ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ বায়েজিদ সরোয়ার, এনডিসি, (অবঃ)
এখন নবীন-হেমন্তের বিকেল। বালু নদীর (রূপগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ) পূর্ব তীর দিয়ে হাঁটছি। ‘জলসিড়ি আবাসন’ প্রকল্প এলাকা। কাছেই গতকাল (১৮ অক্টোবর ২০২৪) উদ্ধোধন হওয়া ‘জলসিড়ি গলফ ক্লাব’ হাউজ। এই গলফ ক্লাব হাউজ থেকে দক্ষিণ দিকে একটা পায়ে হাঁটা সুন্দর রাস্তা চলে গেছে সোঁজা দক্ষিণে। সেই পথ ধরেই দু’জনের পদযাত্রা। পূর্বে নতুন গড়ে ওঠা গলফ কোর্স। পশ্চিমে বালু নদী।

গলফের ‘গ্রীনে’ নেমেছে সবুজের বসন্ত
গলফ কোর্সের ঢেউ খেলানো অপরূপ সবুজ প্রান্তর। গলফের ‘গ্রীনে’ যেন সবুজের বসন্ত নেমেছে। কোথাও এক চিলতে লেক। ফুল ফুটেছে। মায়াবী পাখিদের ওড়াউড়ি। ভবিষ্যতে এই গলফ কোর্স থেকেই হয়তো সিদ্দিকুর রহমানের মতো অনেক গলফার আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের মুখ উজ্জল করবে। পূর্ব দিকে জলসিড়ি আবাসন প্রকল্পের ১৭ নং সেক্টরের বাড়িগুলো উঠছে। বিকেলের হলুদ আলোয় উদ্ভাসিত অপরূপ মসজিদ। দক্ষিণে নদীর উপর নতুন সুন্দর ব্রীজটি দেখা যায়। এই দৃশ্যাবলী লুসার্ন শহরের (সুইজারল্যান্ড) লেকের পাড়ে আমাদের যুগল-ভ্রমনের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।
পৃথিবীর শোভা দেখা এবং অরকার অবদান
এই অপরূপ পরিবেশেও একটি ভাবনা মনকে বিষন্ন করে তোলে। কবি ও ভ্রমন- লেখক কামরুল হাসানের একটি কাব্য গ্রন্থের নাম ‘বৃক্ষদের শোভা দেখে যাবো’। কামরুল হাসান স্যার আমার ‘এমবিএ’ এর শিক্ষক ছিলেন। জুলাই-আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকালে পুলিশের গুলিতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। চির জীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছে অনেক তরুন। এই সময় কমপক্ষে ৪০০ তরুন-যুবকের চোখ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। অনেকেই অন্ধ হয়ে গেছেন। বেঁচে থেকেও পৃথিবী, বৃক্ষদের শোভা এই হতভাগ্যদের অনেকে দেখতে পারছেন না। তাদের কষ্ট একবার কল্পনা করুন…।
এই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনঃর্বাসনের জন্য সরকারকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে। ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেটস এ্যাসোসিয়েশন (অরকা) ইতোমধ্যে ৩১ জন তরুনের চোখের চিকিৎসার জন্য সাহায্য করেছেন। আশা করি, অরকার মতো অন্য সামাজিক সংগঠনগুলোও এভাবে এগিয়ে আসবে। উল্লেখ্য, অরকা গত আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলায় বন্যা দূর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ বিতরণ ও মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করেছে। অরকা দু’টি অনাথ আশ্রমও (অরকা হোমস) পরিচালনা করছে।

ব্যক্তিগত ভ্রমনেও অন্য ভাবনা
একান্ত ব্যক্তিগত ভ্রমন। তবুও কিছু অন্য ভাবনা ঘিরে রয়…। জাতীয় জীবনে, আমরা অস্থির এক সময় পার করছি। আমাদের চোখে নুতন দিনের কতো স্বপ্ন। তবে পদে পদে বাধা পেরিয়ে সরকারকে এগুতে হচ্ছে। দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছেই। বাজারে সবজিসহ অনেক পণ্যের অগ্নিমূল্য। কোথাও কোথাও অরাজকতার চিহ্ন। বিভিন্ন দাবী দাওয়ার সমাধান এখনই চাই! ছাত্র ও রাজনৈতিক দলের ঐক্যে বিভক্তির কথাও শোনা যায়। তবুও মানুষের চোখে কত স্বপ্ন। এই সরকারের ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। আইন শৃংখলা পরিস্থিতি, খাদ্য নিরাপত্তা ও জ্বালানী নিরাপত্তা-এই ৩টি বিষয়কে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রশাসনকে গতিশীল করতে হবে। জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। কেউ যেন আগের মতো অন্যায়, অবিচারের শিকার না হয়। কোন কিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত না। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো-নিজেকে পরিবর্তন করা। তাহলেই সমাজ, রাষ্ট্র পরিবর্তিত হবে।
জীবনানন্দের জলসিড়ি- আমাদের জলসিড়ি
প্রায় ৪৪ কিঃ মিঃ দীর্ঘ ছোট্ট বালু নদীটিকে আমরা একান্তে (প্যারিসের) ‘সেইন’ নদী বলে ডাকি। নদীতে বালুভর্তি একটি যান্ত্রিক নৌকা চোখে পড়ে। এক ঝাক সাদা বক উড়ে গেল দিগন্তের দিকে। ‘একদিন জলসিড়ি’ ও ‘আমি যদি হতাম’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাস ‘জলসিড়ি’ নদীর কথা বলেছেন। সেনাবাহিনীর এই হাউজিং প্রকল্পে যুক্ত যে মননশীল সেনা কর্মকর্তা ‘জলসিড়ি’ নামটি প্রস্তাব করেছিলেন, তিনি হয়তো জীবনানন্দ দাসের কবিতার অত্যন্ত অনুরাগী ছিলেন।

গড়ে উঠছে স্বপ্নের উপশহর
রাজধানীর উপর চাপ কমাতে সরকার বালু নদীর ওপারে ‘পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প’ (১৯৯৫) গড়ে তুলছে। পূর্বাচল হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিকল্পিত উপশহর। পূর্বাচল প্রকল্প, দক্ষিণ দিকে কুড়িল-পূর্বাচল এক্সপ্রেস ওয়ের (৩০০ ফুট রাস্তা) কিছু দক্ষিণ পর্যন্ত বিস্তৃত। এরপরই রূপগঞ্জ এলাকায় গড়ে উঠছে আর একটি সুপরিকল্পিত হাউজিং প্রকল্প ‘জলসিড়ি আবাসন’। জলসিড়ির পশ্চিমে বালু নদী। পূর্বে এটি প্রায় শীতলক্ষ্যা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত।
আমাদের চোখের সামনেই ‘জলসিড়ি আবাসন’ প্রকল্পটি গড়ে উঠলো। এর পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালের শেষের দিকে। সেনাবাহিনী পরিচালিত এই ‘জলসিড়ি আবাসন’ প্রকল্পে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাগণ অন্তর্ভুক্ত। এই আধুনিক টাউনশিপ প্রজেক্ট এর উদ্বোধন করা হয় ২০১৫ সালে।
জলসিড়ির অগ্রগতি চোঁখে পড়ার মতো। কয়েকটি সেক্টরে নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে। নজর কেড়েছে জলসিড়ি সেন্ট্রাল পার্ক। অল্প দিনেই এটি ঢাকার শিশুদের খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে। ৩টি স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছে পুরোদমে। স্কুলের চারদিকে যতদূর দেখা যায় খোলা মাঠ। ছাত্রদের কি আনন্দ!

একদিন এখানে শিশুরা খেলবে…
এই ‘স্মার্ট সিটির’ মাত্র ৩২% অংশে থাকবে ঘরবাড়ি। অবশিষ্ট ৬৮% অংশ জুড়ে থাকবে বাণিজ্যিক এলাকা, নদীর মতো লেক, পার্ক, খেলার মাঠ আর সবুজ বেষ্টনি। একদিন এখানে শিশুরা আনন্দে খেলবে। এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তরুন তরুনীরা নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখবে। নতুন দম্পত্তিরা স্বপ্নের ঘর বাঁধবে…।
ইমারতগুলো ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। এটি শুধু কয়েক হাজার সামরিক কর্মকর্তার স্বপ্ন নয়। এই উপশহর/টাউনশীপ যখন গড়ে উঠবে, তখন এখানে কয়েক লক্ষ অসামরিক ব্যক্তিও বসবাস করবেন। যেমনটা বসবাস করে থাকেন বর্তমান ডিওএইচএসগুলোতে। তাই এই জলসিড়ি এখন লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্নের বসতি।
একদিন বালু নদী হবে প্যারিসের ‘সেইন’ নদীর মতো প্রাণবন্ত
আশা করি, বালু নদী ভবিষ্যত প্রাণ ফিরে পাবে। ক্ষীণ-কটি বালু নদী হয়তো এক সময় হয়ে উঠবে প্যারিসের ‘সেইন’ নদীর মতোই প্রাণবন্ত। তবুও কিছু দুঃচিন্তা…। জলসিড়িও কি একটি কংক্রিট জঙ্গল হবে? বালু নদী কি মরে যাবে? পূর্বাচল, জলসিড়িতে পরিকল্পনা মতো পরিবেশ রক্ষিত হবে তো? এই অঞ্চলে পানির প্রবাহ অব্যাহত থাকবে তো? আশা করি রাজউক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন।
বালু নদী নিয়ে এখন বেশ আলোচনা হচ্ছে। আশাবাদ ও শঙ্কা। নদীটি ব্যাপক দুষণের শিকার হয়েছে। ‘মিথেনের উপর ভাসছে বালু নদী’-এমন একটি প্রতিবেদন টিভিতে দেখেছিলাম। বালু নদী কি বুড়িগঙ্গায় পরিনত হবে? দূধর্ষ বঙ্গ সন্তানদের নদী- দখলের জঘন্য অভিযান তো আছেই!
বালু নদীতে শরৎ-হেমন্ত মৌসুমে নৌ ভ্রমন করা যায়। বিশেষত বেরাইদ ঘাঁট থেকে নীলা মার্কেট এলাকা পর্যন্ত নৌ-ভ্রমন বেশ উপভোগ্য। নগর, নদী, নিসর্গের সম্মিলন। ভবিষ্যতে বালু নদীর দুইপাড় ঘিরেই নতুন ঢাকার জন্ম হতে চলেছে। পূর্বাচল নিউ টাউন, বসুন্ধরা, জলসিড়িসহ আরো অনেক নতুন আবাসন প্রকল্প। বুড়িগঙ্গা থেকে এখন বালু নদী…।

নদীপাড়ে-পানি যুদ্ধের ভাবনা!
নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভারতের কাছ থেকে একধরণের ‘পানি-আগ্রাসন’ এর সম্মুখিন হয়েছে। যা বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে করে তুলছে বিপন্ন। ২১ শতকের এ পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে পানি নিয়ে প্রাণ-ঘাতী যুদ্ধের দিকে। ২০১৮ সালে জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের তথ্যানুসারে, পানির বিভিন্ন উৎস নিয়ে সংঘাত দেখা দিতে পারে-এ ধরনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্পট হচ্ছেঃ নীল, গঙ্গা, ব্রহ্মপত্র, সিন্ধু, টাইগ্রিস-ইউফ্রেটিস এবং কলোরাডো নদী। এর মানে পরিস্কার। পানি নিয়ে যুদ্ধের প্রধান সেসব অববাহিকা, তার দুই নদীর সাথে যুক্ত বাংলাদেশ। সেগুলো গঙ্গা ও ব্রহ্মপত্র। এই দুই নদীর পানি আটকাচ্ছে ভারত আপন প্রয়োজনে। ভবিষ্যতে পানি নিয়ে বাংলাদেশের জীবন-মরণ সংকট হতে যাচ্ছে।
ফারাক্কার ভয়াবহতাসহ পানির এই সংকট নিয়ে সমাধানে আমরা কতটা সক্রিয় সেই প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন জীবন-মরণ সমস্যা নিয়েও জাতীয় পর্যায়ে তেমন আলোচনা নেই। এ প্রসঙ্গে ২০০০ সালে দূরদর্শী লেখক আহমেদ ছফা লিখেছেন “পশ্চিম বাংলায় এ পর্যন্ত ফারাক্কার অভিশাপকে উপজীব্য করে কম হলেও ছয়টি উপন্যাস রচিত হয়েছে”…অথচ চোখের সামনে নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটছে, আমাদের লেখক, কবি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও আইনজীবিদের মধ্যে তাঁর সাড়া নেই কেন? (ফারাক্কা ষড়যন্ত্রের নানা দিক)। দুঃখজনকভাবে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল পানির ইস্যুকে ভোটের রাজনীতিতে বন্দী করেছে।
পানির হিস্যা আদায়ে আমাদের যা করতে হবে
ভারত থেকে আমাদের পানির হিস্যা আদায় করতেই হবে। এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক ইচ্ছা, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, বিশেষজ্ঞ জ্ঞান, কারিগরি দক্ষতা, নিগোসিয়েশনে দক্ষতা, আইনি দক্ষতা ও জনগণের ঐক্য। অর্থনৈতিক কুটনীতি, সামরিক কূটনীতির সঙ্গে সঙ্গে ‘পানি-কূটনীতি’ ও ‘পরিবেশ-কূটনীতিতে’ গুরুত্ব দিতে হবে। তরুন নদী ও পানি বিশেষজ্ঞ-গবেষকদের কাছে, প্রয়াত বিএম আব্বাস এটি এর মতো পানি ও নদী বিশেষজ্ঞ হতে পারেন মহৎ অনুপ্রেরণা।
ভারতের বাঁধ, ব্যারেজ, ড্যাম নির্মাণ, আন্তঃসংযোগ নদী প্রকল্প যে আমাদের জীবন-মরণ সমস্যা এটা ভারতীয় সরকার ও জনগণকে আমাদের বোঝাতে-জানাতে হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে তুলে ধরতে হবে ও প্রতিবাদ করতে হবে। ভারতের সঙ্গে শুধু সরকারী পর্যায় নয়, ভারতীয় জনগণের সঙ্গেও (পিপল টু পিপল) আলোচনা-সংলাপ প্রয়োজন। এই কাজটা আমরা মোটেই ভালোভাবে করিনি।

নদী দখলদারদের দূর্গে কামান দাগার সময়!
বাংলাদেশে কারা নদী ধ্বংস করছে, নদী গ্রাস ও নদী দখল করছে-এটা সবাই জানে। প্রকাশ্যে চলছে এই ধ্বংসযজ্ঞ। দুষণ, দখল ও আগ্রাসন থেকে নদীকে বাঁচাতে হবে। নদী দূষণ ও দখলকারীরা আসলে দুর্নীতিবাজদের মতোই জন-শত্রু। অনেকে মনে করেন, এই জন-শত্রুদের দূর্গ-গদিতে এখন কামান দাগার মোক্ষম সময়!
দেশে ‘বালু’ দিয়ে পুকুর নদী খাল জলাশয় ভরাট করার মহোৎসব চলছে। জলাধারা ভরাট করার সহজলভ্য এই পদ্ধতি আমাদের বড় ধরণের বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটি আইন করে বন্ধ করতে হবে। কিছুদিন আগে এ বিষয়ে লিখেছেন, তরুন সাংবাদিক, লেখক ও নদী এক্টিভিস্ট আমীন আল রশীদ।
তবুও নদী নিয়ে আশা
বালুনদীসহ বিভিন্ন নদীর দূর্দশা দেখেও, একটা বিষয়ে অগ্রগতি আশা জাগানিয়া। বিলম্বে হলেও, তরুনদের মধ্যে বড় একটা নদী-উৎসাহী দল (নদী বিশেষজ্ঞ-লেখক- গবেষক-সাংবাদিক প্রকৌশলী-পরিবেশ বিজ্ঞানী-আইনজীবি-একটিভিস্ট) গড়ে উঠেছে। এরা একটি চমৎকার প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করছেন। নদী কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ডঃ মনজুর আহমদ চৌধুরীর সাহসী ভূমিকা ছিল অনুপ্রেরণাময়।

একজন জিএ মাদানী
ফিরছি। ১৭ নং সেক্টর হয়ে, জলসিড়ি পার্ক। এরপর বালু নদীর উপর নির্মিত নতুন ব্রীজ পেরিয়ে ‘মাদানী এভিনিউ’ হয়ে (সাতারকুল-নতুন বাজার) বারিধারার দিকে যাই। সুদক্ষ সিভিল সারর্ভেন্ট জিএ মাদানী (আইসিএস, ১৯৩৬) ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাষ্ট (বর্তমানে রাজউক) এর প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। এই দূরদর্শী ডিআইটি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আধুনিক ঢাকার প্রথম মাস্টার প্লান (১৯৫৯-১৯৬০) তৈরী করা হয়। জি এ মাদানি উত্তর ভারতের মিরাটে অভিজাত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরে ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন।
হেমন্ত রোদের মতো হাসবে বাংলাদেশ
এভাবে শেষ হলো বালু নদী কেন্দ্রিক একটি হেমন্ত-সন্ধ্যা। বালু নদী তীরে পূর্বাচল- জলসিড়িসহ অন্যান্য আবাসন প্রকল্পগুলো সুন্দরভাবে গড়ে উঠুক। আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের বাসস্থানের ব্যবস্থা আমরা করতে পারবো। হেমন্ত প্রকৃতির মতো শান্ত হোক আমাদের জীবন। হেমন্ত রোদের মতো হেসে উঠুক আমাদের ঐক্যবদ্ধ ও ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, গবেষক