আর্কাদি গাইদার
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
গাঁয়ে ঢোকার পর প্রথম কুঁড়ে থেকে একটা চিৎকার শোনা গেল:
‘এই, এই, কোন্ চুলোয় মরতে ছুটেছিস? হেই, বে’টে বামন! থাম্ শিগগির, হে’ডে-মাথা কোথাকার!’
ঘরের ছায়ার ভেতর থেকে রাইফেল-হাতে ছুটে এল একটা লোক। তারপর আমার কাছে এসে দাঁড়াল।
‘কোথায় ছুটে চলেচিস, শুনি? আসচিসই-বা কোথা থেকে?’ আমার মুখটা চাঁদের আলোর দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে রক্ষী-সেপাই জিজ্ঞেস করল।
হাঁপাতে-হাঁপাতে বললুম, ‘তোমাদের কাছেই। তোমরা তো কমরেড, তাই না?’ ‘আমরা কমরেড আচি ঠিকই,’ ও বাধা দিল, ‘কিন্তু তুমি কে?’
‘আমিও তাই,’ থমকে থমকে শুরু করলুম আমি। কিন্তু তখনও স্বাভাবিকভাবে দম ফেলতে না-পারায় আর কোনো কথা না-বলে চামড়ার ব্যাগটা ওর হাতে তুলে দিলুম।
‘তুমিও তাই, উ’?’ রক্ষী এবার একটু খুশি-খুশিভাবে প্রশশ্ন করল। যদিও তখনও পর্যন্ত ওর সন্দেহ একেবারে কাটে নি। বলল, ‘ঠিক আচে, তাইলে চল কম্যান্ডারের সঙ্গে দেখা করি গিয়ে।’
বেশ রাত হওয়া সত্ত্বেও সারা গ্রাম তখনও জেগে। ঘোড়াগুলো চি’হি-চি’হি ডাক ছাড়ছে। চাষীদের গাড়িগুলো বাড়ির উঠোন থেকে বের করার জন্যে ক্যাচুকোঁচ আওয়াজ করে গেট খোলার শব্দ হচ্ছে। কাছেই কে একজন চে’চিয়ে ডাকল:
‘দোকুকিন! দো-কু-কিন! কোন চুলোয় মরতি গেল সে?’
‘আঃ, এত চ্যাঁচামেচি কিসের, ভাস্কা?’ যে চিৎকার করছিল তার সামনাসামনি এসে আমার সঙ্গী পাহারাদারটি জিজ্ঞেস করলে।