বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা এবং ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।

লেনদেন স্থগিতের আওতায় থাকা ব্যাংকগুলো

লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে নিম্নলিখিত পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ারে—

• ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
• সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)
• এক্সিম ব্যাংক
• গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
• ইউনিয়ন ব্যাংক

ডিএসই ও সিএসই জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত।

ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশের অধীনে কার্যক্রম বন্ধ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার ভিত্তিতে এই পাঁচটি ব্যাংককে “অচল প্রতিষ্ঠান” হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২৫ সালের ৫ নভেম্বর কার্যকর হওয়া ‘ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর ১৫ ধারার অধীনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

একই দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানায় যে, ব্যাংকগুলোকে অধ্যাদেশের আওতায় আনা হয়েছে এবং তাদের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে।

ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার অবনতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ব্যাংকগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটি ভ্যালু বা মূলধনের মূল্য শূন্যের নিচে নেমে গেছে।

তিনি আরও বলেন, “তাদের শেয়ারের প্রকৃত মূল্য এখন কার্যত শূন্য। কোনো শেয়ারহোল্ডার বা বিনিয়োগকারী ক্ষতিপূরণ পাবেন না।”

আমানতকারীদের উদ্বেগ ও আশ্বাস

এই সিদ্ধান্তে ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশ্বস্ত করলেও অনেক আমানতকারী এখনো তাদের অর্থের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং একীভূতকরণের পর ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হবে।

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে এই পদক্ষেপ এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বলছে, আর্থিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেই এই একীভূতকরণ ও পুনর্গঠন কার্যক্রম চলছে। তবে বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে সরকারের আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

#বাংলাদেশব্যাংক #শরিয়াব্যাংক #পুঁজিবাজার #ডিএসই #সিএসই #ব্যাংকরেজোলিউশনঅধ্যাদেশ #শেয়ারলেনদেন #সারাক্ষণরিপোর্ট