সারাক্ষণ প্রতিবেদক
বাংলাদেশের আনাচে কানাচে পালা ও লোক গানে বিগত দেড় দশক ধরে যে শিল্পী গান শুনিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়ে আসছেন তিনি মুক্তা সরকার। পালা ও লোকগানে অর্থাৎ শরীয়তী-মারফতি গানে মুক্তা সাহা’র এতোটাই চাহিদা যে গত বছর স্টেজ মৌসুমের মুহুর্তে অক্টোবরের শেষ দিন মুক্তা সাহা তার ফেসবুকে নভেম্বর মাসজুড়ে তার গান করার সিডিউলটা প্রকাশ করেছিলেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নাম সেই লিস্ট-এ তারিখ’সহ উল্লেখ ছিলো।

মুক্তা সরকারের মিষ্টি দরদী কন্ঠ একবার যে এলাকার গান পাগল শ্রোতা দর্শক উপভোগ করেছেন, বারবার তারা তাকে নিমন্ত্রণ জানাতে চান তাদের এলাকায়। মুক্তা সরকারের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মতলবের ষাটনলে। তার বাবা হযরত আলী সরকার গান করতেন। তার মা আরিফ বেগমও টুকটাক গান করতেন। তবে মুক্তার নানান সিদ্দিক ও মুক্তার বাবার আগ্রহেই মূলত মুক্তা সরকারের গানে প্রবল আগ্রহ তৈরী হয়। মতলবে গানের যে উৎসব হতো সেখানে গিয়েই মূলত গানের প্রতি মুক্তার প্রবল আগ্রহ জন্মায়। মুক্তার শিক্ষা গুরু হলেন আকলিাম বেগম ও আলেয়া বেগম।
তরঙ্গ ব্যানার থেকে মনির হোসেনের সঙ্গীতে মুক্তার প্রথম অ্যালবাম ‘জ্বালায় জ্বালায অঙ্গ জ্বলে’ অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়। এরপর দুই শতাধিক গানের অ্যালবাম তার প্রকাশিত হয়েছে। এদিকে গত রোববার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হলো ‘লোক কাব্যের সুরধারা’ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে মূলত একটি গান গাইবার কথা ছিলো মুক্তা সরকারের। তিনি উপস্থিত সকল দর্শকের জন্য প্রথম সাধক রশিকের ‘সুরের মায়ায় হৃদ মোহনায় জাগাইও ঊষার আলো’ গানটি পরিবেশন করার পর উচ্ছ্বসিত শ্রোতা দর্শক আরো একটি গান করার অনুরোধ করেন।

এরপর মুক্তা সাধক চাঁন মিয়া বয়াতীর ‘তুমি ডাক দিলে অবলার পানে চাইও’ গানটি পরিবেশন করেন। গানটি পরিবেশনের সময় সকল উপস্থিত শ্রোতা দর্শক ভীষণ মুগ্ধতা নিয়ে মুক্তার গান উপভোগ করেন। বাংলাদেশে মুক্তার অনেক প্রিয় শিল্পী রয়েছে। তবে মায়ের আদর স্নেহে তাকে যিনি আগলে রাখেন তিনি হলেন বাউল সম্রাজ্ঞী মমতাজ।
মমতাজ তাকে অনেক স্টেজ শো’তে সঙ্গে নিয়েছেন। মুক্তা সরকার বলেন, ‘আমি মহান আল্লাহর কাছে জীবনে যা চেয়েছি তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। আমি তাতেই সন্তুষ্ট। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে শ্রোতা দর্শকেরা আমার গান প্রবল আগ্রহ নিয়ে শোনেন, এটাইতো জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি। শ্রোতাদের ভালোবাসাকে সঙ্গী করেই আগামী দিনগুলোতে গান করে যেতে চাই। ’
Sarakhon Report 



















