ভারতীয় বাহিনীর এক লেফটেন্যান্ট ও তার লোকবলের সঙ্গে দেখা করেন, এরপর সবাই একত্রে একটি ছোটো বার্জে আরোহণ করেন…
অবশ্য সব কয়টি মিশনই যে নিরাপদে কুর্মিটোলায় ফিরে আসত বা আসতে পারত, তা নয় কিন্তু- জাপানিদের গুলি খেয়ে ভূপাতিত বি-২৫-এর কমরেডরা ফিরে না আসলে সারা ঘাঁটিতে গভীর বিষণ্ণতা নেমে আসত। সাধারণত, সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে মিশন থেকে ফিরে না আসলে বি-২৫ নির্ঘাত নির্মম পরিণতির শিকার হয়েছে নামক সহজ বিষণ্ণ উপসংহারে আসা যেত। (কারণ, বি-২৫-এর উড়ন্ত পরিধি এই সময়টুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ)।
নেহাতই ভাগ্যবান পাইলটরা ও এয়ারক্রুরা অবশ্য গুলিবিদ্ধ প্লেন থেকে বেইল আউট করে বেরিয়ে আসতে পারতেন বটে তবে ভূমিতে জাপানিরা ধরে ফেলতে পারার আশঙ্কায় বেইল আউট হওয়া বিমান সৈনিকরা সদাই ভীতসন্ত্রস্ত থাকতেন। এমন ঘটনা ঘটলে, বেইল আউটদের কুর্মিটোলায় ফিরে আসার বর্ণনা দিতে গিয়ে ইভো বলেন যে “এরা যখন শত্রুর দখলিকৃত এলাকার পেছনে বা সেখান থেকে খুব বেশি দূরে নয়- কোথাও বেইল আউট করেন, সেখান থেকে কুর্মিটোলায় ফিরে আসার পথ খুঁজে হেঁটে আসতে সময় লাগে।
তিনদিন থেকে দুই সপ্তাহ এবং তাঁরা যখন এসে হাজির হন- দুশ্চিন্তা অনিদ্রায় তাদের সবারই চোখমুখ বসা, ফ্যাকাশে, দাড়িভর্তি ক্লান্ত মুখ এবং তাদের জন্য প্রথম একমাত্র প্রাথমিক পরিচর্যা ছিলো অনতিবিলম্বে গোসল করো ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরো”।
একবার, মার্কিন “পি-৫১” ফাইটার প্লেন ও জাপানিদের “এসিক্সএম” ফাইটার প্লেনের (ডাকনাম “জিরো”) মধ্যে “ডগফাইট” চলাকালে- প্লেনকে হালকা করার জন্য মার্কিন “পি-৫১”-তে বহনকৃত বোমাগুলোকে বাইরে ফেলে দেয়া হয়, অর্থাৎ প্লেন থেকে ফেলে দেয়া হয়। ফলে, “পি-৫১”-এর পরিত্যাক্ত অবিস্ফোরিত বোমাগুলোকে খুঁজে বের করতে এবারে ইভো-কে মিশনে বেরোতে হয়; বোমাগুলোকে খুঁজে পাওয়া গেলে, হয় সেগুলোকে কুর্মিটোলায় ফিরিয়ে আনতে হবে আর নয়তো অকুস্থলেই সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অকেজো করতে হবে।
ইভো প্রথমে যান নারায়ণগঞ্জে, সঙ্গে নেন সামরিক সাপ্লাইয়ের (অর্ডন্যান্স) চারজনকে, একটি জীপ ও একটি বোমা সার্ভিসের ট্রাক। সেখানে ইভো প্রথমে ব্রিটিশ ভারতীয় বাহিনীর এক লেফটেন্যান্ট ও তার লোকবলের সঙ্গে দেখা করেন, এরপর সবাই একত্রে একটি ছোটো বার্জে আরোহণ করেন। বার্জটি উত্তরদিক ধরে চলতে থাকে, সারারাত চলার পরে পরদিন সকালে বার্জটি গন্তব্যস্থলের কাছাকাছি চলে আসে।
(চলবে)
নাঈম হক 


















