হংকংয়ের তাই পো এলাকায় একটি বৃহৎ আবাসিক কমপ্লেক্সে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৮-এ। এখনো প্রায় ২০০ মানুষ নিখোঁজ, ফলে সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। ৪২ ঘণ্টা পর দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও এলাকাজুড়ে শোক ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অগ্নিকাণ্ডের বর্তমান পরিস্থিতি
হংকংয়ের সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস ট্যাং জানান, অন্তত ৭৯ জন আগুনে আহত হয়েছেন। বহু ভবনজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আগুনের কারণ এখনো নিশ্চিত নয়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে শনাক্ত না হওয়া অনেক মৃতদেহও থাকতে পারে।
কীভাবে ছড়ালো আগুন
• কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক ধারণা, আগুন শুরু হয় নিচের তলাগুলো থেকে।
• আটটি টাওয়ার একসঙ্গে ঘনবসতিপূর্ণভাবে নির্মিত—যেখানে ৪,০০০-এর বেশি মানুষ থাকতেন, তাঁদের অনেকেই ছিলেন প্রবীণ।
• অগ্নিকাণ্ডের সময় পুরো কমপ্লেক্সে সংস্কারের কাজ চলছিল এবং প্রতিটি ভবনই ছিল বাঁশের স্ক্যাফোল্ডিং ও সবুজ জাল (মেশ) দিয়ে আচ্ছাদিত।

দমকল বাহিনী জানায়, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত দাহ্য পলিস্টাইরিন বোর্ড কয়েকটি জানালা আটকে রেখেছিল, যা দ্রুত আগুন ছড়াতে ভূমিকা রাখে।
ক্রিস ট্যাং বলেন, জাল ও পলিস্টাইরিন বোর্ডে আগুন ধরে জানালাগুলো ফেটে যায়, ফলে আগুন ভেতরে ঢুকে অন্যান্য তলা ও ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
ভবনের ভেতরে চরম তাপমাত্রা
দমকল কর্মীরা জানিয়েছেন, ভবনের ভেতরে তাপমাত্রা ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি পৌঁছায়। জাল ও স্ক্যাফোল্ডিং জ্বলে পড়ায় আগুন আরও উপরের তলায় ছড়িয়ে পড়ে। কিছু ইউনিটে আগুন নেভানোর পরও পুনরায় জ্বলে ওঠে, যা উদ্ধারকাজ কে কঠিন করে তোলে।
অকার্যকর আগুন সতর্কীকরণ ব্যবস্থা
ফায়ার সার্ভিসেস ডিরেক্টর অ্যান্ডি ইয়ুং পরিদর্শনে দেখেন, আটটি টাওয়ারের কোনো অগ্নি-সতর্কীকরণ অ্যালার্মই কার্যকর ছিল না। বাসিন্দারা আগেই জানিয়েছিলেন যে আগুনের দিন অ্যালার্ম বাজেনি।
ইউং নিশ্চিত করেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও শোক
বহু বাসিন্দা এখনো অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে তৃতীয় রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ প্রিয়জনের খোঁজে মরিয়া হয়ে তথ্যের অপেক্ষায়, আবার কেউ প্রশ্ন তুলছেন—কীভাবে এত বড় দুর্যোগ ঘটল এমন একটি শহরে, যার নিরাপত্তা ও বিল্ডিং মান বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত?
আগুনের তদন্ত
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুন কেন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের পূর্ণাঙ্গ তদন্তে তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগবে। জাল মেশ আগুন-নিরাপত্তা মান পূরণ করলেও কেন তা নিয়ন্ত্রণ করা গেল না—সেটিও তদন্তের অংশ।
#হংকং_অগ্নিকাণ্ড #তাই_পো #মৃত_১২৮ #নিখোঁজ_২০০ #নিরাপত্তা_ত্রুটি #আবাসিক_কমপ্লেক্স #আগুন #তদন্ত #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















