বিজ্ঞান আপডেট | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
ফিলাডেলফিয়ায় জন্ম নেওয়া কেজে নামের এক শিশু জন্ম থেকেই জীবনসংকটে ছিল। বিরল এক এনজাইম ঘাটতির কারণে রক্তে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বাড়ছিল। জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন—তার শরীরে কারবামাইল ফসফেট সিনথেটেজ (CPS1) এনজাইমের ঘাটতি রয়েছে, যা ইউরিয়া চক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ শিশু এক বছরের মধ্যেই মারা যায়।
কিন্তু কেজে হলো বিশ্বের প্রথম শিশু, যার দেহে CRISPR জিন-সম্পাদনা প্রযুক্তি প্রয়োগ করে রোগের মূল জিন ত্রুটি সরিয়ে ফেলা হয়।
কেজেকে বাঁচাল জিন এডিটিং
জন্মের পাঁচ সপ্তাহ আগেই কেজে পৃথিবীতে আসে। জন্মের পর সব কিছু স্বাভাবিক মনে হলেও পরে রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় তার অ্যামোনিয়ার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন—এটি গুরুতর বিপদের ইঙ্গিত।

তাদের ধারণা সত্যি হয়। কেজের দেহে CPS1 এনজাইমের জেনেটিক ঘাটতি পাওয়া যায়, যা লিভারের অ্যামোনিয়া ভেঙে ইউরিয়ায় রূপান্তর করার ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে রক্তে জমতে থাকে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া, যা মস্তিষ্কেও পৌঁছে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
কীভাবে কাজ করল CRISPR
সাত মাস বয়সে কেজে দুই দফায় CRISPR চিকিৎসা পায়।
বিশেষভাবে কোড করা CRISPR তার জিনে থাকা সেই ত্রুটির অবস্থান চিহ্নিত করে।
কেজের অনন্য জিন ভ্যারিয়েন্টটি লক্ষ্য করেই CRISPR ত্রুটিপূর্ণ অংশটি কেটে বাদ দেয়।
চিকিৎসার ছয় সপ্তাহ পর দেখা যায়, আগে যে প্রোটিন খাবার কেজের অ্যামোনিয়া বাড়িয়ে দিত, সেগুলো সে এখন স্বাভাবিকভাবে হজম করতে পারছে। চিকিৎসকেরা জানান—সে বর্তমানে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছে এবং ভবিষ্যতে হয়তো খুব অল্প পরিমাণ বা কোনো ওষুধই লাগবে না।
কেজে এখন ইতিহাসের অংশ—তার সফল চিকিৎসা CRISPR প্রযুক্তিকে বিরল জিনগত রোগ নিরাময়ে নতুন দিগন্তে নিয়ে গেছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















