১১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

অতি বৃষ্টিতে বন্যার কবলে পড়ছে দেশের আরও যে সব এলাকা

  • Sarakhon Report
  • ০১:৩৪:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
  • 17

সিলেটের একটি আশ্রয়কেন্দ্র (২১শে জুনের ছবি)

সৌমিত্র শুভ্র

সিলেট-সহ বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও দেশের সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, নয়টি নদীর ১৯টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বুধবার ১৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপরে ছিল সাতটি নদীর পানি।

সিলেট অঞ্চলে দুইদিন ধরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে এসেছে। যে কারণে প্লাবন আর বাড়েনি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আর আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সিলেটের দিকে কমলেও রংপুর-সহ উত্তরাঞ্চলে আগামী কয়েকদিন ভারি বৃ্ষ্টিপাত হতে পারে।

এতে দেশের উত্তরাঞ্চলে মধ্যমেয়াদী বন্যার কথা জানাচ্ছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।

(জুনের বন্যায় সিলেটের বন্যাদুর্গত মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়)

বন্যাদুর্গত নয়টি জেলা

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, এ মুহূর্তে মোট নয়টি জেলা বন্যাকবলিত।

সপ্তাহের শুরুতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, মৌলভীবাজার, শেরপুর – এই পাঁচটি জেলা বানের পানিতে প্লাবিত হয়।

তবে মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ আরো দুইটি জেলায় নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। বন্যায় আক্রান্ত হয় হবিগঞ্জ ও ফেনী।

এর মধ্যে শেরপুর, হবিগঞ্জ ও ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি জেলা।

এগুলো মূলত ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা অববাহিকার জনপদ। জেলাগুলো হল – কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুর।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বিবিসি বাংলাকে জানান, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর মোট আটটি স্থানে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

“নদী দুটির অববাহিকায় বন্যা দেখা দিয়েছে যা আরও সাত দিন স্থায়ী হতে পারে। অর্থাৎ, চলতি মাসের ১০ বা ১১ তারিখ পর্যন্ত এই পরিস্থিতি বিরাজ করার আশংকা রয়েছে”, বলেন মি. রায়হান।

মেয়াদ এর চেয়ে দীর্ঘ হবে না বলেই ধারণা দিলেন তিনি।

ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার উজানে আগামী ৭২ ঘন্টা ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়-সহ তিস্তার ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় (অববাহিকা) ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে। যা অস্থায়ীভাবে তৈরি হওয়া জলাবদ্ধতার মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে পারে।

           (বন্যায় ডুবে যাওয়া সড়কেই চলছে রিক্সা)

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

বৃষ্টিপাতের ওপরই নির্ভর করছে বন্যা পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে।

মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তার কারণেই এই বৃষ্টিপাত বলে জানালেন আবহাওয়াবিদ মি. মল্লিক।

অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ু ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

“উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এর বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে। এই মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে”, জানিয়েছে তারা।

এর ফলে বাংলাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতকে এই সময়টায় স্বাভাবিক হিসেবেই দেখেন আবহাওয়াবিদরা।

দেশের আটটি বিভাগেই আগামী ৭২ ঘণ্টায় হালকা মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেটে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হলেও দেশের মধ্যাঞ্চল বা দক্ষিণাঞ্চলে বন্যার শংকা নেই বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী।

ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের মেঘালয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। (ফাইল ছবি) 

জুলাই মাসে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। মাসটির গড় বৃষ্টিপাতের হার ৫২৩ মিলিমিটার।

কারণ এ সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের যোগান বৃদ্ধি পায়।

“পূর্বাভাসের তুলনায় বৃষ্টিপাত ১০ শতাংশ কম বা বেশি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু, ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট বেশি হওয়াটা অস্বাভাবিক”, বলছিলেন আবুল কালাম মল্লিক।

তিনি বলেন, “দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস এবং মনসুন ফোরামে আমরা আগেই জানিয়েছি, এবার বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হবে।”

দেশের উত্তরাঞ্চলে যে ভারি বর্ষণের কথা বলা হচ্ছে, তা আগামী সাত তারিখের পর থেকে একটু কমবে বলে জানালেন এই আবহাওয়াবিদ।

তবে চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

“যার কারণে পরের দিকে বৃষ্টিপাত আবার বাড়বে”, বলেন মি. মল্লিক।

বাংলাদেশের সিলেট ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা প্রায় প্রতিবছরই বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে (ফাইল ছবি)

সিলেটের পরিস্থিতি কী?

সিলেটে গত মে মাসের শেষের দিকে প্রথম বন্যার প্রকোপ দেখা দেয়। এ পর্যন্ত তিন দফায় প্লাবিত হয়েছে অঞ্চলটি।

ঈদের পর জুনের ২০ তারিখ পর্যন্ত পানি বাড়তে থাকে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বিবিসি বাংলাকে বলেন, প্রথম দফায় পানি দ্রুত নেমে গেলেও দ্বিতীয়বার পানি নামতে সময় নিয়েছে।

“২০ তারিখের পর বৃষ্টি ছিল না। কিন্তু পানি ওইভাবে গতিতে নামেনি। অল্প অল্প করে নেমেছে”, বলেন তিনি।

জুলাইয়ের প্রথম তিন দিন টানা বৃষ্টি হয় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে।

এতে ওই অঞ্চলের নদনদীর পানি এক থেকে দেড় ফিট বৃদ্ধি পেয়েছে, জানান মি. হাসান।

“গতকাল (বুধবার) থেকে বৃষ্টি নাই সিলেটে। আজকে পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছে না”, যোগ করেন তিনি।

এ কারণে পানির উচ্চতা আর বৃদ্ধি পায়নি। যদিও সুরমা-কুশিয়ারার পানি এখনও বিপদসীমার ওপরেই অবস্থান করছে।

আগামী এক দুই দিন সিলেট বিভাগের পরিস্থিতি এমন অপরিবর্তিত বা স্থিতিশীলই থাকবে বলে জানান বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান।

আরও বলেন, “তারপর থেকে উন্নতি হতে শুরু করবে।”

জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে নয় হাজারের কিছু বেশি।

তবে, জেলা প্রশাসকের দাবি, বন্যার প্রকোপ ভয়াবহ হয়ে ওঠেনি। “বন্যা সৃষ্টির কারণে যে কষ্ট, সেটা তৈরি হয়নি এখানে”, বলেন তিনি।

বিবিসি নিউজ বাংলা

অতি বৃষ্টিতে বন্যার কবলে পড়ছে দেশের আরও যে সব এলাকা

০১:৩৪:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

সৌমিত্র শুভ্র

সিলেট-সহ বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও দেশের সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, নয়টি নদীর ১৯টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বুধবার ১৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপরে ছিল সাতটি নদীর পানি।

সিলেট অঞ্চলে দুইদিন ধরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে এসেছে। যে কারণে প্লাবন আর বাড়েনি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আর আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সিলেটের দিকে কমলেও রংপুর-সহ উত্তরাঞ্চলে আগামী কয়েকদিন ভারি বৃ্ষ্টিপাত হতে পারে।

এতে দেশের উত্তরাঞ্চলে মধ্যমেয়াদী বন্যার কথা জানাচ্ছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।

(জুনের বন্যায় সিলেটের বন্যাদুর্গত মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়)

বন্যাদুর্গত নয়টি জেলা

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, এ মুহূর্তে মোট নয়টি জেলা বন্যাকবলিত।

সপ্তাহের শুরুতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, মৌলভীবাজার, শেরপুর – এই পাঁচটি জেলা বানের পানিতে প্লাবিত হয়।

তবে মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ আরো দুইটি জেলায় নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। বন্যায় আক্রান্ত হয় হবিগঞ্জ ও ফেনী।

এর মধ্যে শেরপুর, হবিগঞ্জ ও ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি জেলা।

এগুলো মূলত ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা অববাহিকার জনপদ। জেলাগুলো হল – কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুর।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বিবিসি বাংলাকে জানান, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর মোট আটটি স্থানে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

“নদী দুটির অববাহিকায় বন্যা দেখা দিয়েছে যা আরও সাত দিন স্থায়ী হতে পারে। অর্থাৎ, চলতি মাসের ১০ বা ১১ তারিখ পর্যন্ত এই পরিস্থিতি বিরাজ করার আশংকা রয়েছে”, বলেন মি. রায়হান।

মেয়াদ এর চেয়ে দীর্ঘ হবে না বলেই ধারণা দিলেন তিনি।

ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার উজানে আগামী ৭২ ঘন্টা ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়-সহ তিস্তার ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় (অববাহিকা) ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে। যা অস্থায়ীভাবে তৈরি হওয়া জলাবদ্ধতার মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে পারে।

           (বন্যায় ডুবে যাওয়া সড়কেই চলছে রিক্সা)

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

বৃষ্টিপাতের ওপরই নির্ভর করছে বন্যা পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে।

মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তার কারণেই এই বৃষ্টিপাত বলে জানালেন আবহাওয়াবিদ মি. মল্লিক।

অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ু ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

“উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এর বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে। এই মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে”, জানিয়েছে তারা।

এর ফলে বাংলাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতকে এই সময়টায় স্বাভাবিক হিসেবেই দেখেন আবহাওয়াবিদরা।

দেশের আটটি বিভাগেই আগামী ৭২ ঘণ্টায় হালকা মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেটে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হলেও দেশের মধ্যাঞ্চল বা দক্ষিণাঞ্চলে বন্যার শংকা নেই বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী।

ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের মেঘালয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। (ফাইল ছবি) 

জুলাই মাসে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। মাসটির গড় বৃষ্টিপাতের হার ৫২৩ মিলিমিটার।

কারণ এ সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের যোগান বৃদ্ধি পায়।

“পূর্বাভাসের তুলনায় বৃষ্টিপাত ১০ শতাংশ কম বা বেশি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু, ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট বেশি হওয়াটা অস্বাভাবিক”, বলছিলেন আবুল কালাম মল্লিক।

তিনি বলেন, “দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস এবং মনসুন ফোরামে আমরা আগেই জানিয়েছি, এবার বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হবে।”

দেশের উত্তরাঞ্চলে যে ভারি বর্ষণের কথা বলা হচ্ছে, তা আগামী সাত তারিখের পর থেকে একটু কমবে বলে জানালেন এই আবহাওয়াবিদ।

তবে চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

“যার কারণে পরের দিকে বৃষ্টিপাত আবার বাড়বে”, বলেন মি. মল্লিক।

বাংলাদেশের সিলেট ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা প্রায় প্রতিবছরই বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে (ফাইল ছবি)

সিলেটের পরিস্থিতি কী?

সিলেটে গত মে মাসের শেষের দিকে প্রথম বন্যার প্রকোপ দেখা দেয়। এ পর্যন্ত তিন দফায় প্লাবিত হয়েছে অঞ্চলটি।

ঈদের পর জুনের ২০ তারিখ পর্যন্ত পানি বাড়তে থাকে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বিবিসি বাংলাকে বলেন, প্রথম দফায় পানি দ্রুত নেমে গেলেও দ্বিতীয়বার পানি নামতে সময় নিয়েছে।

“২০ তারিখের পর বৃষ্টি ছিল না। কিন্তু পানি ওইভাবে গতিতে নামেনি। অল্প অল্প করে নেমেছে”, বলেন তিনি।

জুলাইয়ের প্রথম তিন দিন টানা বৃষ্টি হয় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে।

এতে ওই অঞ্চলের নদনদীর পানি এক থেকে দেড় ফিট বৃদ্ধি পেয়েছে, জানান মি. হাসান।

“গতকাল (বুধবার) থেকে বৃষ্টি নাই সিলেটে। আজকে পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছে না”, যোগ করেন তিনি।

এ কারণে পানির উচ্চতা আর বৃদ্ধি পায়নি। যদিও সুরমা-কুশিয়ারার পানি এখনও বিপদসীমার ওপরেই অবস্থান করছে।

আগামী এক দুই দিন সিলেট বিভাগের পরিস্থিতি এমন অপরিবর্তিত বা স্থিতিশীলই থাকবে বলে জানান বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান।

আরও বলেন, “তারপর থেকে উন্নতি হতে শুরু করবে।”

জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে নয় হাজারের কিছু বেশি।

তবে, জেলা প্রশাসকের দাবি, বন্যার প্রকোপ ভয়াবহ হয়ে ওঠেনি। “বন্যা সৃষ্টির কারণে যে কষ্ট, সেটা তৈরি হয়নি এখানে”, বলেন তিনি।

বিবিসি নিউজ বাংলা