বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে চলতি বছর প্রবাসী আয় হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বড় অঙ্কের ডলার কিনছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের সরবরাহ বাড়ায় বিনিময় হারে বড় ওঠানামা ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক কেনাকাটা
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান রোববার জানান, একাধিক দরের নিলাম পদ্ধতিতে তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১১ কোটি ডলার কেনা হয়েছে। প্রতি ডলারের বিনিময় হার নির্ধারিত ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা।
ডলার উদ্বৃত্ত সামাল দিতে হস্তক্ষেপ
প্রবাসী আয়ের জোয়ারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে ডলার উদ্বৃত্ত হয়ে পড়ায় বিনিময় হারে বড় ধরনের অস্থিরতার আশঙ্কা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক সক্রিয়ভাবে ডলার কিনছে।

ডিসেম্বরে বড় অঙ্কের সংগ্রহ
শুধু ডিসেম্বর মাসেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯২ কোটি ডলার কিনেছে। চলতি অর্থবছর ২০২৫-২৬ এ এ পর্যন্ত মোট কেনাকাটার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০৫ কোটি ডলার।
প্রবাসী আয়ে জোরালো প্রবৃদ্ধি
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ডিসেম্বরের ১ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত দেশে এসেছে ২৭৫ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের ১৯৮ কোটি ডলারের তুলনায় ১৪ শতাংশের বেশি।
অর্থবছরের সামগ্রিক চিত্র
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ১ হাজার ৫৭৯ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ১ হাজার ৩৫৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ শতাংশেরও বেশি। শুধু নভেম্বর মাসেই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৮৯ কোটি ডলার।

রেমিট্যান্স বাড়ার কারণ
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অবৈধ হুন্ডি প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা, প্রবাসী আয়ের প্রণোদনা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন এবং প্রবাসীদের জন্য ব্যাংকিং সেবা সহজ ও দ্রুত হওয়াই এই প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ।
রিজার্ভে স্বস্তি
টেকসই বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহের ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২০০ কোটি ডলারের বেশি হয়েছে। এতে সামগ্রিক অর্থনীতিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















