চেনল্ট’কে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে মার্কিন সেনাবাহিনীতে পুনরায় বহাল করা হয়, তবে তাঁর রিপোর্ট করার কর্তব্য থাকে জেনারেল স্টিলওয়েলের কাছে…
১৯৪০ সালের শেষের দিকে চীনের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে জাপানি বোমা বর্ষণের মাত্রা তীব্রতর হয়। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও চিয়াং কাই শেক- মার্কিন পাইলটরা কিভাবে চীনের বিমানবাহিনীকে সাহায্য করতে পারে’র একটি নতুন পথ খুঁজে পায়। নতুন পথটি ছিলো এরকম : মার্কিন বিমাণবাহিনীর সঙ্গে চুক্তিমতো এবং প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের সম্মতিক্রমে আমেরিকান পাইলটরা মার্কিন বিমানবাহিনী থেকে পদত্যাগ করে এবং চীনে সদ্য সংগঠিত আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবক দলে (ভলান্টারি গ্রুপ) যোগদান করে। এই স্বেচ্ছাসেবক বিমানবাহিনীর দলটি “ফ্লাইং টাইগারস বা উড়ন্ত বাঘ” নামেও পরিচিতি পায়।

“ফ্লাইং টাইগারস”। এই আদি ছবিটি সৃষ্টি হয় ১৯৪২ সালের দিকে।
ফ্লাইং টাইগারস নামক এই স্বেচ্ছাসেবক বিমানবহর ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ সঠি করে এবং জাপানী বাহিনীর মধ্যে ভয়ঙ্কর ত্রাসের সঞ্চার করে। সাত মাসের মাথায় ফ্রাইং টাইগারস প্রায় শ’তিনেক জাপানী বিমানকে ভূপাতিত করে। কিছু “ফ্লাইং টাইগারস”-য়ের পাইলটদের নিয়ে মূল সমস্যা ছিলো যে তারা ছিলে উচ্ছৃঙ্খল দুরন্ত এবং নিয়মানুবর্তিতার ধার ধারত না। যখন আকাশে থাকত না। সময় কাটাত অতি মাত্রায় মদ্যপানে ও নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। ক্যাপ্টেন চেনল্ট এমনকি তাঁর পাইলটদের জন্য “গুইলিন”-য়ে একট পতিতালয়ও খোলেন। বলাইবাহুল্য যে এই বাস্তবতার খবরে জেনারেল স্টিলওয়েল অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন।
যাহোক, ১৯৪২ সালের জুলাই মাসে “ফ্লাইং টাইগারস”-কে মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমানবহরের সঙ্গে আত্মীভূত করা হয় এবং “২৩তম ফাইটার দল” হিসাবে পরিচয় পায়। চেনল্ট’কে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে মার্কিন সেনাবাহিনীতে পুনরায় বহাল করা হয়, তবে তাঁর রিপোর্ট করার কর্তব্য থাকে জেনারেল স্টিলওয়েলের কাছে। চেনল্টের বড়ো আশা ছিলো যে “সিবিআই’ রণমঞ্চে বা থিয়েটারে তাঁকে বৃহত্তর ভূমিকা ও অধিকতর ক্ষমতা দেয়া হবে। কারণ ইত্যবসরেই তিনি বীর-যোদ্ধা বা ‘ওয়ার হিরো’ হিসেবে সুপরিচিত ও সুখ্যাত এবং উপরওয়ালা ‘বস’দের ডিঙিয়ে সরাসরি প্রেসিডেন্ট রুজভেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করার যোগ্যতা ও ক্ষমতা দেখান তিনি। (অবশ্য তাঁর প্রতি মাদাম চিয়াং কাই শেকের অকৃপণ স্নেহ মমতার ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না বোধহয়)।
(চলবে)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭২)
নাঈম হক 



















