সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমাহর ওল্ড কর্নিশ সৈকতে দুই ১২ বছর বয়সী পাকিস্তানি বন্ধুর ডুবে মৃত্যু এলাকায় গভীর শোকের সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার বিকেলে, যখন তারা পরিবারের অজান্তে সমুদ্রে প্রবেশ করে। একই ঘটনায় একজন শিশুকে উদ্ধার করেন এক তরুণ মিশরীয় সাঁতারু।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
তিন শিশুর মধ্যে দুইজন—ওমর আসিফ মোহাম্মদ আসিফ এবং হাম্মাদ আসিফ—ডুবে মারা যায়। ওমরের নয় বছর বয়সী ছোট ভাইকে এক মিশরীয় যুবক উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এ দুর্ঘটনা পাকিস্তানি কমিউনিটি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক শোক ছড়িয়ে দিয়েছে।
পরিবারের বক্তব্য
ওমরের বাবা জানান, তার ছেলে আগে কখনও একা সমুদ্রে যায়নি। মাত্র একবার সে চাচার সঙ্গে সৈকতে গিয়েছিল, তাও সেদিন তারা পানিতে নামেনি। অতীতের ডুবে যাওয়ার ঘটনার কথা মাথায় রেখে বাবা সবসময় ছেলেকে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করতেন।
২২ বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত ওমরের বাবা জানান, তার দুই ছেলে—বড়টি ওমর এবং ছোটটি নয় বছর বয়সী—সবসময় দোকানের আশপাশে খেলাধুলা করত। তাদের পরিবার রাস আল খাইমাহর দেহান এলাকায় একটি মোবাইল ফোনের দোকান চালায়। দোকানের খুব কাছেই বিকেল পাঁচটার দিকে ঘটে যায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

ঘটনার ক্রমধারা
পরিবার দোকানের ওয়াই-ফাই রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখতে পান, ওমরের সর্বশেষ হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাক্টিভিটি ছিল বিকেল ৪টা ১৩ মিনিট। দোকানে না আসলেও হয়তো পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তার ফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছিল।
এ ছাড়া কাছের একটি আবায়ার দোকানের সিসিটিভিতে বিকেল ৪টা ২৮ মিনিটে তিন শিশুকে একসঙ্গে হাঁটতে দেখা যায়।
ওমরের বাবা জানান, তিনি প্রথমে দোকানের প্রতিবেশীর কাছ থেকে ছেলের ডুবে যাওয়ার খবর পান। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওমরের ফোনে কল করলে সমুদ্রসৈকতে থাকা একজন ফোন ধরে জানান—ওমরকে ইতিমধ্যে সাকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাবা দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছালেও তার ছেলে তখন আর বেঁচে নেই।
লাশ উদ্ধারের সময়
ওমরের লাশ শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় উদ্ধার করা হয়। হাম্মাদের লাশ পাওয়া যায় পরদিন, রবিবার সকাল ৮টার দিকে।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া
শোকাহত বাবা বলেন, “সবই আল্লাহর ইচ্ছা। আমরা তা মেনে নিয়েছি।” তিনি আরও জানান, তিন শিশুর কেউই সাঁতার জানত না।
তিনি রাস আল খাইমাহ পুলিশকে শিশুদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও জানান।
#tags: দুর্ঘটনা ডুবে-মৃত্যু রাস-আল-খাইমাহ পাকিস্তানি-শিশু ইউএই সারাক্ষণ-রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















