০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের জলাভূমিতে পরিযায়ী পাখির ভবিষ্যৎ কি অনিশ্চিত?

  • Sarakhon Report
  • ১২:২৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 18

সারাক্ষণ ডেস্ক

বাংলাদেশের জলাভূমি ও উপকূলীয় অঞ্চল প্রতি শীতকালে পরিযায়ী পাখিদের জন্য এক অনন্য আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়। মঙ্গোলিয়া, চীন, রাশিয়া ও সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার পাখি এখানে উড়ে আসে, অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত খাদ্যের সন্ধানে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, আবাসস্থল ধ্বংস, পশুচারণ এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ক্রমাগত কমছে।

পরিযায়ী পাখির সংখ্যা হ্রাসের উদ্বেগজনক চিত্র

টাঙ্গুয়ার হাওরে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৯টি পাখির প্রজাতির মধ্যে ৪১টি পরিযায়ী, কিন্তু ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ৫৯% প্রজাতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে, সংকটাপন্ন বেয়ার্স পচার্ড এবং ঝুঁকিপূর্ণ কমন পচার্ডের মতো জলচর পাখিরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে।

নিঝুম দ্বীপে করা আরেকটি সমীক্ষায় ১৩টি বিপন্ন বা প্রায় বিপন্ন জলচর পাখির সন্ধান পাওয়া গেছে। যদিও সামগ্রিকভাবে পাখির সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, গবেষকরা মনে করছেন পশুচারণ ও ম্যানগ্রোভ বনায়নের ফলে দীর্ঘমেয়াদে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল নষ্ট হচ্ছে।

পরিযায়ী পাখির সংকটের মূল কারণ

বিশেষজ্ঞরা পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য কয়েকটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন:

জলাভূমির অবক্ষয় – গবাদিপশুর চারণ ও হাঁস পালনের কারণে পাখিদের খাবার এবং বাসস্থানের সংকট তৈরি হচ্ছে।

উপকূলীয় বনায়ন – সরকারের পরিচালিত ম্যানগ্রোভ বনায়ন প্রকল্প উপকূল রক্ষায় সহায়ক হলেও এটি পরিযায়ী পাখিদের গুরুত্বপূর্ণ কাদা মাটির আবাসস্থল ধ্বংস করছে।

নীতিগত অসঙ্গতি – পরিবেশ, প্রাণিসম্পদ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের কারণে এক অঞ্চলেই বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যা পাখিদের আবাসস্থলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

নীতিগত সংস্কারের আহ্বান

পরিবেশবিদরা বলছেন, কৃষি সম্প্রসারণ ও বাস্তুসংস্থান রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য আনতে সমন্বিত নীতি গ্রহণ করা জরুরি। যদি অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে বাংলাদেশ পরিযায়ী পাখিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে তার খ্যাতি হারাতে পারে।

বাংলাদেশের জলাভূমিতে পরিযায়ী পাখির ভবিষ্যৎ কি অনিশ্চিত?

১২:২৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ ডেস্ক

বাংলাদেশের জলাভূমি ও উপকূলীয় অঞ্চল প্রতি শীতকালে পরিযায়ী পাখিদের জন্য এক অনন্য আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়। মঙ্গোলিয়া, চীন, রাশিয়া ও সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার পাখি এখানে উড়ে আসে, অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত খাদ্যের সন্ধানে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, আবাসস্থল ধ্বংস, পশুচারণ এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ক্রমাগত কমছে।

পরিযায়ী পাখির সংখ্যা হ্রাসের উদ্বেগজনক চিত্র

টাঙ্গুয়ার হাওরে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৯টি পাখির প্রজাতির মধ্যে ৪১টি পরিযায়ী, কিন্তু ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ৫৯% প্রজাতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে, সংকটাপন্ন বেয়ার্স পচার্ড এবং ঝুঁকিপূর্ণ কমন পচার্ডের মতো জলচর পাখিরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে।

নিঝুম দ্বীপে করা আরেকটি সমীক্ষায় ১৩টি বিপন্ন বা প্রায় বিপন্ন জলচর পাখির সন্ধান পাওয়া গেছে। যদিও সামগ্রিকভাবে পাখির সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, গবেষকরা মনে করছেন পশুচারণ ও ম্যানগ্রোভ বনায়নের ফলে দীর্ঘমেয়াদে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল নষ্ট হচ্ছে।

পরিযায়ী পাখির সংকটের মূল কারণ

বিশেষজ্ঞরা পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য কয়েকটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন:

জলাভূমির অবক্ষয় – গবাদিপশুর চারণ ও হাঁস পালনের কারণে পাখিদের খাবার এবং বাসস্থানের সংকট তৈরি হচ্ছে।

উপকূলীয় বনায়ন – সরকারের পরিচালিত ম্যানগ্রোভ বনায়ন প্রকল্প উপকূল রক্ষায় সহায়ক হলেও এটি পরিযায়ী পাখিদের গুরুত্বপূর্ণ কাদা মাটির আবাসস্থল ধ্বংস করছে।

নীতিগত অসঙ্গতি – পরিবেশ, প্রাণিসম্পদ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের কারণে এক অঞ্চলেই বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যা পাখিদের আবাসস্থলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

নীতিগত সংস্কারের আহ্বান

পরিবেশবিদরা বলছেন, কৃষি সম্প্রসারণ ও বাস্তুসংস্থান রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য আনতে সমন্বিত নীতি গ্রহণ করা জরুরি। যদি অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে বাংলাদেশ পরিযায়ী পাখিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে তার খ্যাতি হারাতে পারে।