দরিদ্র জীবনের অদ্ভুত অধ্যায়
সিরাজগঞ্জের জনপ্রিয় ভিক্ষুক সালেহা বেগম, যিনি “সালেহা পাগলী” নামে পরিচিত ছিলেন, শুক্রবার রাতে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে তিনি স্থানীয় এক বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
তিন বস্তা টাকার সন্ধান
অক্টোবরের ৯ তারিখে স্থানীয়রা একটি পরিত্যক্ত সরকারি কোয়ার্টার থেকে দুটি বস্তা ভর্তি টাকা উদ্ধার করেন। দুই দিন পর, অর্থাৎ ১১ অক্টোবর, একই স্থান থেকে আরও একটি বস্তা টাকা পাওয়া যায়।
গণনা শেষে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮০ টাকা।
সঞ্চয়ের গল্প
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, সালেহা পাগলী প্রায় ৪০ বছর ধরে ভিক্ষা করতেন। কিন্তু কখনোই নিজের উপার্জন খরচ করতেন না। অত্যন্ত মিতব্যয়ী জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি—যা পেতেন, তা যত্ন করে জমিয়ে রাখতেন।
অসুস্থ হলে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন, পরে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও নর্থ বেঙ্গল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
চিকিৎসা ও মৃত্যু
চিকিৎসকরা জানান, তার লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। পরবর্তীতে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শুক্রবার রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শনিবার সকালে জানাজা শেষে তাকে কাঁদাপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জীবনের শিক্ষা রেখে যাওয়া এক নারী
স্থানীয়রা তার মৃত্যুকে ঘিরে বলেন, “শেষ পর্যন্ত সবাই খালি হাতে এই পৃথিবী ছেড়ে যায়।” সালেহা পাগলীর জীবন যেন সেই কথারই প্রতিফলন—৪০ বছরের পরিশ্রমে জমানো তিন বস্তা টাকা রয়ে গেল তার মৃত্যুর পরও, কিন্তু তিনি চলে গেলেন একেবারে শূন্য হাতে।
#: #সালেহা_পাগলী #সিরাজগঞ্জ #ভিক্ষুক #মানবিকগল্প #বাংলাদেশ
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















