বান্দরবানের সুসুয়াং পাড়ায় দেশের অন্যতম উচ্চতম পাহাড় কেওক্রাডংয়ের পাদদেশে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার একশ ফুট উচ্চতায় নির্মিত হচ্ছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র ‘আলা মি ত্লাং’ ইকো রিসোর্ট। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া বম জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আলা মি ত্লাং নামের অর্থ দূর পাহাড়ের গান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্থিক সহায়তায় এই ইকো রিসোর্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্থানীয় বম জনগোষ্ঠীর জীবিকা ও আয়ের নতুন সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সুসুয়াং পাড়া বান্দরবান জেলা শহর থেকে প্রায় নব্বই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রিসোর্ট নির্মাণস্থলের পাশেই রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প।
শনিবার দুপুরে ইকো রিসোর্টটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ঊনসত্তর পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ও বান্দরবান আর্মি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রাকিব ইবনে রেজওয়ান।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজওয়ান জানান, চব্বিশতম পদাতিক ডিভিশনের অর্থায়নে এবং ম্যাজিস্টেরিয়াল টাইগার ইউনিটের সেনাসদস্যদের পরিকল্পনা সহায়তায় ত্রিশ লাখ টাকা ব্যয়ে এই রিসোর্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির পর গত আঠারো নভেম্বর দুই হাজার চব্বিশ থেকে নিরাপত্তা বাহিনী ও কুকি ন্যাশনাল আর্মির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় বাস্তুচ্যুত বম জনগোষ্ঠীর সদস্যরা তাদের পৈতৃক ভিটায় ফিরতে শুরু করেন।

এ পর্যন্ত ফিরে আসা দুই শত দুইটি বম পরিবারের মোট পাঁচ শত তিন জন সদস্যকে ঘর নির্মাণসামগ্রী ও মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ফিরে আসা পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে চব্বিশতম পদাতিক ডিভিশন ইতোমধ্যে বিশ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।
বর্তমানে পর্যটকদের জন্য সুসুয়াং পাড়ায় যাতায়াতের অনুমতি নেই। তবে নির্মাণকাজ শেষ হলে ইকো রিসোর্টটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
রিসোর্টটির ব্যবস্থাপনা থাকবে বম জনগোষ্ঠীর হাতে। এখান থেকে অর্জিত আয় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও মানবিক কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে, যা বম নৃগোষ্ঠীর সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লাল জারলাম বম, ম্যাজিস্টেরিয়াল টাইগার ইউনিটের ক্যাপ্টেন এবং রুমা আর্মি জোনের কমান্ডার।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















