০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে বাংলাদেশ, ঢাকাসহ সারাদেশে বেড়েছে শীতের দাপট জিয়ার কবর জিয়ারত করলেন তারেক রহমান গুলিস্তানের শপিং কমপ্লেক্সের ছাদে গুদামে আগুন তারেক রহমানের পক্ষে সাভারে শ্রদ্ধা জানাল বিএনপি প্রতিনিধিদল বিশ্ববাজারে পৌঁছাতে ভার্চুয়াল আইডলে বাজি কেপপ সংস্থার উষ্ণ শীত জাপানের ‘স্নো মাঙ্কি’দের আচরণ বদলে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে সরবরাহ ঝুঁকি বাড়ায় তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী নতুন iOS আপডেটে অন-ডিভাইস এআই জোরালো করল অ্যাপল রপ্তানি আদেশ কমায় দীর্ঘস্থায়ী স্থবিরতার সতর্কতা জার্মানির

রণক্ষেত্রে (পর্ব-২০)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫
  • 106

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

ঘাসের ওপর পাথরের মতো ভারি মাথাটা নামাতে-নামাতে আমার বিহল মনের মধ্যে খালি একটা চিন্তাই তখন চমকে উঠল, ‘ওকে খুন করে ফেলেছি আমি।’

অনেকক্ষণ ওই একই ভাবে শুয়ে রইলুম, হতবুদ্ধি আর অর্ধ-অচৈতন্য অবস্থায়। তারপর আস্তে-আস্তে জ্বর কমে এল। মাথা থেকে রক্ত গেল নেমে। আর হঠাৎ অসম্ভব শীত ধরে গেল আমার, দাঁতে-দাঁতে ঠোকাঠুকি শুরু হয়ে গেল। উঠে বসলুম। হঠাৎ চোখ পড়ে গেল সামনে আমার-দিকে বাড়ানো হাত দুটোর ওপর। সে এক ভয়াবহ দৃশ্য! তাহলে এই হল, আসল বাস্তব যাকে বলে।

এর আগে পর্যন্ত আমার জীবনে আর যা-কিছু, ঘটেছিল তা ছিল নেহাতই খেলা মাত্র। এমন কি আমার বাড়ি থেকে পালানো, এমন কি সরমোভোর শ্রমিকদের সেই চমৎকার সৈন্যদলে আমার শিক্ষানবিসি, এমন কি এর আগের দিনের সেই জঙ্গলে রাত কাটানোও এর তুলনায় খেলা ছাড়া কিছু ছিল না।

হঠাৎ অসম্ভব এক আতঙ্ক পেয়ে বসল আমাকে। আমি একটা পনর বছর বয়েসের ছেলে, যাকে আমি সরাসরি খুন করেছি তার দেহটা নিয়ে একা সেই অন্ধকার জঙ্গলে রাত কাটাচ্ছিলুম, সে-ই ভয়। আমার কানের ভোঁ-ভোঁ আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল, কপালে দেখা দিল হিম ঘাম।

ভয়ই আমাকে চঞ্চল করে তুলল। উঠে পড়ে পা টিপে-টিপে মড়ার কাছে গিয়ে আমার পরিচয়-পত্রসূদ্ধ ওর চামড়ার ব্যাগটা চট করে তুলে নিলুম। তারপর পিছ হোটে-হে’টে সারাক্ষণ মাটিতে-পড়ে-থাকা দেহটার দিকে চোখ রেখে ফাঁকা জায়গাটার ধারের ঝোপের দিকে যেতে লাগলুম। হঠাৎ এক সময় উল্টোমুখে ঘুরে ঝোপের দিকে দৌড়লুম আর সোজা ঝোপঝাড় পেরিয়ে, রাস্তায় পড়ে গ্রামের দিকে ছুটতে লাগলুম।

তখন মাথায় একমাত্র চিন্তা, যেখানে মানুষজন আছে সেখানে যেতে হবে আমায়, জঙ্গলে একা থাকার চেয়ে আর যে-কোনো জায়গাই ভালো।

জনপ্রিয় সংবাদ

দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন

রণক্ষেত্রে (পর্ব-২০)

০৮:০০:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

ঘাসের ওপর পাথরের মতো ভারি মাথাটা নামাতে-নামাতে আমার বিহল মনের মধ্যে খালি একটা চিন্তাই তখন চমকে উঠল, ‘ওকে খুন করে ফেলেছি আমি।’

অনেকক্ষণ ওই একই ভাবে শুয়ে রইলুম, হতবুদ্ধি আর অর্ধ-অচৈতন্য অবস্থায়। তারপর আস্তে-আস্তে জ্বর কমে এল। মাথা থেকে রক্ত গেল নেমে। আর হঠাৎ অসম্ভব শীত ধরে গেল আমার, দাঁতে-দাঁতে ঠোকাঠুকি শুরু হয়ে গেল। উঠে বসলুম। হঠাৎ চোখ পড়ে গেল সামনে আমার-দিকে বাড়ানো হাত দুটোর ওপর। সে এক ভয়াবহ দৃশ্য! তাহলে এই হল, আসল বাস্তব যাকে বলে।

এর আগে পর্যন্ত আমার জীবনে আর যা-কিছু, ঘটেছিল তা ছিল নেহাতই খেলা মাত্র। এমন কি আমার বাড়ি থেকে পালানো, এমন কি সরমোভোর শ্রমিকদের সেই চমৎকার সৈন্যদলে আমার শিক্ষানবিসি, এমন কি এর আগের দিনের সেই জঙ্গলে রাত কাটানোও এর তুলনায় খেলা ছাড়া কিছু ছিল না।

হঠাৎ অসম্ভব এক আতঙ্ক পেয়ে বসল আমাকে। আমি একটা পনর বছর বয়েসের ছেলে, যাকে আমি সরাসরি খুন করেছি তার দেহটা নিয়ে একা সেই অন্ধকার জঙ্গলে রাত কাটাচ্ছিলুম, সে-ই ভয়। আমার কানের ভোঁ-ভোঁ আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল, কপালে দেখা দিল হিম ঘাম।

ভয়ই আমাকে চঞ্চল করে তুলল। উঠে পড়ে পা টিপে-টিপে মড়ার কাছে গিয়ে আমার পরিচয়-পত্রসূদ্ধ ওর চামড়ার ব্যাগটা চট করে তুলে নিলুম। তারপর পিছ হোটে-হে’টে সারাক্ষণ মাটিতে-পড়ে-থাকা দেহটার দিকে চোখ রেখে ফাঁকা জায়গাটার ধারের ঝোপের দিকে যেতে লাগলুম। হঠাৎ এক সময় উল্টোমুখে ঘুরে ঝোপের দিকে দৌড়লুম আর সোজা ঝোপঝাড় পেরিয়ে, রাস্তায় পড়ে গ্রামের দিকে ছুটতে লাগলুম।

তখন মাথায় একমাত্র চিন্তা, যেখানে মানুষজন আছে সেখানে যেতে হবে আমায়, জঙ্গলে একা থাকার চেয়ে আর যে-কোনো জায়গাই ভালো।