বসন্ত ও শরতের পরিযায়ী পাখিদের জন্য ভয়াবহ বিপদ
প্রতি বসন্ত ও শরতে, কোটি কোটি পাখি রাত্রির আকাশে উড়াল দেয়। উচ্চতাযুক্ত অন্ধকার আকাশ তাদের শিকারীদের থেকে রক্ষা করে। তবে, সব শিকারীই তাদের জন্য বিপদমুক্ত নয়। নতুন এক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে, বাদুড়রা এই পরিযায়ী পাখিদের সফলভাবে শিকার করতে সক্ষম।
গবেষণার নতুন তথ্য
একটি নতুন গবেষণাপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে যে, ইউরোপের বৃহত্তম বাদুড়, গ্রেটার নকটুলে বাদুড় একটি রবারকে শিকার করে আকাশে উড়তে উড়তে সেটি খেয়ে ফেলেছে। এটি সাধারণত বাদুড়ের পছন্দের খাদ্য, পোকামাকড়ের সাথে তুলনা করলে একদম আলাদা। যদিও এর আগে একদল গবেষক এটা অনুমান করেছিলেন যে, এই বাদুড় কখনো কখনো পাখি খেতে পারে, তবে তা স্পষ্ট ছিল না যে, ৫০ গ্রাম ওজনের একটি বাদুড় কীভাবে এমন একটি পাখিকে শিকার করতে সক্ষম, যার ওজন প্রায় তার অর্ধেক।

ড. ইবানেজের দল ও গবেষণা পদ্ধতি
ড. কার্লোস ইবানেজের নেতৃত্বাধীন দল, যারা সেভিলের ডোনানা বায়োলজিক্যাল স্টেশনে কাজ করছেন, বাদুড়ের পাখি শিকারের একটি দৃশ্য পুনর্নির্মাণ করেছে। তারা একটি সেন্সরের অডিও, উচ্চতা এবং এক্সিলারোমিটার ডেটা ব্যবহার করে দেখিয়েছে কীভাবে একটি বাদুড় ৪,০০০ ফুট (১,২০০ মিটার) উচ্চতায় রবারটিকে খুঁজে বের করে এবং তা শিকার করে। ৩,০০০ ফুট নিচে নেমে গিয়ে বাদুড়টি রবারটিকে আক্রমণ করে এবং এক কামড়ে মেরে ফেলে। তারপর বাদুড়টি উড়তে উড়তে পাখিটিকে খেতে শুরু করে। এর পরবর্তী ২৩ মিনিট ধরে খাওয়ার আওয়াজ শোনা যায়।
পাখির দেহের প্রতি বাদুড়ের আচরণ
ড. ইবানেজের পূর্বে সংগৃহীত ডেটা থেকে এটি জানা গেছে যে, গ্রেটার নকটুলে বাদুড়েরা পাখিদের ডানা ছিঁড়ে ফেলে, যেন তা শিকার করার পর বাধা সৃষ্টি না করে। এই খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে তারা পাখির শরীর থেকে টান কমিয়ে আনে এবং তাড়াতাড়ি খেতে পারে।

নতুন অভ্যেসের মধ্যে পুরনো শিকার
এই গবেষণা আমাদের শেখায় যে, বাদুড়েরা এখন আর শুধুমাত্র পোকামাকড় নয়, বরং বড় আকারের পাখিদেরও শিকার করতে সক্ষম। এটি পাখি ও বাদুড়ের পরিবেশগত সম্পর্ক এবং খাদ্য চক্রের প্রতি আমাদের ধারণাকে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















