১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২৪)

দেবযানী যেটি পরিষ্কার করেননি, তাহলো, ঢাকায় কি তাহলে একটি অ্যাসাইলাম বা পাগলা গারদ ছিল?

১৮০৫ সালে ঢাকায় একটি পাগলা গারদ গড়ে ভোলার প্রস্তাব করা হয়। পরিকল্পনাটি ছিল ৬ ফুট × ৬ ফুট সেল হবে, চত্বরটি হবে ৬ ফুট × ৪ ফুট খাড়া চাল থাকবে ওপরে (ছবি: ১]। ২৪ পরগণার সিভিল সার্জন এতে আপত্তি জানিয়ে বললেন, এইটুকু গারদে রুগী রাখা ঠিক হবে না। তিনি নতুন একটা নকশা দিলেন। সেলের সংখ্যা হবে সাত, আয়তন হবে ১০ ফুট × ৭ ফুট। সঙ্গে থাকবে বারান্দা, ১০ ফুট × ৭ ফুটের আরো ১৪টি সেল হবে সমান্তরালে।

খড়ে যেহেতু যেকোনো সময় আগুন লাগতে পারে তাই তিনি কনক্রিটের ছাদের প্রস্তাব করেন। ভবিষ্যতে যাতে দোতলা করা যায় সেজন্য দেয়ালগুলি ২ ফুট পুরু করার প্রস্তাব দেন। প্রতিটি সেলে ৬ ফুট × ৩ ফুটের লোহার দরজা থাকবে শীত মোকাবেলার জন্য। শুধু তাই নয় পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড।

১৮১৯ সালে ঢাকা লুনাটিক অ্যাসাইলামের প্রস্তাবিত ছবি: ২

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। ১৮১৯ সালে অ্যাসাইলামের এক্সটেনশন বা বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব আসে, দেবযানী যেটি পরিষ্কার করেননি, তাহলো, ঢাকায় কি তাহলে একটি অ্যাসাইলাম বা পাগলা গারদ ছিল? নাকি ১৮০৫ সালের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছিল? সুতরাং ধোঁয়াশা থেকে যায়। অনুমান করে নিতে পারি, পুরনো মুঘল দুর্গটিকে উনিশ শতকের শুরুতে ছেলে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেটি ধরে নিতে পারি ১৮১০-এর আগে। এর সঙ্গে একটি হাসপাতালও – ছিল।

খুব সম্ভব হাসপাতাল সংলগ্ন অস্থায়ী কোনো – সেল ছিল পাগলা গারদ হিসেবে। ধরে নিতে পারি ১৮০০ থেকে ১৮০৫ সালে সরকারি উদ্যোগে অ্যাসাইলাম গড়ে উঠেছিল নয়ত সরকারি উদ্যোগে – অ্যাসাইলামের প্রস্তাব আসবে কেন? আর ১৮০৫ থেকে ১৮১৯ এর মধ্যে কোনো অ্যাসাইলাম না থাকলে তার বিস্তার ঘটানোর কথা উঠবে কেন?

যেমন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আথার কে তাঁর রিপোর্টে লিখেছেন ১৮১৮ সালে পাগলা গারদে ছিল ৫টি বড় ওয়ার্ড, ৭টি সেল এবং ৩২টি নির্জন সেল।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২৩)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২৩)

জনপ্রিয় সংবাদ

পদ্মা সেতুর সামনে এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ: ট্রাকে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণ

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২৪)

০৯:০০:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

দেবযানী যেটি পরিষ্কার করেননি, তাহলো, ঢাকায় কি তাহলে একটি অ্যাসাইলাম বা পাগলা গারদ ছিল?

১৮০৫ সালে ঢাকায় একটি পাগলা গারদ গড়ে ভোলার প্রস্তাব করা হয়। পরিকল্পনাটি ছিল ৬ ফুট × ৬ ফুট সেল হবে, চত্বরটি হবে ৬ ফুট × ৪ ফুট খাড়া চাল থাকবে ওপরে (ছবি: ১]। ২৪ পরগণার সিভিল সার্জন এতে আপত্তি জানিয়ে বললেন, এইটুকু গারদে রুগী রাখা ঠিক হবে না। তিনি নতুন একটা নকশা দিলেন। সেলের সংখ্যা হবে সাত, আয়তন হবে ১০ ফুট × ৭ ফুট। সঙ্গে থাকবে বারান্দা, ১০ ফুট × ৭ ফুটের আরো ১৪টি সেল হবে সমান্তরালে।

খড়ে যেহেতু যেকোনো সময় আগুন লাগতে পারে তাই তিনি কনক্রিটের ছাদের প্রস্তাব করেন। ভবিষ্যতে যাতে দোতলা করা যায় সেজন্য দেয়ালগুলি ২ ফুট পুরু করার প্রস্তাব দেন। প্রতিটি সেলে ৬ ফুট × ৩ ফুটের লোহার দরজা থাকবে শীত মোকাবেলার জন্য। শুধু তাই নয় পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড।

১৮১৯ সালে ঢাকা লুনাটিক অ্যাসাইলামের প্রস্তাবিত ছবি: ২

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। ১৮১৯ সালে অ্যাসাইলামের এক্সটেনশন বা বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব আসে, দেবযানী যেটি পরিষ্কার করেননি, তাহলো, ঢাকায় কি তাহলে একটি অ্যাসাইলাম বা পাগলা গারদ ছিল? নাকি ১৮০৫ সালের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছিল? সুতরাং ধোঁয়াশা থেকে যায়। অনুমান করে নিতে পারি, পুরনো মুঘল দুর্গটিকে উনিশ শতকের শুরুতে ছেলে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেটি ধরে নিতে পারি ১৮১০-এর আগে। এর সঙ্গে একটি হাসপাতালও – ছিল।

খুব সম্ভব হাসপাতাল সংলগ্ন অস্থায়ী কোনো – সেল ছিল পাগলা গারদ হিসেবে। ধরে নিতে পারি ১৮০০ থেকে ১৮০৫ সালে সরকারি উদ্যোগে অ্যাসাইলাম গড়ে উঠেছিল নয়ত সরকারি উদ্যোগে – অ্যাসাইলামের প্রস্তাব আসবে কেন? আর ১৮০৫ থেকে ১৮১৯ এর মধ্যে কোনো অ্যাসাইলাম না থাকলে তার বিস্তার ঘটানোর কথা উঠবে কেন?

যেমন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আথার কে তাঁর রিপোর্টে লিখেছেন ১৮১৮ সালে পাগলা গারদে ছিল ৫টি বড় ওয়ার্ড, ৭টি সেল এবং ৩২টি নির্জন সেল।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২৩)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২৩)