সারাক্ষণ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধ বৈশ্বিক বাজারকে নতুনভাবে রূপ দিচ্ছে। মুদ্রার মূল্য ওঠানামা এবং পরিবর্তিত বাণিজ্য নীতি বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ উভয়ই বয়ে আনছে, বিশেষ করে পোশাক খাত, বিদেশি বিনিয়োগ এবং মুদ্রার স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে মার্কিন খুচরা বিক্রেতারা চীনের পরিবর্তে বিকল্প দেশ খুঁজছে, যা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে। দেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৮০% আসে এই খাত থেকে। আগের এক দফা শুল্ক যুদ্ধের ফলে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব ৬.৪৬% বৃদ্ধি পেয়েছিল, এবং সাম্প্রতিক উত্তেজনা আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। তবে, ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো প্রতিযোগীদের উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিদেশি বিনিয়োগের স্থানান্তর
বাণিজ্য বিরোধের কারণে চীনা নির্মাতারা নতুন উৎপাদন কেন্দ্র খুঁজছে, যাতে তারা মার্কিন শুল্ক এড়াতে পারে। বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (EPZ) এবং তুলনামূলকভাবে কম শ্রম ব্যয় বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, এই সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগাতে হলে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ব্যবসা পরিচালনার সহজলভ্যতা উন্নত করতে হবে।
মুদ্রার ওঠানামা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা
টাকা ক্রমাগত চাপের মুখে রয়েছে, যা ১ ডলার = ১২২ টাকায় লেনদেন হচ্ছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে মুদ্রার এই ওঠানামা রপ্তানি ও আমদানির ওপর প্রভাব ফেলছে। দুর্বল টাকা একদিকে বাংলাদেশি পণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে পারে, অন্যদিকে কাঁচামালের আমদানি ব্যয় বাড়িয়ে দেবে, যা স্থানীয় শিল্পের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত করণীয়
বাংলাদেশের সামনে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ থাকলেও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। মার্কিন বাজারে প্রবেশের জন্য দেশকে কঠোর নিয়ম মেনে চলতে হবে, সরবরাহ চেইনের বাধাগুলো মোকাবিলা করতে হবে এবং অন্যান্য স্বল্পমূল্যের উৎপাদনকারী দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। এছাড়াও, চীন মার্কিন শুল্ক এড়াতে তার পণ্য বিকল্প বাজারে সরিয়ে নেওয়ার ফলে বাংলাদেশে সস্তা চীনা পণ্যের প্রবাহ বাড়তে পারে, যা স্থানীয় শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে