০৭:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৮২)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
  • 17

শ্রী নিখিলনাথ রায়

উচ্চ আশা ব্যতীত জগতে কেহ কখনও কোন মহৎ কার্য্য করিতে পারেন নাই। যদি সেই উচ্চ আশা থাকায় নন্দকুমার চরিত্রহীন হইয়া থাকেন, তজ্জন্য তিনি জগতের চক্ষে একেবারে হেয় হইবেন না বলিয়াই আমাদের বিশ্বাস। প্রতারণা, প্রবঞ্চনা প্রভৃতি যে সমস্ত দোষে তাঁহার চরিত্রকে কালিমা-মণ্ডিত করা হইয়াছে, আমরা তাহাতে বিশ্বাসস্থাপন করিতে পারি না।

তবে তদানীন্তন সুচতুর ইংরেজের কূটনীতির সহিত তাঁহার প্রতিভা ও বুদ্ধির সংঘর্ষণ ঘটায়, কখন কখন তাঁহাকে যে কূটবুদ্ধির পরিচয় দিতে হইয়াছে, ইহা একেবারে অস্বীকার করিতে পারা যায় না। “শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ” এই নীতিবলে তাঁহার যতদূর কৌশল ও চতুরতা প্রকাশ করার প্রয়োজন ইয়াছিল, সময়ে সময়ে তিনি ততদূরই প্রকাশ করিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয়। তাৎকালিক বাঙ্গালীগণের মধ্যে তাঁহার ভরি স্বদেশ, স্বজাতি ও স্বধর্ম্মভক্ত লোক আর কাহাকেও দেখিতে পাওয়া যাইত না।

তাঁহার সহস্রদোষ থাকিলেও উল্লিখিত গুণ-নিকরে তিনি যে বাঙ্গালীর’ চিবু পূজ্য থাকিবেন, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। ইংরেজ লেখকগণের অথবা বর্তমান সময়ে কোন কোন বাঙ্গালী ইংরেজী লেখকের সইক্র গালিবর্ষণেও মহারাজ নন্দকুমারের গৌরবের লাঘব হইবে না। কেহ কেহ তাঁহাকে সমগ্র বাঙ্গালীজাতির ঘৃণ্য বলিয়া নির্দেশ করিতে কুণ্ঠিত হন নাই। ‘তাঁহাদের কথা সম্পূর্ণ সত্য বলিয়া বিশ্বাস হয় না।

যাহারা স্বার্থপরতার বশবর্তী হইয়া কোম্পানীর কর্মচারিগণের পাইকা- বহনে আপনাদিগকে কৃতাৰ্থৰ্ম্মন্য মনে করিয়াছিল, তাহারাই মহারাজ। নন্দকুমারের চরিত্রে কলঙ্কবিন্যাসের চেষ্টা পাইয়াছে। তাঁহার পরম শত্রু ইংরেজগণের লেখনীভঙ্গিতে তাহা সাধারণের চক্ষে ভয়াবহ বলিয়াই সহসা বোধ হইয়া থাকে’। কিন্তু তাঁহার জীবনের ঘটনাবলীর আলোচনা করিলে, সে ভ্রম অনায়াসে দূরীভূত হয়।

১৪ জুলাই অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৮২)

১১:০০:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

উচ্চ আশা ব্যতীত জগতে কেহ কখনও কোন মহৎ কার্য্য করিতে পারেন নাই। যদি সেই উচ্চ আশা থাকায় নন্দকুমার চরিত্রহীন হইয়া থাকেন, তজ্জন্য তিনি জগতের চক্ষে একেবারে হেয় হইবেন না বলিয়াই আমাদের বিশ্বাস। প্রতারণা, প্রবঞ্চনা প্রভৃতি যে সমস্ত দোষে তাঁহার চরিত্রকে কালিমা-মণ্ডিত করা হইয়াছে, আমরা তাহাতে বিশ্বাসস্থাপন করিতে পারি না।

তবে তদানীন্তন সুচতুর ইংরেজের কূটনীতির সহিত তাঁহার প্রতিভা ও বুদ্ধির সংঘর্ষণ ঘটায়, কখন কখন তাঁহাকে যে কূটবুদ্ধির পরিচয় দিতে হইয়াছে, ইহা একেবারে অস্বীকার করিতে পারা যায় না। “শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ” এই নীতিবলে তাঁহার যতদূর কৌশল ও চতুরতা প্রকাশ করার প্রয়োজন ইয়াছিল, সময়ে সময়ে তিনি ততদূরই প্রকাশ করিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয়। তাৎকালিক বাঙ্গালীগণের মধ্যে তাঁহার ভরি স্বদেশ, স্বজাতি ও স্বধর্ম্মভক্ত লোক আর কাহাকেও দেখিতে পাওয়া যাইত না।

তাঁহার সহস্রদোষ থাকিলেও উল্লিখিত গুণ-নিকরে তিনি যে বাঙ্গালীর’ চিবু পূজ্য থাকিবেন, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। ইংরেজ লেখকগণের অথবা বর্তমান সময়ে কোন কোন বাঙ্গালী ইংরেজী লেখকের সইক্র গালিবর্ষণেও মহারাজ নন্দকুমারের গৌরবের লাঘব হইবে না। কেহ কেহ তাঁহাকে সমগ্র বাঙ্গালীজাতির ঘৃণ্য বলিয়া নির্দেশ করিতে কুণ্ঠিত হন নাই। ‘তাঁহাদের কথা সম্পূর্ণ সত্য বলিয়া বিশ্বাস হয় না।

যাহারা স্বার্থপরতার বশবর্তী হইয়া কোম্পানীর কর্মচারিগণের পাইকা- বহনে আপনাদিগকে কৃতাৰ্থৰ্ম্মন্য মনে করিয়াছিল, তাহারাই মহারাজ। নন্দকুমারের চরিত্রে কলঙ্কবিন্যাসের চেষ্টা পাইয়াছে। তাঁহার পরম শত্রু ইংরেজগণের লেখনীভঙ্গিতে তাহা সাধারণের চক্ষে ভয়াবহ বলিয়াই সহসা বোধ হইয়া থাকে’। কিন্তু তাঁহার জীবনের ঘটনাবলীর আলোচনা করিলে, সে ভ্রম অনায়াসে দূরীভূত হয়।