আর্কাদি গাইদার
প্রথম পরিচ্ছেদ
হঠাৎ তিমুক্কা শকিনের কথা মনে পড়ায় না-হেসে থাকতে পারলুম না। ও এই টিটু পাখির নাম দিয়েছিল ‘বোকা-ল্যাজঝোলা’। মনে হল, এই তো সেদিনের কথা – সেই টিপাখি, কবরখানা, আমাদের খেলাধুলো। আর এখন? ভুরু, কাঁচকে উঠল আমার। যা হোক কিছু একটা উপায় বের করতেই হবে!
কাছেই চাবুকের শব্দ আর গোরুর হাম্বা-ডাক শুনতে পেলুম। ভাবলুম, ‘গোরুর পাল যাচ্ছে। যাই, গিয়ে রাখালকে পথের কথা জিজ্ঞেস করি। রাখাল আমার আর কীই-বা ক্ষতি করতে পারে? কথাটা জিজ্ঞেস করেই না হয় তাড়াতাড়ি কেটে পড়ব।’
জঙ্গলের ধার ঘে’ষে অলসভাবে পুরনো ঘাস ছি’ড়তে-ছি’ড়তে ছোট্ট একপাল গোরু আস্তে-আস্তে এগোচ্ছিল। সঙ্গে মস্ত, ভারি একটা লাঠি হাতে এক বুড়ো রাখাল পথ চলছিল। যেন এমনিই বেড়িয়ে বেড়াচ্ছি এমন একটা ধীরস্থির শান্ত ভাব দেখিয়ে আন্তেধীরে বুড়োর দিকে এগোলুম।
‘সুপ্রভাত, ঠাকুন্দা!’
একটু যেন ইতস্তত করে বুড়ো বললে, ‘সুপ্রভাত!’ তারপর আমার ভালো করে দেখার জন্যে থামল।
‘আচ্ছা, রেলস্টেশনটা এখান থেকে কতদূর হবে?’
‘ইস্টিশন? তা কোন্ ইস্টিশন চাইচ বাপু?’
হঠাৎ হতবুদ্ধি হয়ে গেলুম। তাই তো, কোন স্টেশন চাই তাতো খেয়াল করি নি। কিন্তু বুড়ো নিজেই আমার হয়ে কথা যুগিয়ে দিল।
‘আলেক্সান্দ্রকা যেতি চাও বোধ করি?’
‘ঠিক-ঠিক। ওখানেই যাচ্ছিলুম তবে মধ্যে পথটা একটু গোলমাল হয়ে গেছে।’
‘বলি, আসা হচ্চে কোথেকে?’
আবার ঝামেলায় পড়ে গেলুম।
দূরে একটা গ্রাম দেখা যাচ্ছিল। সেই দিকে একটা অস্পষ্ট ইঙ্গিত করে যতদূর শান্তভাবে জবাব দেয়া সম্ভব ছিল, তাই দিলুম। ‘ওখান থেকে।’
‘হুম… ওখেন থেকে বলচ… মানে, দেমেনেভো থেকে?’
‘ঠিক-ঠিক, দেমেনেভোই।’