ করত।
মা ও মেয়ে তখন নতুন জীবনে পা রাখলেন—পুরনো অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে জর্জের বাড়িতে উঠলেন, তাঁদের বিয়ের সপ্তাহান্তেই। প্রতিদিন সকালে জর্জ অফিসে যাওয়ার আগে রান্নাঘরের ছোট নোটপ্যাডে মাকে উদ্দেশ করে কিছু রহস্যময় বার্তা রেখে যেতেন। লিলির কাছে সেগুলো বোঝা কঠিন হলেও, তাঁর মা পড়ে হাসতেন।

গাড়িতে, ডাইনিং টেবিলে, কিংবা সন্ধ্যার পর কুকুর নিয়ে হাঁটতে বের হলে—তাঁরা একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করতেন। সম্পর্কটিতে জটিলতা ছিল, কিন্তু তাঁদের ভালোবাসা ছিল আন্তরিক। লিলি তখন প্রথমবার কাছ থেকে দেখলেন একটি পরিপূর্ণ বিবাহিত ভালোবাসার রূপ।
মেইনের দ্বীপে প্রথম প্রেম
বিয়ের পরের গ্রীষ্মে, আগস্ট মাসের শেষ দুই সপ্তাহ কাটাতে তাঁরা গেলেন মেইন অঙ্গরাজ্যের রক্ল্যান্ডের উপকূলের এক দ্বীপে। সেখানেই লিলির জীবনের আরেক অধ্যায় শুরু হলো।
প্রথমেই তিনি প্রেমে পড়লেন মেইনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে—সাগর, দ্বীপ, আর নোনাজলে ভরা বাতাসে। কিন্তু পরের বছর, “টার ট্যাঙ্ক” নামে এক পাথুরে সৈকতে দেখা পেলেন এক ছেলের—ম্যাট নামের এক লম্বা কিশোর, পরনে কর্ডুরয় জ্যাকেট।
ম্যাট ছিল মজার, একটু অগোছালো, কিন্তু অদ্ভুতভাবে আকর্ষণীয়। লিলি তখনো বুঝতে পারছিলেন না, এই দেখা তাঁর জীবনের গভীরে কতটা দাগ ফেলবে। তিনি ভালোবেসেছিলেন ম্যাটকে—চুপিচুপি, নিঃশব্দে, পরপর সাতটি গ্রীষ্মকাল জুড়ে।
নীরব ভালোবাসার দীর্ঘ ছায়া
এই প্রেমের কোনো প্রকাশ ছিল না, কোনো চিঠি বা কথার বিনিময়ও নয়। কিন্তু প্রতি গ্রীষ্মে, যখনই তিনি টার ট্যাঙ্ক সৈকতের সেই নোনাজলে পা রাখতেন, হৃদয়ের গভীরে একই উষ্ণতা ফিরে আসত।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লিলি লেখক হয়েছেন, জীবনের বহু অধ্যায় পার করেছেন, কিন্তু কৈশোরের সেই প্রেম তাঁর লেখায়, চিন্তায়, আর সত্তায় থেকে গেছে এক নীরব অনুপ্রেরণার মতো।
লিলি কিংয়ের এই স্মৃতিচারণ শুধুমাত্র এক অতীত প্রেমের গল্প নয়, বরং কৈশোরের নিঃশব্দ অনুভূতি কেমন করে একটি নারীর সৃজনশীলতা ও জীবনের দিকনির্দেশ গড়ে দিতে পারে, তারই এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
#লিলিকিং #ভোগ #কৈশোরপ্রেম #সাহিত্যপ্রেরণা #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















