তিনি তাঁর উপরস্থদেরকে নতুন এই রণ-স্ট্র্যাটেজি বিষয়ে প্রত্যয় সৃষ্টিতে সফল হন না…
জেনারেল স্টিলওয়েলের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের একটি ছিলো- চীন ও বার্মার মধ্যকার দখলকৃত রাস্তাটি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব করায়ত্ত করা। তাঁর আরেকটি পরিকল্পনা ছিলো ভারতের “লেদো” (আসাম) থেকে বার্মার “লেশিও” পর্যন্ত একটি নতুন রাস্তা তৈরি করা।
জেনারেল স্টিলওয়েল যখন চীন-বার্মা-ভারত থিয়েটারে আসেন, দেখেন যে মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমানবহরের অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (পরবর্তীকালে মেজর জেনারেল এবং অনারারি লেফটেন্যান্ট জেনারেল) ক্লেয়ার লী চেনল্ট (Claire Lee Chennault) ইত্যবসরেই চিয়াং কাইশেকের “কনফিড্যান্ট” পদে অধিষ্ঠিত।

মেজর জেনারেল ক্লেয়ার লী চেনল্ট।
তাঁর কালে অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন চেনল্ট ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম কসরতবাজ তথা অ্যাক্রব্যাট পাইলট। তিনি প্রবলভাবে- বোমারু বিমান ও স্থল সেনাবাহিনীর যৌথ আক্রমণের পরিবর্তে ফাইটার বিমান ভিত্তিক আক্রমণ পরিচালনার সমর্থন করেন। কিন্তু তিনি তাঁর উপরস্থদেরকে নতুন এই রণ-স্ট্র্যাটেজি বিষয়ে প্রত্যয় সৃষ্টিতে সফল হন না।
তবে রটনা চালু রয়েছে যে মাত্র সাতচল্লিশ বছর বয়সে স্বাস্থ্যগত কারণে ক্যাপ্টেন চেনল্টের অবসর জীবনে চলে যাওয়ার সংবাদ প্রচার হলে মার্কিন সেনাবাহিনী নাকি যারপরনাই আনন্দিত হয়েছিলো। অবশ্য অবসর জীবনে চলে যেতে না যেতেই চিয়াং কাইশেক ক্যাপ্টেন চেনল্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাঁকে চীনা বিমানবহর বিষয়ক পরামর্শদাতা হিসাবে নিযুক্ত করেন। চীনে এসে চেনল্ট আবিস্কার করেন যে চীনা পাইলটরা অপর্যাপ্তভাবে ট্রেনিংপ্রাপ্ত। তাদেরকে সঠিক ট্রনিং দেয়ার ব্যাপারে তিনি তখন আমেরিকান সরকারের সহায় সমর্থনের শরণাপন্ন হন।
ক্যাপ্টেন চেনল্টের এই আবেদনে যুক্তরাষ্ট্র মহা অস্বস্তিতে পড়ে। কারণ, মহাযুদ্ধ চলাকালীন সেই সময়টায়, দূরপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষতা অবলম্বন করছিলো। কাজেই এমতাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সহায় সমর্থন প্রদানকে জাপানীরা যুক্তরাষ্ট্রের রণাঙ্গণে প্রবেশ হিসাবে গণ্য করতে পারে। তবে যদিও ১৯৪১ সালের এপ্রিল মাসে রাশিয়া ও জাপান নিজেদের মধ্যে নিরপেক্ষতা-চুক্তি সই করেছিলো, রাশিয়া কিন্তু চীনা পাইলটদের ট্রেনিং দিতে পিছপা হয়নি।
(চলবে)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭১)
নাঈম হক 


















