স্যান্ড্রা ই. মার্টিন
অক্টোবরে পোল্যান্ডের একটি রেডিও স্টেশন তাদের সাংবাদিকদের ছাঁটাই করে তাদের স্থানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি উপস্থাপকদের নিয়োগ দেয়ার পর এটি একটি বড় আলোচনা তৈরি করে। রেডিও ক্রাকো নামের এই স্টেশন তাদের পদক্ষেপটিকে “একটি পরীক্ষা” হিসেবে অভিহিত করে।
এই পরীক্ষাটি প্রাথমিকভাবে শ্রোতাদের সংখ্যা বাড়াতে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুযোগ ও হুমকিগুলো অন্বেষণ করতে শুরু করা হয়েছিল। শুরুতে শ্রোতাদের সংখ্যা শূন্য থেকে বেড়ে ৮,০০০-এ পৌঁছে গেলেও শীঘ্রই শ্রোতারা এআই-এর প্রস্তাবিত অনুষ্ঠানগুলো অপছন্দ করতে শুরু করে।
একটি সময় এআই উপস্থাপক এমিলিয়া নোভাক একটি মৃত নোবেল বিজয়ী কবির সাক্ষাৎকার নেয়। কিন্তু, এটি শ্রোতাদের মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। প্রায় ২৪,০০০ জন অনলাইনে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেন, যা স্টেশনটিকে মানব উপস্থাপকদের ফিরিয়ে আনতে বাধ্য করে।
কিন্তু এই ঘটনা সাংবাদিকতায় এআই-এর শেষ পরীক্ষা নয়। অনেক সংবাদমাধ্যম এআই ব্যবহার করছে প্রতিবেদক, সম্পাদক, বা আলোকচিত্রীদের বদলে নয়, বরং তাদের কাজকে আরও কার্যকর করতে।
উদাহরণস্বরূপ, একটি এআই টুল সাংবাদিকদের ডেটা বিশ্লেষণ করতে সহায়তা করে, যা ম্যানুয়াল পদ্ধতির তুলনায় অনেক দ্রুত। এআই টুল স্বয়ংক্রিয়ভাবে খেলাধুলার ফলাফল এবং কোম্পানির আয়সংক্রান্ত তথ্য তৈরি করতে পারে।
দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল তার স্টক পৃষ্ঠাগুলিতে কিছু এআই-উৎপন্ন নিবন্ধ প্রকাশ করে যা কোম্পানিগুলোর সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে।
তবে প্রশ্ন থেকে যায়: পাঠক কিভাবে বুঝবে এআই ব্যবহারটি নৈতিকভাবে করা হচ্ছে?
প্রথমত, স্বচ্ছতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল তাদের নীতিমালা প্রকাশ করেছে যা এআই ব্যবহারের নিয়ম নির্দেশ করে। দ্বিতীয়ত, মানব পর্যবেক্ষণ অপরিহার্য।
এআই কখনো ভুল তথ্য প্রদান করতে পারে, যা মানবীয় বিচার এবং পর্যবেক্ষণ ছাড়া নির্ভুল করা কঠিন। এমনকি ভুল ব্যবহারে এটি ক্ষতিকারক হতে পারে।
বিগত বছরগুলোতে, ক্রীড়া সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশের ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করা হয়েছিল যা পাঠকদের বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল।
সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ তাই এখনো মানব সৃষ্টির উপর নির্ভরশীল। নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকরা এআই-কে একটি অপরিপক্ক প্রযুক্তি হিসেবে দেখছে।
পরিশেষে, এআই সাংবাদিকতার একটি সম্পদ হতে পারে, কিন্তু এটি মানব সৃষ্টির বিকল্প হতে পারবে না।