চিয়াং কাইশেকের স্ট্র্যাটেজি ছিলো- শত্রু চরম পরিশ্রান্ত অবস্থায় না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো….
চীনে আসার পরে, জেনারেল স্টিলওয়েল অতি দ্রুত আবিষ্কার করেন যে মার্কিন সাপ্লাইসমূহ জাপানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মোটেই ব্যয় হচ্ছে না, বরং চিয়াং কাইশেকের জাতীয়তাবাদী সরকার তাদের শত্রু কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে খরচা করছে। তদুপরি যদিও জেনারেল স্টিলওয়েলের নিযুক্তি ছিলো চিয়াং কাইশেকের চীফ অব স্টাফ হিসেবে এবং পদাধিকারবলে চীনা জেনারেলরা জেনারেল স্টিলওয়েলের কাছে রিপোর্ট করবে, কিন্তু বাস্তবে জেনেরালিসিমৌ চিয়াং কাইশেকের কাছে তারা অনুগত থাকে।
এমনকি চিয়াং কাইশেক এমনভাবে ভিন্ন রকমের কমান্ড দিতে থাকেন যাতে চীনা বাহিনী জেনারেল স্টিলওয়েলের হুকুমনির্দেশের আজ্ঞানুবর্তী হতে না পারে, বিশেষ করে ১৯৪২ সালের শুরুতে জাপানী বাহিনী যখন বার্মা পর্যন্ত চলে আসে, সেই সময়টায়। তাছাড়াও চিয়াং কাইশেক জেনারেল স্টিলওয়েলকে সর্তক করে দেন। যেন জাপানীদের বিরুদ্ধে জেনারেল পূর্ণশক্তি সম্পন্ন চীনা বাহিনী নিয়ে ঝাঁপিয়ে না পড়েন। চিয়াং কাইশেকের স্ট্র্যাটেজি ছিলো- শত্রু চরম পরিশ্রান্ত অবস্থায় না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।
চিয়াং কাইশেক এবং জেনারেল স্টিলওয়েলের মধ্যে বিরাজমান এতোসব বিভিন্নতা শুরু থেকেই তাঁদের সম্পর্ককে সংঘর্ষমূলক বিরুদ্ধতায় পরিণত করে। তাছাড়াও, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল চেনল্ট আবার জেনারেল স্টিলওয়েলকে দুই চক্ষে দেখতে পারতেন না বিধায় তিনিও সংঘর্ষমূলক বিরুদ্ধতায় নিরন্তর ঘৃতাহুতির কাজ করেন।
এমনকি তিনি চিয়াং কাইশেকের ও স্ত্রী ম্যাডাম কাইশেকের উৎসাহিত সমর্থন নিয়ে খোদ প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে সরাসরি সুপারিশ করেন যাতে জেনারেল স্টিলওয়েলকে সরিয়ে নেয়া হয়। চীনের ধনীতম পরিবার থেকে আগত ম্যাডাম কাইশেকের ওয়াশিংটন ডিসি’র রাজনীতিকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিলো অত্যন্ত গভীর জোরালো । তিনি যে রুজভেল্টের সঙ্গে দেখা করেন তা-ই নয়, প্রেসিডেন্টের অতিথি হিসেবে হোয়াইট হাউসে অবস্থানও করেন। চিয়াং কাই শেকও জেনারেল স্টিলওয়েলকে সরিয়ে নিতে রুজভেল্টকে সরাসরি অনুরোধ করেন।
(চলবে)
নাঈম হক 


















