নতুন প্রস্তাবে বলা হলো ৭০ জন রোগীর জন্য অ্যাসাইলাম হবে। ১৪টি সেল থাকবে।
আর ঐ সময় একটি বাড়তি ওয়ার্ডও নির্মাণ করা হচ্ছিল যেখানে জায়গা হবে আরো ৪৫ জনের। পাগলা গারদ সবসময় ভরা থাকত। এখানে থাকার জায়গা ছিল ১২৬ জনের কিন্তু ১৮১৮ সালেই সেখানে ছিল ২০৩ জন। ক্লে লিখেছেন, পাগলা গারদটি জীর্ণ। এর অবস্থা ছিল খুব খারাপ। এবং এ পরিপ্রেক্ষিতেই ১৮১৯ সালে নতুনভাবে তা নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ১৮১৯ সালে বোর্ড একটুকরো জমি বাছলেন এবং নবাব নায়েব নাজীম) এর কাছে অনুমতি চাইলেন তা ব্যবহারের জন্য নবাব অনুমতি দিলেন। প্রশ্ন জমিটি কোথায় ছিল?
নবাব জেসারত খা নায়েব নাজিম প্রথমে মুঘল কেল্লা বর্তমানে ঢাকা জেল যেখানে সেখানে উঠেছিলেন। পরে চলে যান বড় কাটরায়। সুতরাং ধরে নিতে পারি, কেল্লার ভেতরের জমিতে নবাবের দখলি স্বত্ব ছিল। এবং সেখানেই তা গড়ে উঠেছিল অর্থাৎ জেলের ভিতর।
নতুন প্রস্তাবে বলা হলো ৭০ জন রোগীর জন্য অ্যাসাইলাম হবে। ১৪টি সেল থাকবে। প্রতিটির আয়তন হবে ১০ফুট × ৬ ফুট। পুরুষেদের ওয়ার্ড হবে ৮ফুট × ১৬ ফুট আর মেয়েদের হবে ২০ ফুট × ১৬ ফুট। সেলে থাকবে ১৪ জন। বাকিরা ওয়ার্ডে। দেবযানীর বইতে এগুলোর আকার প্রকার নিয়ে বিস্তারিত [ছবি:৩] লেখা আছে। তাই সে প্রসঙ্গে আমি গেলাম না। তবে বিভিন্ন সময় রোগীর চাপের কারণে ওয়ার্ড বাড়ানো হয়েছে ১৮৭৫ সালে।
ঢাকার সিভিল সার্জন বিখ্যাত জেমস ওয়াইজ লিখেছেন, গারদে খুব কম সংখ্যক পাগল ভর্তি করা হয়। গারদের তত্ত্বাবধায়ক লিখেছেন, ১৮৭০-৭১ সালের দিকে ১৪৫ জনের দেখাশোনা করতেন স্বজনরা নিজ নিজ বাসায়। যারা ‘ক্রিমিনাল’ টাইপের, ভবঘুরে, গৃহহীন এবং রোগ সারার সম্ভাবনা নেই তাদের পাগলা গারদে রাখা হতো।
অনেক সময় দীর্ঘদিন এ রোগ সারত না, পরিজনরাও পাগলের দেখাশোনা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ত; অর্থেরও অভাব থাকত, তখন তারা পাগলা গারদে ভর্তি করে দিত। ঢাকা ছিল মফস্বল, যেখানে ইউরোপিয়ান পাগল প্রায় ছিল না। পাগলা গারদের অধিকাংশ পাগল ছিলেন নেটিভ।
(চলবে)
পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২৪)
মুনতাসীর মামুন 


















