১১:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬৪) ক্ষমতার নৃত্য: ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম প্রকল্পে দানের আড়ালে ব্যবসায়িক স্বার্থের খেলা জোহরান মামদানির সিরিয়ান স্ত্রী রামা দুয়াজি সম্পর্কে এই বিষয়গুলো কি জানেন? পুঁজিবাজারে পতনের ধারা অব্যাহত: সপ্তাহ শেষে ডিএসই ও সিএসই লাল সূচকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যু সংবিধান উপেক্ষা করে গণভোটের তাড়াহুড়ো জনমনে সন্দেহ জাগাচ্ছে: আমীর খসরু শেয়ারবাজারে পতন: সপ্তাহ শেষে লাল সংকেতে ডিএসই ও সিএসই ব্যাংক একীভূতকরণে বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভ: পদত্যাগ দাবি ও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও ধর্মনিরপেক্ষতা নিশ্চিতের আহ্বান হিন্দু মহাজোটের সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণন: গাজা পুনর্গঠন ও শান্তি আলোচনায় বাস্তব পদক্ষেপ চাইলেন

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৪৩)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪
  • 81

শ্রী নিখিলনাথ রায়

 

মীর কাসেমের গুরবস্থার পর তাঁহারা বাদশাহ শাহআলম ও অযোধ্যার নবাব-উজিরের হস্তে পতিত হইয়াছিলেন। মীরজাফর দ্বিতীয় ধার সিংহাসনে আরোহণ করিয়া, তাঁহাদিগকে মুর্শিদাবাদে আনয়ন করিবার জন্য নবাব উজীরকে বারংবার অনুরোধ করিয়া পাঠান। কিন্তু তিনি মীরজাফরের অনুরোধ রক্ষা করেন নাই। খোশালচাঁদ ও উদায়ংচাঁদ অনেক অর্থ দিয়া তাঁহাদিগকে মুর্শিদাবাদে আনয়ন করেন। মুর্শিদাবাদে আসিয়া তাঁহাদিগকে অত্যন্ত হীন অবস্থায় জীবিকা নির্ব্বাহ করিতে হইয়াছিল।

১৭৬৫ খৃঃ অব্দের জানুয়ারী মাসে মীরজাফরের দেহত্যাগ হইলে, তাঁহার পুত্র নজম উদ্দৌলা ইংরেজদিগের অনুগ্রহে মুর্শিদাবাদের মসনদে উপবিষ্ট হন। কলিকাতার কাউন্সিলে তাঁহাকে সিংহাসন প্রদান করা স্থিরীকৃত হইলে, জনষ্টন, মীডলটন ও লেসেষ্টার নামে কাউন্সিলের তিনজন সভ্য তাঁহাকে মসনদে বসাইতে মুর্শিদাবাদে আগমন করিয়া ছিলেন। এই সময়ে কোম্পানীর কর্মচারিগণের অর্থলালসা অত্যন্ত বলবতী হওয়ায়, নবাবকে তাহা মিটাইবার জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করিতে হয়।

নজম উদ্দৌলার সহিত বন্দোবস্তের সময় ইংরেজেরা জগৎশেঠকেও তাঁহার কার্য্যের সহায়তার জন্ম নিযুক্ত করিয়াছিলেন। সেই উপলক্ষে উক্ত সভ্যত্রয় জগৎশেঠের নিকট হইতে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা প্রার্থনা করেন। জগৎশেঠ প্রথমে তাহা দিতে স্বীকৃত হইয়া- ছিলেন; কিন্তু তাঁহার উক্ত টাকা প্রদানে বিলম্ব হওয়ায়, কোম্পানীর মহাপ্রভু কৰ্ম্মচারিগণ জগৎশেঠকে নানারূপ ভন্ন প্রদর্শন করিয়া উক্ত টাকা আদায় করিয়াছিলেন। নজন উদ্দৌলা প্রথমতঃ মহম্মদ রেজা খাঁকে নায়েব সুবা নিযুক্ত করেন। তাহার পর, মে মাসে ক্লাইব ভারতবর্ষে পুনরাগমন করিলে, নজম উদ্দৌলা রাজস্ব ও সৈন্তসংক্রান্ত, যাবতীয় ভার পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হন। কেবল শাসনকার্য্যের ভার তাঁহার উপর ন্যস্ত থাকে এবং তিনি মহম্মদ রেজা খাঁ, রাজা দুর্লভ রাম ও জগৎশেঠের পরামর্শে সমুদায় কাৰ্য্য নির্ব্বাহ করিতে অনুরুদ্ধ হন।

১৭৬৫ খৃঃ অব্দের আগষ্ট মাসে কোম্পানী দেওয়ানী গ্রহণ করিয়া, দেশের সর্ব্বময় কর্তা হইয়া উঠিলেন। দেওয়ানী গ্রহণের পর ক্লাইব জগৎশেঠ খোশালচাঁদকে কোম্পানীর ‘সরফ’ বা গদীয়ানের পদে নিযুক্ত করিলেন। খোশালচাঁদ, তৎকালে অত্যন্ত অল্পবয়স্ক ছিলেন। তাঁহার বরস অষ্টাদশ বৎসরমাত্র ছিল বলিয়া শুনা যায়। এই সময় হইতে শেঠদিগের দুর্দশার আরম্ভ হয়।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬৪)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৪৩)

১১:০০:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

 

মীর কাসেমের গুরবস্থার পর তাঁহারা বাদশাহ শাহআলম ও অযোধ্যার নবাব-উজিরের হস্তে পতিত হইয়াছিলেন। মীরজাফর দ্বিতীয় ধার সিংহাসনে আরোহণ করিয়া, তাঁহাদিগকে মুর্শিদাবাদে আনয়ন করিবার জন্য নবাব উজীরকে বারংবার অনুরোধ করিয়া পাঠান। কিন্তু তিনি মীরজাফরের অনুরোধ রক্ষা করেন নাই। খোশালচাঁদ ও উদায়ংচাঁদ অনেক অর্থ দিয়া তাঁহাদিগকে মুর্শিদাবাদে আনয়ন করেন। মুর্শিদাবাদে আসিয়া তাঁহাদিগকে অত্যন্ত হীন অবস্থায় জীবিকা নির্ব্বাহ করিতে হইয়াছিল।

১৭৬৫ খৃঃ অব্দের জানুয়ারী মাসে মীরজাফরের দেহত্যাগ হইলে, তাঁহার পুত্র নজম উদ্দৌলা ইংরেজদিগের অনুগ্রহে মুর্শিদাবাদের মসনদে উপবিষ্ট হন। কলিকাতার কাউন্সিলে তাঁহাকে সিংহাসন প্রদান করা স্থিরীকৃত হইলে, জনষ্টন, মীডলটন ও লেসেষ্টার নামে কাউন্সিলের তিনজন সভ্য তাঁহাকে মসনদে বসাইতে মুর্শিদাবাদে আগমন করিয়া ছিলেন। এই সময়ে কোম্পানীর কর্মচারিগণের অর্থলালসা অত্যন্ত বলবতী হওয়ায়, নবাবকে তাহা মিটাইবার জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করিতে হয়।

নজম উদ্দৌলার সহিত বন্দোবস্তের সময় ইংরেজেরা জগৎশেঠকেও তাঁহার কার্য্যের সহায়তার জন্ম নিযুক্ত করিয়াছিলেন। সেই উপলক্ষে উক্ত সভ্যত্রয় জগৎশেঠের নিকট হইতে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা প্রার্থনা করেন। জগৎশেঠ প্রথমে তাহা দিতে স্বীকৃত হইয়া- ছিলেন; কিন্তু তাঁহার উক্ত টাকা প্রদানে বিলম্ব হওয়ায়, কোম্পানীর মহাপ্রভু কৰ্ম্মচারিগণ জগৎশেঠকে নানারূপ ভন্ন প্রদর্শন করিয়া উক্ত টাকা আদায় করিয়াছিলেন। নজন উদ্দৌলা প্রথমতঃ মহম্মদ রেজা খাঁকে নায়েব সুবা নিযুক্ত করেন। তাহার পর, মে মাসে ক্লাইব ভারতবর্ষে পুনরাগমন করিলে, নজম উদ্দৌলা রাজস্ব ও সৈন্তসংক্রান্ত, যাবতীয় ভার পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হন। কেবল শাসনকার্য্যের ভার তাঁহার উপর ন্যস্ত থাকে এবং তিনি মহম্মদ রেজা খাঁ, রাজা দুর্লভ রাম ও জগৎশেঠের পরামর্শে সমুদায় কাৰ্য্য নির্ব্বাহ করিতে অনুরুদ্ধ হন।

১৭৬৫ খৃঃ অব্দের আগষ্ট মাসে কোম্পানী দেওয়ানী গ্রহণ করিয়া, দেশের সর্ব্বময় কর্তা হইয়া উঠিলেন। দেওয়ানী গ্রহণের পর ক্লাইব জগৎশেঠ খোশালচাঁদকে কোম্পানীর ‘সরফ’ বা গদীয়ানের পদে নিযুক্ত করিলেন। খোশালচাঁদ, তৎকালে অত্যন্ত অল্পবয়স্ক ছিলেন। তাঁহার বরস অষ্টাদশ বৎসরমাত্র ছিল বলিয়া শুনা যায়। এই সময় হইতে শেঠদিগের দুর্দশার আরম্ভ হয়।