এআই হার্ডওয়্যার বাজার বহুদিন ধরেই এনভিডিয়ার দখলে, কিন্তু এবার সেই আধিপত্যে ফাটল ধরছে—এমনটিই বলছে একাধিক বিশ্লেষণ। ব্লুমবার্গের মতে, মেটা সম্প্রতি এনভিডিয়া নয়, বরং গুগলের তৈরি এআই চিপ কেনার বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছে—মূল্য কয়েক বিলিয়ন ডলার। খবরটি প্রকাশের পরদিন এনভিডিয়ার শেয়ার পড়ে ২.৬%, আর গুগলের শেয়ার বাড়ে ১.৬%—যা বাজারের মনোভাব স্পষ্ট করে দেয়।
এনভিডিয়া পরে X-এ রক্ষামূলক ভঙ্গিতে পোস্ট করে জানায়, তারা “গুগলের সাফল্যে আনন্দিত”, তবে তাদের নিজস্ব চিপগুলো “শিল্পে এক প্রজন্ম এগিয়ে”—যদিও প্রতিযোগীরা দ্রুত ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। গুগলের পাশাপাশি অ্যামাজনও নিজস্ব এআই চিপ—Trainium ও Inferentia—নিয়ে আক্রমণাত্মকভাবে এগোচ্ছে।
গুগলের ১০ বছরের প্রস্তুতি এবং TPUs-এর উত্থান
গুগলের চিপ যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালে, যখন তারা সার্চ ইঞ্জিনকে আরও দ্রুততর করতে TPU (Tensor Processing Unit) তৈরি শুরু করে।
অন্যদিকে এনভিডিয়ার GPU—এআই বিপ্লবের কেন্দ্রবিন্দু—ব্যবহার, চাহিদা ও সফটওয়্যার ইকোসিস্টেমের কারণে বাজারে ‘স্বর্ণমান’ হয়ে উঠেছে। কিন্তু GPU এর দাম বাড়া ও সরবরাহ ঘাটতি গুগলের জন্য বিরাট সুযোগ তৈরি করেছে।
এনভিডিয়ার শক্তির মূল ভিত্তি CUDA, একটি শক্তিশালী সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম যা ডেভেলপারদের বিশাল সুবিধা দেয়। বিপরীতে, TPU–কে ঘিরে গুগলের সফটওয়্যার মূলত তাদের নিজস্ব সেবা ও অবকাঠামোর জন্য তৈরি—এটি শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করবে কতসংখ্যক গ্রাহক এনভিডিয়া ছেড়ে গুগলের দিকে ঝুঁকবেন।

জেমিনি ৩-এর সাফল্য: পিছিয়ে থাকা গুগল এখন অগ্রগামী
গুগলের নতুন এআই মডেল Gemini 3—যা TPUs দ্বারা চালিত—বেশ কয়েকটি বেঞ্চমার্কে ওপেনএআইসহ প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাড়িয়ে গেছে। এতটাই যে ওপেনএআই–এর স্যাম অল্টম্যান ও এলন মাস্ক প্রকাশ্যে গুগলকে অভিনন্দন জানাতে বাধ্য হয়েছেন।
একসময় এআই দৌড়ে পিছিয়ে পড়া প্রতিষ্ঠান হিসেবে গুগলকে দেখা হতো—কিন্তু এখন এটি “ওপেনএআই + মাইক্রোসফট + এনভিডিয়া—সব মিলিয়ে এক নতুন শক্তি”—এমন মন্তব্য Wall Street Journal–এর।
এআই মডেল, কাস্টম চিপ, এবং বিজ্ঞাপন–নির্ভর মূল ব্যবসা—সব দিকেই উন্নতি দেখে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। ওয়ারেন বাফেট পর্যন্ত আগ্রহ দেখিয়েছেন। অক্টোবরের শেষ থেকে গুগলের শেয়ার যেখানে ঊর্ধ্বমুখী, সেখানে মাইক্রোসফট, ওরাকল, এনভিডিয়া, মেটা—সবই ডাবল–ডিজিট পতনে।
বিশ্লেষকদের ভাষায়—“এআই বাবল নাকি? কেউ যেন গুগলকে জানাতে ভুলে গেছে।”
Sarakhon Report 


















