বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ‘স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি’, আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন ‘বাকশাল আদর্শে অনুপ্রাণিত এক ফ্যাসিবাদী শাসক’। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের মুখোশে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগ এখন জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
৭ নভেম্বর স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রতীক
সালাহউদ্দিন বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের পর জাতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিন হলো ৭ নভেম্বর। যখন দেশের গণতন্ত্রের সব পথ রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল, তখন জাতি রক্তের বিনিময়ে সমাধান খুঁজে পেয়েছিল—যেমনটি হয়েছিল ১৯৭৫ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের সময়।”
‘১৩ মিনিটে সংবিধান সংশোধন করে একদলীয় শাসন’
তিনি অভিযোগ করেন, “শেখ মুজিব মাত্র ১৩ মিনিটে সংবিধান সংশোধন করে বাকশালের মাধ্যমে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেন এবং কোনো নির্বাচন ছাড়াই নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন।”
বিএনপি নেতা আরও বলেন, “নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকা আওয়ামী গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনা পর্যন্ত এটাই তাদের ধারা। গণতন্ত্র তাদের রক্তে নেই, আদর্শে নেই, ডিএনএতেও নেই।”

‘স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান’ দাবি
কবি হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ১৯৮৩ সালের ‘স্বাধীনতার দলিলপত্র’ গ্রন্থ উদ্ধৃত করে সালাহউদ্দিন বলেন, ঐতিহাসিক দলিল প্রমাণ করে যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান, শেখ মুজিব নন।
তিনি বলেন, “২৬ মার্চ চট্টগ্রামের শোলশহর এলাকা থেকে তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।”
‘ঘোষণাপত্র নিয়ে আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার’
তাজউদ্দিন আহমদের পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, “সেদিন রাতে তাজউদ্দিন আহমদ একটি টেপ রেকর্ডার নিয়ে শেখ মুজিবের কাছে গিয়েছিলেন, কিন্তু শেখ মুজিব কোনো ঘোষণা দিতে অস্বীকার করেন। অথচ, ১০ এপ্রিলের ঘোষণাপত্রে বলা হলো, শেখ মুজিব আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন—এটা কীভাবে সম্ভব?”
তিনি অভিযোগ করেন, “ঘোষণাপত্রের বিষয়টি যেভাবে আওয়ামী লীগ বিকৃত করেছে, তা প্রমাণ করে তাদের রাজনীতি মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।”
‘শেখ মুজিব ছিলেন নেতা, কিন্তু গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছেন’
তবে সালাহউদ্দিন শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতীয় নেতা হিসেবে স্বীকার করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের প্রশংসা করেন। কিন্তু তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পর জাতি তাঁর কাছ থেকে স্বাধীনতা, অধিকার ও গণতন্ত্র আশা করেছিল—কিন্তু তিনি নিজ হাতে সেই গণতন্ত্র কবর দিয়েছেন। শেখ হাসিনা এখন সেই একই কাজ করছেন।”
‘হাসিনার গণতন্ত্রের মুখোশে ফ্যাসিবাদ’
সালাহউদ্দিন বলেন, “অন্তত, শেখ মুজিব বাকশাল প্রতিষ্ঠার আগে সংবিধান সংশোধন করেছিলেন, কিন্তু শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের মুখোশে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিয়েছেন।”

আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি প্রতিহত করার ঘোষণা
আওয়ামী লীগের ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের ‘লকডাউন’ কর্মসূচির প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপি এটি প্রতিহত করবে।
তিনি প্রশ্ন করেন, “আওয়ামী লীগ এখন পাগলপ্রায়। যদি জনগণ সত্যিই তাদের ডাকে সাড়া দিত, তাহলে তারা কেন গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেল?”
তিনি আরও দাবি করেন, শেখ হাসিনাকে জড়িত এক মামলার রায়ের কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ এই ‘লকডাউন’ কর্মসূচি দিয়েছে।
“যদি সাহস থাকে, দেশে ফিরে আদালতের বিচারের মুখোমুখি হোন,”—চ্যালেঞ্জ জানান তিনি।
#রাজনীতি #বিএনপি #শেখহাসিনা #শেখমুজিব #বাকশাল #সালাহউদ্দিনআহমেদ #বিপ্লবওসংহতিদিবস
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















