শ্রী নিখিলনাথ রায়
সিরাজের মঙ্গল করিতে গিয়া নন্দকুমার তাঁহার ক্রোধের পাত্র হইলেও, সিরাজ চিরদিনের জন্য তাঁহার উপর অসন্তুষ্ট হন নাই। উক্ত ঘটনার কিছুদিন পরে নন্দকুমার আবার সিরাজের আদেশে কার্যলাভের জন্য হুগলীর ফৌজদার হেদায়ৎ আলি খাঁর নিকট প্রেরিত হন। হেদারৎ আলি খাঁ শুনিয়াছিলেন যে, নন্দকুমার হুগলীর দেওয়ানীর জন্য আবেদন করিয়াছেন; নন্দকুমারকে তাঁহার উক্ত পদ দিবার ইচ্ছা না থাকায়, তিনি নানারূপ ছলে ও কৌশলে তাঁহার প্রতি অত্যাচার আরম্ভ করিলেন এবং তাঁহাকে অবমানিত করিতে লাগিলেন।
এই সময়ে নন্দ কুমার হেদায়ৎআলির হস্ত হইতে নিষ্কৃতি পাইবার জন্য, স্বীয় ভ্রাতা রাধা- কৃষ্ণকে এক পত্র লিখিয়াছিলেন। তাহাতে এইরূপ লিখিত হয় যে, সূর্য্য- কুমার মজুমদারের নিকট হইতে হেদায়ৎ আলির নামে এরূপ ভাবে এক- খানি পত্র লইতে হইবে, যেন সে আর নন্দকুমারকে কণ্ঠ প্রদান না করে। নন্দকুমার ব্যতিব্যস্ত হইয়া এই পত্র লিখিয়াছিলেন। সেই পত্র অদ্যাপি তাঁহার দৌহিত্রবংশীয় কুঞ্জঘাটার কুমারের নিকট বিদ্যমান আছে।
উক্ত পত্রে স্থান বা তারিখের কোন উল্লেখ নাই। নন্দকুমার হেদায়ৎ আলির অত্যাচার ও অবমাননা অসহ্য বোধ করিয়া পুনর্ব্বার মুর্শিদাবাদে গহন করেন। মুর্শিদাবাদে আসিয়া তাঁহার দুরবস্থার একশেষ হয়। ইহার পর মুহম্মদ ইয়ারবেগ খাঁ পুনর্ব্বার ফৌজদার পদে নিযুক্ত হন।
-এই সময়ে নন্দকুমার ইয়ারবেগের বন্ধু সাদেক উল্লার নিকট প্রায়ই যাতায়াত করিতেন। সাদেক উল্লা নন্দকুমারের প্রতি অত্যন্ত সন্তুষ্ট ছিলেন। তিনি তাঁহার বুদ্ধিমত্তা, কাৰ্য্যকলাপ প্রভৃতি বিশেষরূপে জানিতেন। নন্দ- কুমারে সহিত ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি হওয়ায়, সাদেক উল্লা পুনর্ব্বার ইয়ারবেগের সহিত তাঁহার পরিচয় করিয়া দেন। নন্দকুমার তৎকালে হুগলীর দেওয়ানী- পদের প্রার্থী ছিলেন; কিন্তু লহরীমাল নামে এক ব্যক্তির প্রতি ইয়ার- বেগের অত্যন্ত বিশ্বাস থাকায়, তিনি লহরীমালকে দেওয়ানী প্রদান করেন; অগত্য। নন্দকুমারকে হুগলী পরিত্যাগ করিয়া মুর্শিদাবাদে আসিতে হয়।
Sarakhon Report 



















