নতুন রাজনৈতিক কমেডি ‘এলা ম্যাকে’তে তরুণ লেফটেন্যান্ট গভর্নরের গল্প তুলে ধরেছেন জেমস এল ব্রুকস, যিনি তাঁর ক্যারিয়ারে অসংখ্য স্মরণীয় নারী চরিত্র সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু এবার তিনি আগে কখনও এত নিষ্প্রভ প্রধান চরিত্র উপস্থাপন করেননি। এমা ম্যাকি অভিনীত এলা ম্যাকে চরিত্রটি এতটাই দুর্বল ও বিভ্রান্তিকর যে দর্শকের সঙ্গে তার সংযোগ একেবারেই তৈরি হয় না।
এলা চরিত্র ও এমা ম্যাকি নামের অদ্ভুত মিল যেন অযথাই সমালোচকদের বিভ্রান্ত করার এক অদ্ভুত প্রচেষ্টা। চরিত্রের নাম বদলালে আরও স্পষ্ট হতো—কিন্তু ব্রুকস যেন সেই সহজ পথ এড়িয়েই গেছেন।
নতুন ইংল্যান্ডের পটভূমিতে ৩৪ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট গভর্নর এলার যাত্রা শুরু হয়। অতিরিক্ত প্রস্তুতিমূলক, আদর্শবাদী, কিন্তু এমন বিরক্তিকর যে সাধারণ মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা কম। গভর্নর হঠাৎ পদত্যাগ করায় এলা সহজেই ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে যায়, কিন্তু তার ব্যক্তিত্ব এমন যে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর পরামর্শও কাজে লাগে না। তার ব্যবহার যেন কোনও তহবিল কমিটির অতিনিষ্ঠ আইনজীবীর মতো, যিনি ফাইল আটকে রেখে পরিবেশ রক্ষার নীতি জোরদার করতে চান।
এলার চরিত্রে কেন এত শূন্যতা
জেমস এল ব্রুকস যেসব নারী চরিত্র দিয়ে সফলতা পেয়েছেন—জেন ক্রেগ, অ্যারোরা, ক্যারোল—তাদের তুলনায় এলা যেন পুরোনো সিটকমের দুর্বল চরিত্র। আশপাশে অদ্ভুত সব মানুষ থাকলেও ব্রুকসের পুরোনো ঢঙের চিত্রনাট্যে কেউই প্রাণ পায় না। এলার পরকীয়া সন্দেহ, অযৌক্তিক কেলেঙ্কারি ও রাজনৈতিক ভুল গুলো এমনভাবে দেখানো হয়েছে যে সেগুলো বাস্তবের সঙ্গে সামান্যতম সাদৃশ্য রাখে না।

চরিত্রগুলো কেন কাজ করেনি
এলার বাবা, একসময়ের রাজনৈতিক নেতা; খালা-বন্ধু; ব্যঙ্গাত্মক সহকারী; লাজুক ভাই—সবাই মিলেও গল্পকে বাঁচাতে পারে না। এলার স্বামী রায়ানের চরিত্র প্রথমে বাস্তব মনে হলেও পরে হঠাৎ অযৌক্তিকভাবে বদলে যায়, যা গল্পকে আরও দুর্বল করে তোলে।
কাহিনি ভাঙতে ভাঙতে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ
কেলেঙ্কারি হিসেবে দেখানো হয়েছে স্বামীর সঙ্গে সরকারি অ্যাপার্টমেন্টে অন্তরঙ্গতা—যা আইন ভঙ্গ হিসেবে দেখানো হলেও দৃশ্যটি বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। এমনই আরও কয়েকটি কৃত্রিম ঘটনা জুড়ে ‘এলা ম্যাকে’ শেষ পর্যন্ত একঘেয়ে, ফিকে এবং অগোছালো চিত্রনাট্যে রূপ নেয়।
সারাক্ষণ রিপোর্টের মূল্যায়ন
জেমস এল ব্রুকসের মতো কিংবদন্তি নির্মাতার কাছ থেকে দর্শকের প্রত্যাশা স্বাভাবিকভাবেই বেশি। তিনি অতীতে ব্যর্থ ছবির মধ্যেও দর্শককে আবেগে ছুঁতে পেরেছিলেন। কিন্তু ‘এলা ম্যাকে’ সেই শক্তি নেই। সংলাপ মনে থাকে না, গল্পে বিশ্বাস জন্মায় না, চরিত্রে টান নেই। ব্রুকসের জন্য এটি শুধুই ব্যর্থতা নয়—এটি এক নির্মাতার সৃষ্টিশক্তির বেদনাদায়ক পতন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















