০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১৭)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
  • 196

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

সঙ্গী ঘুম-জড়ানো গলায় বললে, ‘কী ব্যাপার? ঘুমোচ্ছ না কেন?’

‘বড্ড স্যাঁতসে’তে লাগছে। আরও কয়েক মুঠো পাতা যোগাড় করে আনি।’

আমাদের কাছাকাছি যত শুকনো পাতা ছিল সব আগেই জড়ো করে ফেলায় এখন পাতার সন্ধানে আমাকে সেই রাস্তার ধারের ঝোপগুলোয় যেতে হল। তখন সবে চাঁদ উঠছে, তাই অন্ধকারে ঠিকমতো খোঁজ করতে অসুবিধে হচ্ছিল। তাছাড়া গাছের ডালপালার জন্যেও পদে পদে বাধা ঘটছিল। হঠাৎ রাস্তা থেকে অস্পষ্ট পায়ের শব্দ কানে এল। কেউ একজন হে’টে কিংবা ঘোড়ায় চেপে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল।

শুনে হাতের পাতাগুলো ফেলে দিয়ে আর ডালাপালা মাড়িয়ে পাছে শব্দ করে ফেলি তাই দেখে-দেখে রাস্তার দিকে গুটিগুটি এগিয়ে গেলুম।

একটা ঘোড়ায়-টানা চাষীর গাড়ি নরম, ভিজে, মেঠো রাস্তা দিয়ে আস্তে-আন্তে, প্রায় শব্দ না-করে যাচ্ছিল। আর গাড়িতে বসে দু-জন লোক নিচু গলায় কথা বলছিল।

একজন বলতে-বলতে যাচ্ছিল, ‘সবই নির্ভর করে, বুইলে? যদি তুমি আমারে শুধোও তো বলি, আমার মনে হয় উনি খাঁটি কথা কয়েচে।’

অপর জন জিজ্ঞেস করল, ‘কার কথা কইচ তুমি? সেনাপতির? হ্যাঁ, অনুমান করি, ঠিক কথাই কয়েচে সে। তবে মুশকিল কী জান? ওরা থাকবে না কিনা। আজ এল, তোমার-আমার সঙ্গে কথাবাত্তা কইল, ওমা, কাল ফের আবার চলি গেল।

আর ওরা চলে গেলেই কত্তাবাবুরা আসবে আর আমারে বলবে: ‘ওহ, তুই অমুক, তুই তমুক, আচ্ছা খেল দেখাচ্চিস বটে কুলাকদের পেছনে লেগিচিস, কেমন? আচ্ছা, দেখাচ্ছি মজা। লাগাও কোড়া!! লাল ফৌজের কী মাথা ব্যথা? এল আর গেল। আজ আবার আমাদের গাড়িগুলো বের করতি কইল সব। এদিকে কুলাকরা তো সব সময়ে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকচে। কাজেই মাথা চুলকে মশাই-মশাই তো করতি হচ্চেই, নাকি তুমিই বল!’

‘কী কইলে? গাড়িগুলো বের করতি কইল?’

‘লিচ্চয়। ফিয়োদর ওই যে ওদের একজন সেপাই গো আজ অনেক রাতে আমাদের ঠেলে তুলে বলে কিনা রাত বারোটার মধ্যি গাড়িটা তৈরি চাই।’

 

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১৭)

০৮:০০:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

সঙ্গী ঘুম-জড়ানো গলায় বললে, ‘কী ব্যাপার? ঘুমোচ্ছ না কেন?’

‘বড্ড স্যাঁতসে’তে লাগছে। আরও কয়েক মুঠো পাতা যোগাড় করে আনি।’

আমাদের কাছাকাছি যত শুকনো পাতা ছিল সব আগেই জড়ো করে ফেলায় এখন পাতার সন্ধানে আমাকে সেই রাস্তার ধারের ঝোপগুলোয় যেতে হল। তখন সবে চাঁদ উঠছে, তাই অন্ধকারে ঠিকমতো খোঁজ করতে অসুবিধে হচ্ছিল। তাছাড়া গাছের ডালপালার জন্যেও পদে পদে বাধা ঘটছিল। হঠাৎ রাস্তা থেকে অস্পষ্ট পায়ের শব্দ কানে এল। কেউ একজন হে’টে কিংবা ঘোড়ায় চেপে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল।

শুনে হাতের পাতাগুলো ফেলে দিয়ে আর ডালাপালা মাড়িয়ে পাছে শব্দ করে ফেলি তাই দেখে-দেখে রাস্তার দিকে গুটিগুটি এগিয়ে গেলুম।

একটা ঘোড়ায়-টানা চাষীর গাড়ি নরম, ভিজে, মেঠো রাস্তা দিয়ে আস্তে-আন্তে, প্রায় শব্দ না-করে যাচ্ছিল। আর গাড়িতে বসে দু-জন লোক নিচু গলায় কথা বলছিল।

একজন বলতে-বলতে যাচ্ছিল, ‘সবই নির্ভর করে, বুইলে? যদি তুমি আমারে শুধোও তো বলি, আমার মনে হয় উনি খাঁটি কথা কয়েচে।’

অপর জন জিজ্ঞেস করল, ‘কার কথা কইচ তুমি? সেনাপতির? হ্যাঁ, অনুমান করি, ঠিক কথাই কয়েচে সে। তবে মুশকিল কী জান? ওরা থাকবে না কিনা। আজ এল, তোমার-আমার সঙ্গে কথাবাত্তা কইল, ওমা, কাল ফের আবার চলি গেল।

আর ওরা চলে গেলেই কত্তাবাবুরা আসবে আর আমারে বলবে: ‘ওহ, তুই অমুক, তুই তমুক, আচ্ছা খেল দেখাচ্চিস বটে কুলাকদের পেছনে লেগিচিস, কেমন? আচ্ছা, দেখাচ্ছি মজা। লাগাও কোড়া!! লাল ফৌজের কী মাথা ব্যথা? এল আর গেল। আজ আবার আমাদের গাড়িগুলো বের করতি কইল সব। এদিকে কুলাকরা তো সব সময়ে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকচে। কাজেই মাথা চুলকে মশাই-মশাই তো করতি হচ্চেই, নাকি তুমিই বল!’

‘কী কইলে? গাড়িগুলো বের করতি কইল?’

‘লিচ্চয়। ফিয়োদর ওই যে ওদের একজন সেপাই গো আজ অনেক রাতে আমাদের ঠেলে তুলে বলে কিনা রাত বারোটার মধ্যি গাড়িটা তৈরি চাই।’