প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম প্রকল্পে দান করা বেশিরভাগ কোম্পানি প্রশাসনের সঙ্গে উচ্চ-মূল্যের ব্যবসায় জড়িত, যার মধ্যে সরকারি চুক্তি এবং তাদের কোম্পানির বিরুদ্ধে ফেডারেল তদন্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একটি সরকারি ওয়াচডগ গ্রুপের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
দানকারী কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ
প্রায় অর্ধেক দানকারী কোম্পানি বর্তমানে বা সম্প্রতি ফেডারেল তদন্ত বা কার্যক্রমের মুখোমুখি, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে অবিচারমূলক শ্রমনীতি, ভোক্তা প্রতারণা এবং পরিবেশের ক্ষতির মতো অভিযোগ রয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন পাবলিক সিটিজেন (Public Citizen) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন যে ৩৬টি দানকারী কোম্পানির নাম প্রকাশ করেছে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগের ব্যবসায়িক স্বার্থ প্রায় সব খাতে বিস্তৃত — যার মধ্যে ট্যারিফ, প্রযুক্তি, করনীতি, অনলাইন গোপনীয়তা এবং উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত।
রাজনীতির সঙ্গে ব্যবসার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক
এই দানকারীরা সরকারি চুক্তির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেছে। গত পাঁচ বছরে তারা ২৭৯ বিলিয়ন ডলারের সরকারি চুক্তি পেয়েছে এবং ১.৬ বিলিয়ন ডলার রাজনৈতিক দান ও লবিং খরচ করেছে।

এর মধ্যে গুগল, কমকাস্ট ও লকহিড মার্টিনের মতো বড় কোম্পানিও রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এসব দানকারীর মূল উদ্দেশ্য সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা এবং প্রেসিডেন্টের প্রকল্পগুলিতে সুবিধা আদায় করা।
হোয়াইট হাউস বলরুম প্রকল্পের পটভূমি
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বলরুম প্রকল্পের জন্য আয়োজিত দাতাদের মধ্যে আলট্রিয়া গ্রুপ, অ্যামাজন এবং অ্যাপলসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি ট্রাম্পের শপথগ্রহণ ফান্ড ও অন্যান্য রিপাবলিকান উদ্যোগেও দান করেছে।
এই দানগুলি তাদের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় সহায়ক হতে পারে। পাবলিক সিটিজেনের কো-প্রেসিডেন্ট রবার্ট ওয়েইসম্যান বলেন, “এগুলি এমন কোম্পানি যারা সরকারের সঙ্গে বড় স্বার্থ জড়িত, এবং তারা নিশ্চিতভাবে প্রেসিডেন্টের প্রশাসনের কাছ থেকে সুবিধা পেতে আশা করছে।”
বিতর্কিত অর্থায়ন ও আইনগত প্রশ্ন
বলরুম প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা উঠেছে। অনেক ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীলরা প্রকল্পটির আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তাদের মতে, এমন প্রকল্প সরকারি অর্থ দ্বারা হওয়া উচিত, যাতে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রভাব না থাকে এবং ভোটারদের প্রতিনিধিত্বে পক্ষপাতের সুযোগ না তৈরি হয়।
বিরোধিতা ও প্রশাসনিক সমালোচনা
কিছু কোম্পানি যেমন লকহিড মার্টিন, নভিডিয়া এবং মাইক্রোসফট প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করেছে, কিন্তু দানের পরিমাণ প্রকাশ করেনি।
ট্রাম্প গত মাসে হোয়াইট হাউসের এক ডিনারে দাতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “কিছু দাতা ২৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অবদান রেখেছেন।”
তবে এই ধরনের দান শর্তসাপেক্ষে বা পছন্দের ভিত্তিতে গোপন রাখা হয়েছে, যা আরও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সিনেটর অ্যাডাম শিফ ও প্রতিনিধি বেনি থমসনসহ অন্যান্য নেতারা হোয়াইট হাউসের কাছে প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক হিসাব চেয়েছেন।
তাদের অভিযোগ, পূর্ববর্তী অনুমোদন ছাড়া প্রকল্পটি শুরু করা হয়েছে, যা সরকারি নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রকল্পের প্রভাব এবং এর পেছনে থাকা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি নিয়ে আগামী দিনে আরও বিতর্ক তীব্র হতে পারে।
#TrumpAdministration #PoliticalDonations #GovernmentContracts #BusinessPolitics #WhiteHouseProject #PublicCitizen #FederalInvestigation
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















