স্থগিত আলোচনা, বাড়ছে মানবিক সংকট
যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে বৃহস্পতিবার দিনভর আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত সেটি ভেঙে পড়ে। প্রস্তাবিত বন্দী বিনিময় এবং মানবিক করিডর নিয়ে দুই পক্ষই দৃঢ় অবস্থান নেওয়ায় আলোচনাটি রাতের দিকে বন্ধ হয়ে যায়। ইসরায়েল জানায়, তারা “খোলামেলা ও দীর্ঘস্থায়ী বিরতি” মেনে নিতে পারবে না যদি না সশস্ত্র গোষ্ঠীর পুনর্গঠন ঠেকানোর নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা থাকে। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিরা মানবিক সহায়তা অবাধ প্রবেশ ও বাস্তুচ্যুতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কোনো চুক্তি কার্যকর হবে না বলে দাবি করেন।
সীমান্তে নতুন হামলা, সহায়তা ব্যাহত
আলোচনা ভেঙে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাফা করিডর ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ড্রোন ও বিমান হামলার খবর পাওয়া যায়। স্থানীয় চিকিৎসাকর্মীরা জানান, ফিল্ড হাসপাতালগুলোতে আহতদের ভিড় বেড়েছে, আর জেনারেটর চালাতে প্রয়োজনীয় জ্বালানির ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। বিশ্লেষকরা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখেছেন, পরিবারগুলো ক্রমাগত নিরাপদ করিডরের দিকে সরতে চাইছে, কিন্তু অনেক রুট ক্ষতিগ্রস্ত বা মাঝেমধ্যে বন্ধ থাকার কারণে তারা আটকে পড়ছে।

ইউরোপীয় দেশগুলো মানবিক করিডরের স্থায়ী কাঠামোর ওপর জোর দিচ্ছে, অন্যদিকে মার্কিন কূটনীতিকরা ব্যক্তিগতভাবে হতাশা প্রকাশ করেছেন—তাদের ভাষায়, “সামান্য সংশোধন করলে কার্যকর হতে পারত এমন প্রস্তাব কয়েক ঘণ্টায় বাতিল হয়ে গেছে।” মিসর আশঙ্কা করছে, দ্রুত কোনো সমঝোতা না হলে সামরিক অভিযান আবার উত্তরের দিকে সম্প্রসারিত হতে পারে।
মানুষের অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ
গাজা শহর ও দক্ষিণাঞ্চলে থাকা পরিবারগুলো বলছে, খাদ্য সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে এবং পানির লাইন চালু থাকলেও তা বহু এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না। বাজারে রুটি, ডিম, চালের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। অনেকে মানবিক সহায়তার ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর হয়ে পড়েছেন, যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সাহায্য কর্মীরা জানিয়েছেন—“এক দিনের সহায়তা পরের দিনই অপ্রতুল হয়ে যাচ্ছে।”
আবার আলোচনায় বসার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। মধ্যস্থতাকারীরা ছোট ছোট পদক্ষেপ—যেমন জ্বালানি অনুমতি, চিকিৎসা সরিয়ে নেওয়া—এসব দিয়ে আস্থা পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাজনৈতিক ও সামরিক হিসাবের ভিন্নতা এত গভীর যে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত অগ্রগতি না হলে দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থায় পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















