১০:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
রাশিফলে আজকের বার্তা: ছোট ছোট বদলে দিনকে নতুনভাবে সাজানোর ডাক তাইওয়ান আক্রমণের মহড়া? বেসামরিক জাহাজেই চীনের ‘শ্যাডো নেভি’ পরীক্ষায় উদ্বেগ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৬১) চট্টগ্রাম শহরের মানসুরাবাদ এলাকায় ভূমিকম্পের পর একটি ছয়তলা ভবন পাশের ভবনের ওপর হেলে পড়ায় এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ভূমিকম্পে কক্সবাজারের হোটেল জোনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় পর্যটক ও কর্মীরা দ্রুত রাস্তায় বেরিয়ে আসেন ভূমিকম্পে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে-বাংলা হলে বড় ফাটল ও হেলে পড়া—শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে গাজীপুরে ভূমিকম্প অনুভূত হতেই কারখানা ছাড়তে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে আহত হয়েছেন শতাধিক শ্রমিক বাংলাদেশের বিশাল লিড: তৃতীয় দিনে তাইজুল হলেন টাইগারদের সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেটশিকার কেরানীগঞ্জে সাম্প্রতিক রাতে পৃথক আগুন লাগার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ মাধবদীর ভূমিকম্পে নিহত ৬; দ্রুত সহায়তায় এগিয়ে এলো ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল

তাইওয়ান আক্রমণের মহড়া? বেসামরিক জাহাজেই চীনের ‘শ্যাডো নেভি’ পরীক্ষায় উদ্বেগ

চীনের বেসামরিক জাহাজে সামরিক মহড়া
চীন সামরিক বাহিনীর বাইরে বেসামরিক ফেরি ও কার্গো জাহাজকে কাজে লাগিয়ে নতুন ধরনের সমুদ্র মহড়া চালাচ্ছে, যা পর্যবেক্ষকদের কাছে এক ধরনের ‘শ্যাডো নেভি’ হিসেবে ধরা পড়ছে। সাম্প্রতিক ভিজ্যুয়াল বিশ্লেষণে দেখা যায়, দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের জিয়েশেং উপকূলে গ্রীষ্মে একদল রোল-অন রোল-অফ ফেরি ও ডেক কার্গো জাহাজ সমবেত হয়। স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যায়, এগুলো সৈকতে ভেড়ে সামরিক ধাঁচের অবতরণ ও দ্রুত নামানোর অনুশীলন করছে, যেন যুদ্ধের সময় ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও অন্যান্য সরঞ্জাম একসঙ্গে নামানো যায়। বিশ্লেষকদের মতে, এসব অনুশীলন তাইওয়ানের উপকূলে একাধিক স্থানে একযোগে বাহিনী নামানোর কৌশল তৈরি করছে, যাতে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে একসঙ্গে নানা দিকে ব্যস্ত রাখা যায়।

তাইওয়ান উপকূলে সম্ভাব্য হামলার কৌশল
তাইওয়ান প্রণালীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, বিপুল সেনা ও সরঞ্জাম নিরাপদে পার করা এবং উপকূলে নামানো। বড় র‌্যাম্প ও কম ড্রাফটযুক্ত বেসামরিক ফেরিগুলো বন্দরের অবকাঠামো ছাড়াই সরাসরি বালুকাবেলায় উঠে যানবাহন নামাতে পারে। আগস্টের ছবি অনুযায়ী, কয়েকটি ফেরি ও কার্গো জাহাজ নির্দিষ্ট সৈকতের সামনে সারিবদ্ধ অবস্থায় মহড়া দিয়েছে, যা স্বাভাবিক বাণিজ্যিক রুটের চেয়ে পরিকল্পিত সামরিক অনুশীলনের মতো। এসব জাহাজের মালিকানা রাষ্ট্রঘনিষ্ঠ কোম্পানির হাতে, যাদের জাতীয় প্রতিরক্ষা আইনের আওতায় দ্রুত মোতায়েনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে যুদ্ধের সময় অল্প নোটিশেই এগুলোকে সামরিক পরিবহনজাহাজে রূপান্তর করা সম্ভব।

ঝুঁকি ও সংকেত—অস্পষ্ট সীমারেখা
বেসামরিক ও সামরিক ব্যবহারের এ ধূসর এলাকাই এখন নতুন নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করছে। ভবিষ্যৎ উত্তেজনার সময় কোন জাহাজে সৈন্য আর কোনটিতে সাধারণ ক্রু আছে—এ প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর পাওয়া কঠিন হতে পারে, যা লক্ষ্য নির্ধারণ নিয়ে তাইওয়ানের কমান্ডারদের সামনে নৈতিক ও সামরিক উভয় ধরনের চাপ তৈরি করবে। একই সঙ্গে, স্বাভাবিক বাণিজ্যিক নড়াচড়া হিসেবে আড়াল করে রাখা এ ধরনের মহড়া বাইরের শক্তিগুলোর আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা দুর্বল করতে পারে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এসব তথ্য যত বেশি প্রকাশ্যে আসবে, ততই চীনের জন্য এমন মহড়া চালানো রাজনৈতিকভাবে ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে উঠবে।

তাইওয়ান ও মিত্রদের প্রতিক্রিয়া
তাইওয়ান ইতোমধ্যে নিজস্ব প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় উপকূলীয় মিসাইল, ছোট ও দ্রুতগতি নৌ ইউনিট এবং অবকাঠামো বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দিচ্ছে। সামরিক কর্মকর্তারা জনগণকে অনুরোধ করছেন, শুধু যুদ্ধজাহাজ নয়, আশপাশের ফেরি ও কার্গো জাহাজের চলাচলের দিকও নজরে রাখতে। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্ররাও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ে এসব সিগন্যালকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দীর্ঘমেয়াদি বার্তা ও আঞ্চলিক সমীকরণ
তাৎক্ষণিক আক্রমণের আশঙ্কা এখনই বেশি না থাকলেও, এই মহড়া দেখাচ্ছে যে ভবিষ্যৎ সংঘাতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও কৌশল ধীরে ধীরে গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রণালীর দুই পাড়ে যেকোনো ভুল বোঝাবুঝি বা দুর্ঘটনা এখন বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে—কারণ একই জাহাজ কখনো পর্যটক বহন করছে, আবার আরেক সময় সাঁজোয়া যান নামানোর মহড়া দিচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো নিজেদের নিরাপত্তা পরিকল্পনায় বাণিজ্যিক নৌপথ, বীমা বাজার এবং বন্দর ব্যবস্থাপনাকেও নতুন করে ভাবছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

রাশিফলে আজকের বার্তা: ছোট ছোট বদলে দিনকে নতুনভাবে সাজানোর ডাক

তাইওয়ান আক্রমণের মহড়া? বেসামরিক জাহাজেই চীনের ‘শ্যাডো নেভি’ পরীক্ষায় উদ্বেগ

০৯:৩০:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

চীনের বেসামরিক জাহাজে সামরিক মহড়া
চীন সামরিক বাহিনীর বাইরে বেসামরিক ফেরি ও কার্গো জাহাজকে কাজে লাগিয়ে নতুন ধরনের সমুদ্র মহড়া চালাচ্ছে, যা পর্যবেক্ষকদের কাছে এক ধরনের ‘শ্যাডো নেভি’ হিসেবে ধরা পড়ছে। সাম্প্রতিক ভিজ্যুয়াল বিশ্লেষণে দেখা যায়, দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের জিয়েশেং উপকূলে গ্রীষ্মে একদল রোল-অন রোল-অফ ফেরি ও ডেক কার্গো জাহাজ সমবেত হয়। স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যায়, এগুলো সৈকতে ভেড়ে সামরিক ধাঁচের অবতরণ ও দ্রুত নামানোর অনুশীলন করছে, যেন যুদ্ধের সময় ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও অন্যান্য সরঞ্জাম একসঙ্গে নামানো যায়। বিশ্লেষকদের মতে, এসব অনুশীলন তাইওয়ানের উপকূলে একাধিক স্থানে একযোগে বাহিনী নামানোর কৌশল তৈরি করছে, যাতে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে একসঙ্গে নানা দিকে ব্যস্ত রাখা যায়।

তাইওয়ান উপকূলে সম্ভাব্য হামলার কৌশল
তাইওয়ান প্রণালীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, বিপুল সেনা ও সরঞ্জাম নিরাপদে পার করা এবং উপকূলে নামানো। বড় র‌্যাম্প ও কম ড্রাফটযুক্ত বেসামরিক ফেরিগুলো বন্দরের অবকাঠামো ছাড়াই সরাসরি বালুকাবেলায় উঠে যানবাহন নামাতে পারে। আগস্টের ছবি অনুযায়ী, কয়েকটি ফেরি ও কার্গো জাহাজ নির্দিষ্ট সৈকতের সামনে সারিবদ্ধ অবস্থায় মহড়া দিয়েছে, যা স্বাভাবিক বাণিজ্যিক রুটের চেয়ে পরিকল্পিত সামরিক অনুশীলনের মতো। এসব জাহাজের মালিকানা রাষ্ট্রঘনিষ্ঠ কোম্পানির হাতে, যাদের জাতীয় প্রতিরক্ষা আইনের আওতায় দ্রুত মোতায়েনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে যুদ্ধের সময় অল্প নোটিশেই এগুলোকে সামরিক পরিবহনজাহাজে রূপান্তর করা সম্ভব।

ঝুঁকি ও সংকেত—অস্পষ্ট সীমারেখা
বেসামরিক ও সামরিক ব্যবহারের এ ধূসর এলাকাই এখন নতুন নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করছে। ভবিষ্যৎ উত্তেজনার সময় কোন জাহাজে সৈন্য আর কোনটিতে সাধারণ ক্রু আছে—এ প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর পাওয়া কঠিন হতে পারে, যা লক্ষ্য নির্ধারণ নিয়ে তাইওয়ানের কমান্ডারদের সামনে নৈতিক ও সামরিক উভয় ধরনের চাপ তৈরি করবে। একই সঙ্গে, স্বাভাবিক বাণিজ্যিক নড়াচড়া হিসেবে আড়াল করে রাখা এ ধরনের মহড়া বাইরের শক্তিগুলোর আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা দুর্বল করতে পারে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এসব তথ্য যত বেশি প্রকাশ্যে আসবে, ততই চীনের জন্য এমন মহড়া চালানো রাজনৈতিকভাবে ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে উঠবে।

তাইওয়ান ও মিত্রদের প্রতিক্রিয়া
তাইওয়ান ইতোমধ্যে নিজস্ব প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় উপকূলীয় মিসাইল, ছোট ও দ্রুতগতি নৌ ইউনিট এবং অবকাঠামো বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দিচ্ছে। সামরিক কর্মকর্তারা জনগণকে অনুরোধ করছেন, শুধু যুদ্ধজাহাজ নয়, আশপাশের ফেরি ও কার্গো জাহাজের চলাচলের দিকও নজরে রাখতে। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্ররাও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ে এসব সিগন্যালকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দীর্ঘমেয়াদি বার্তা ও আঞ্চলিক সমীকরণ
তাৎক্ষণিক আক্রমণের আশঙ্কা এখনই বেশি না থাকলেও, এই মহড়া দেখাচ্ছে যে ভবিষ্যৎ সংঘাতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও কৌশল ধীরে ধীরে গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রণালীর দুই পাড়ে যেকোনো ভুল বোঝাবুঝি বা দুর্ঘটনা এখন বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে—কারণ একই জাহাজ কখনো পর্যটক বহন করছে, আবার আরেক সময় সাঁজোয়া যান নামানোর মহড়া দিচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো নিজেদের নিরাপত্তা পরিকল্পনায় বাণিজ্যিক নৌপথ, বীমা বাজার এবং বন্দর ব্যবস্থাপনাকেও নতুন করে ভাবছে।