ঢাকা, ৮ নভেম্বর ২০২৫:
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, খাসজমি আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা কমরেড আবদুস সাত্তার খানের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন (বিকেএফ)।
সভাপতিত্ব ও পরিচালনা
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিকেএফ সভাপতি কমরেড বদরুল আলম, এবং অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান।
উপস্থিত বক্তারা
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন—
- • এ. এ. এম. ফয়েজ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন
- • লাভলী ইয়াসমিন, সভানেত্রী, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন

- • অ্যাডভোকেট রফিকুল আলম ও মুশফিকুর রহমান, গবেষক, ইনসিডিন বাংলাদেশ
- • শামীম আরা, সভানেত্রী, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন
- • আঁখি আক্তার, কার্যকরী সভাপতি, সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশন
- • আব্বাস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক, গণতান্ত্রিক গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন
- • মো. শাহজাহান সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশন
- • রেহেনা বেগম, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন
- • শাহ আলম ও শাহাবুদ্দিন মাতুব্বর, কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতা প্রমুখ
কমরেড আবদুস সাত্তার খানের জীবনসংগ্রাম
১৯২৩ সালে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় এক জোতদার পরিবারে জন্ম নিয়েও কমরেড আবদুস সাত্তার খান আজীবন লড়েছেন ভূমিহীন ও শোষিত কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

আশি ও নব্বইয়ের দশকে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন আয়োজন করে ঐতিহাসিক খাসজমি দখল আন্দোলন, যার ফলে হাজার হাজার ভূমিহীন কৃষক জমির মালিকানা লাভ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি গঠন করেন রফিক বাহিনী, যা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে। জেলা পর্যায়ে গঠিত সাত সদস্যবিশিষ্ট সংগ্রাম কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তিনি কখনো গৌরব দাবি করেননি; বরং সারাজীবন নিঃস্বার্থভাবে কৃষক মুক্তির সংগ্রামে নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন।
বক্তাদের শ্রদ্ধা ও মূল্যায়ন
সভায় কমরেড বদরুল আলম বলেন,
“কমরেড আবদুস সাত্তার খান শুধু একজন কৃষক নেতা ছিলেন না; তিনি ছিলেন বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক আন্দোলনের দিকনির্দেশক ও বিপ্লবী শিক্ষক। আজ যখন কর্পোরেট দখল, জলবায়ু বৈষম্য ও বৈশ্বিক পুঁজিবাদের শিকার হচ্ছে কৃষিজমি, তখন তাঁর আহ্বান—‘চাষির হাতে জমি দাও’ ও ‘খাদ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করো’—আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।”
অন্য বক্তারা বলেন,
কমরেড আবদুস সাত্তার খানের জীবন ও সংগ্রাম বাংলাদেশের কৃষক আন্দোলনের ইতিহাসে এক অমর উদাহরণ।
তিনি মাঠে-ময়দানে কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে খাসজমি আন্দোলনকে গণআন্দোলনে রূপ দিয়েছিলেন।
তাঁকে স্মরণ করা মানে হলো কৃষক-শ্রমিক ঐক্যের রাজনীতি ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি পুনর্নবীকরণ করা।
স্মৃতিচারণ ও অঙ্গীকার
স্মরণসভার শেষে বক্তারা কমরেড আবদুস সাত্তার খানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে কৃষক মুক্তি ও সমাজতান্ত্রিক পরিবর্তনের আন্দোলন জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
#কমরেডআবদুসসাত্তারখান #বাংলাদেশকৃষকফেডারেশন #খাসজমিআন্দোলন #কৃষকমুক্তি #মুক্তিযুদ্ধ #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 




















