০৯:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
দুবাইয়ে মৃত্যুবরণ করলেন আমিরাতপ্রবাসী ভারতীয় ‘সুপারম্যান’ দেবেশ মিস্ত্রি সংযুক্ত আরব আমিরাতে গুরুতর অনিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি বাতিল জিন সম্পাদনায় বিশ্বে প্রথম: বিরল রোগ থেকে অলৌকিকভাবে রক্ষা পেল শিশু কেজে চীনা যুদ্ধবিমান রাডার লক্ষ্য করল জাপানি এসডিএফ জেটকে: টোকিওর অভিযোগ জামাত খুলনায় নতুন এক হিন্দু বন্ধুকে নিয়োগ দিয়েছে, আর কিছু বলব না: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন সুমাত্রায় ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত শত গ্রামের হাহাকার: ত্রাণ পৌঁছায়নি বহু এলাকায় সুন্দরবন থেকে ৭ জেলে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার এখনও অচল, আন্তঃব্যাংক লেনদেন প্ল্যাটফর্ম বন্ধ সোনামসজিদ হয়ে ভারতে থেকে পেঁয়াজ আনছে বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনে সমান পরিবেশ নেই, প্রশাসনের অবস্থায় গভীর উদ্বেগ : জামায়াত

জিন সম্পাদনায় বিশ্বে প্রথম: বিরল রোগ থেকে অলৌকিকভাবে রক্ষা পেল শিশু কেজে

বিজ্ঞান আপডেট | ১৩ নভেম্বর ২০২৫

ফিলাডেলফিয়ায় জন্ম নেওয়া কেজে নামের এক শিশু জন্ম থেকেই জীবনসংকটে ছিল। বিরল এক এনজাইম ঘাটতির কারণে রক্তে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বাড়ছিল। জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন—তার শরীরে কারবামাইল ফসফেট সিনথেটেজ (CPS1) এনজাইমের ঘাটতি রয়েছে, যা ইউরিয়া চক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ শিশু এক বছরের মধ্যেই মারা যায়।

কিন্তু কেজে হলো বিশ্বের প্রথম শিশু, যার দেহে CRISPR জিন-সম্পাদনা প্রযুক্তি প্রয়োগ করে রোগের মূল জিন ত্রুটি সরিয়ে ফেলা হয়।


কেজেকে বাঁচাল জিন এডিটিং

জন্মের পাঁচ সপ্তাহ আগেই কেজে পৃথিবীতে আসে। জন্মের পর সব কিছু স্বাভাবিক মনে হলেও পরে রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় তার অ্যামোনিয়ার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন—এটি গুরুতর বিপদের ইঙ্গিত।

A rare disorder threatened baby KJ. Could a race to edit his genes save  him? - The Washington Post

তাদের ধারণা সত্যি হয়। কেজের দেহে CPS1 এনজাইমের জেনেটিক ঘাটতি পাওয়া যায়, যা লিভারের অ্যামোনিয়া ভেঙে ইউরিয়ায় রূপান্তর করার ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে রক্তে জমতে থাকে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া, যা মস্তিষ্কেও পৌঁছে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।


কীভাবে কাজ করল CRISPR

সাত মাস বয়সে কেজে দুই দফায় CRISPR চিকিৎসা পায়।
বিশেষভাবে কোড করা CRISPR তার জিনে থাকা সেই ত্রুটির অবস্থান চিহ্নিত করে।
কেজের অনন্য জিন ভ্যারিয়েন্টটি লক্ষ্য করেই CRISPR ত্রুটিপূর্ণ অংশটি কেটে বাদ দেয়।

চিকিৎসার ছয় সপ্তাহ পর দেখা যায়, আগে যে প্রোটিন খাবার কেজের অ্যামোনিয়া বাড়িয়ে দিত, সেগুলো সে এখন স্বাভাবিকভাবে হজম করতে পারছে। চিকিৎসকেরা জানান—সে বর্তমানে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছে এবং ভবিষ্যতে হয়তো খুব অল্প পরিমাণ বা কোনো ওষুধই লাগবে না।

কেজে এখন ইতিহাসের অংশ—তার সফল চিকিৎসা CRISPR প্রযুক্তিকে বিরল জিনগত রোগ নিরাময়ে নতুন দিগন্তে নিয়ে গেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

দুবাইয়ে মৃত্যুবরণ করলেন আমিরাতপ্রবাসী ভারতীয় ‘সুপারম্যান’ দেবেশ মিস্ত্রি

জিন সম্পাদনায় বিশ্বে প্রথম: বিরল রোগ থেকে অলৌকিকভাবে রক্ষা পেল শিশু কেজে

০৮:৪৬:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

বিজ্ঞান আপডেট | ১৩ নভেম্বর ২০২৫

ফিলাডেলফিয়ায় জন্ম নেওয়া কেজে নামের এক শিশু জন্ম থেকেই জীবনসংকটে ছিল। বিরল এক এনজাইম ঘাটতির কারণে রক্তে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বাড়ছিল। জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন—তার শরীরে কারবামাইল ফসফেট সিনথেটেজ (CPS1) এনজাইমের ঘাটতি রয়েছে, যা ইউরিয়া চক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ শিশু এক বছরের মধ্যেই মারা যায়।

কিন্তু কেজে হলো বিশ্বের প্রথম শিশু, যার দেহে CRISPR জিন-সম্পাদনা প্রযুক্তি প্রয়োগ করে রোগের মূল জিন ত্রুটি সরিয়ে ফেলা হয়।


কেজেকে বাঁচাল জিন এডিটিং

জন্মের পাঁচ সপ্তাহ আগেই কেজে পৃথিবীতে আসে। জন্মের পর সব কিছু স্বাভাবিক মনে হলেও পরে রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় তার অ্যামোনিয়ার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন—এটি গুরুতর বিপদের ইঙ্গিত।

A rare disorder threatened baby KJ. Could a race to edit his genes save  him? - The Washington Post

তাদের ধারণা সত্যি হয়। কেজের দেহে CPS1 এনজাইমের জেনেটিক ঘাটতি পাওয়া যায়, যা লিভারের অ্যামোনিয়া ভেঙে ইউরিয়ায় রূপান্তর করার ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে রক্তে জমতে থাকে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া, যা মস্তিষ্কেও পৌঁছে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।


কীভাবে কাজ করল CRISPR

সাত মাস বয়সে কেজে দুই দফায় CRISPR চিকিৎসা পায়।
বিশেষভাবে কোড করা CRISPR তার জিনে থাকা সেই ত্রুটির অবস্থান চিহ্নিত করে।
কেজের অনন্য জিন ভ্যারিয়েন্টটি লক্ষ্য করেই CRISPR ত্রুটিপূর্ণ অংশটি কেটে বাদ দেয়।

চিকিৎসার ছয় সপ্তাহ পর দেখা যায়, আগে যে প্রোটিন খাবার কেজের অ্যামোনিয়া বাড়িয়ে দিত, সেগুলো সে এখন স্বাভাবিকভাবে হজম করতে পারছে। চিকিৎসকেরা জানান—সে বর্তমানে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছে এবং ভবিষ্যতে হয়তো খুব অল্প পরিমাণ বা কোনো ওষুধই লাগবে না।

কেজে এখন ইতিহাসের অংশ—তার সফল চিকিৎসা CRISPR প্রযুক্তিকে বিরল জিনগত রোগ নিরাময়ে নতুন দিগন্তে নিয়ে গেছে।