ভারতের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (USTR)–এর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দিল্লি এবার ওয়াশিংটনকে ‘এ পর্যন্ত সেরা প্রস্তাব’ দিয়েছে। কঠিন আলোচনার পরও ভারতকে বাণিজ্যের জন্য সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচক দল
মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের ডেপুটি ইউএসটিআর রিক সুইটজারের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের দল বর্তমানে ভারতে রয়েছে। এই দলটি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির প্রথম ধাপ নিয়ে মুখোমুখি আলোচনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেমিসন গ্রিয়ার জানিয়েছেন যে ভারত এখনো ‘কঠিন একটি দেশ’ বটে, তবে এবার নিউ দিল্লি যে প্রস্তাব দিয়েছে তা এর আগে কখনো পাওয়া যায়নি। গ্রিয়ারের ভাষায়, “আমার দল এখনই দিল্লিতে বসে আলোচনা করছে। কিছু কৃষিপণ্য ও মাংসজাত দ্রব্যে ভারতের আপত্তি আছে। ভারতকে ভাঙা সত্যিই কঠিন।”
তবুও তিনি বলেন, ভারত সাম্প্রতিক আলোচনায় “খুবই এগিয়ে আসা মনোভাব” দেখিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত।
ভারতের প্রস্তাব ‘সবচেয়ে ভালো’, বলছে যুক্তরাষ্ট্র
গ্রিয়ার ব্যাখ্যা করেন, “যে ধরণের প্রস্তাব ভারত এবার আমাদের দিয়েছে, তা আমাদের দেশের জন্য এ পর্যন্ত সেরা।” তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র নতুন রপ্তানি গন্তব্য খুঁজছে এবং ভারত এখন একটি উল্লেখযোগ্য বিকল্প বাজার হিসেবে উঠে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, কম্বোডিয়াসহ অন্য অনেক দেশ ইতোমধ্যে বাণিজ্য শুল্ক কমিয়েছে। এছাড়া সয়াবিনভিত্তিক বায়োফুয়েলের বৈশ্বিক চাহিদা নতুন সুযোগ তৈরি করছে।
গ্রিয়ারের মন্তব্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র এখন ‘প্রত্যেক দেশেই উপস্থিত থাকার’ নীতি অনুসরণ করছে, যাতে রপ্তানি বাজার বহুমুখী থাকে।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব
গ্রিয়ার জোর দিয়ে বলেন যে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চালু রাখা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থেই প্রয়োজন। “তারা আমাদের পণ্য চায়, আমরাও বিক্রি করতে চাই,” বলেন তিনি।
কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনা
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যালিসন হুকার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দুই দেশই ট্রাম্প-মোদি বৈঠকে নির্ধারিত যৌথ লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে জোর দিয়েছে।
হুকার পাঁচ দিনের সফরে ভারতে এসে জানিয়েছেন, “এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল ট্রাম্প-মোদির ফেব্রুয়ারির বৈঠকে যে ভিশন তৈরি হয়েছে, তাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া—যাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা বাড়ে এবং ভারতের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যও এগিয়ে যায়।”
প্রস্তাবিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (BTA) নিয়ে আলোচনা
এ-সংক্রান্ত সূত্র জানায়, নতুন দায়িত্ব পাওয়া ডেপুটি ইউএসটিআর রিক সুইটজার দুই দিনব্যাপী আনুষ্ঠানিক আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এই আলোচনাই প্রথম পর্যায়ের ভারত–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তির পথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















