ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
মায়াদের মধ্যে কিছু মানুষ এখনো বিশ্বাস করেন যে তাঁদের বহু আগের পূর্বপুরুষরা আজ থেকে প্রায় কুড়ি হাজার বছর আগে বেরিং প্রণালী অতিক্রম করে এসেছিল। এরা ছিল প্রধানত যাযাবর শ্রেণির এবং শিকারী।মেক্সিকোতে মায়াদের জনবসতি গড়ার চিহ্ন এখনো বোঝা যায়। এই সময়টা আনুমানিক ৫০০০-১৫০০ খ্রিস্টপূর্ব। এই সময়ের প্রধান জীবিকা ছিল মৃৎপাত্র তৈরি, শস্যর চাষ এবং পাথরের নানা ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি।
তবে এসব আদি প্রাক্- মায়া জনসমাজের কথা বাদ দিয়ে মূল এবং প্রমাণিত প্রাক্-ক্লাসিক মায়া-সভ্যতার সূচনা হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ শতকে।এই সময়েই মনে করা হয় ওলমেকরা উপসাগরীয় তীরে বাসা বেঁধেছিল। ঐ সময়কার ওলমেক জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না।অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় মায়ারা মেসোআমেরিকান সংস্কৃতির অনেক কিছু আয়ত্ত করেছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরো উন্নত রূপ দিয়েছিল। বিশেষ করে বর্ষপঞ্জী তৈরি করা এবং প্রস্তরলিপি লিখন পদ্ধতিতে বিশেষ পারদর্শিতা দেখিয়েছিল।

তবে মায়াদের প্রাক্-পুরুষ ওলমেক ছিল কিনা এ সম্পর্কে নৃতত্ত্ববিদ এবং পুরাতত্ত্ববিদগণ কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেননি। তবে একথা মোটামুটিভাবে বলা যায় মায়ারা ক্যালেন্ডার এবং প্রস্তর লিপির মধ্যে ওলমেকদের প্রভাব আছে। তবে মায়াদের প্রথম অনুপ্রবেশ সম্পর্কে বলা হয় মায়ারা প্রথমে পশ্চিমদিক থেকে ইউকাতান অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল।
এছাড়া সূর্যদেবতা ইতজামনা (Itzamna) বীরের মত পূর্বদিক থেকে সমুদ্রের থেকে প্রবেশ করেছিলেন। দ্বিতীয় পরিয়ান ঘটেছিল যাকে কার্যত ঐতিহাসিক বলা যায়। এক্ষেত্রে বীর প্রবেশকারী হলেন কুকুক্লান (Kukuclan)। পুরোহিত এবং শিক্ষক ছিলেন এই মায়া জনজাতির বীরপুরুষ। কুকুক্লানকে মায়া-সভ্যতার প্রতিষ্ঠাতাও বলা হয়ে থাকে। ২য় খ্রিস্টশতকে তার রাজত্ব শুরু হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়।
(চলবে)
মায়া সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-২৭)
Sarakhon Report 



















