১২:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

রণক্ষেত্রে (পর্ব-২৫)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫
  • 60

আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

টেবিলে আন্তে-আন্তে আঙুলের টোকা দিতে-দিতে কম্যান্ডার প্রস্তাবটা নিয়ে ভাবতে লাগলেন। পরে বললেন:

‘ঠিক আচে। চুবুক, তুমি ছেলেটিরে লিয়ে এক লম্বর কোম্পানিতে যাও। গিয়ে সুখারেভরে কও পাল্কা মারা পড়ার পরে যে রাইফেলটা পড়ে আচে সেটা ওরে দিতে। কিছু গুলিও দিতে কোয়ো মাথাপিছু যা বরাদ্দ আচে তাই। আমাদের বিপ্লবী বাহিনীর নামের খাতায় ওর নামটাও তুলে,লিতে কোয়ো।’

চিঙ্ক-চিঙ্ক! ক্লিঙ্ক-ক্লিক! আবার সেই তরোয়াল, গোড়ালির নাল আর মাওজারের মিলিত আওয়াজ উঠল। ঠেলে ঘরের দরজাটা খুলে কম্যান্ডার ধীরেসুস্থে ঘোড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন।

‘চলি এস না কেন,’ চুবুক বললেন। তারপর হঠাৎ আমার পিঠটা চাপড়ে দিলেন।

ফের বেজে উঠল বিউগুল, মিষ্টি নাচের ছন্দে। ঘোড়াগুলো আগের চেয়ে জোরে-জোরে নাকের মধ্যে দিয়ে আওয়াজ করে উঠল, গাড়িগুলোর ক্যাঁচকোঁচ শব্দও বেড়ে উঠল আগের চেয়ে। আর আমি-যে কী সুখী হলুম তা বলতে পারি না। হাসতে-হাসতে আমার নতুন কমরেডদের সঙ্গে দেখা করতে চললুম। সেদিন সারা রাত হাঁটলুম আমরা। সকালে রাস্তার ধারের একটা ছোট রেলস্টেশনে ট্রেনে চাপলুম।

সন্ধেবেলায় একটা রঙ-চটা এঞ্জিন আমাদের সৈন্যবাহী ট্রেনে জোতা হল, আর আমরা ট্রেনে করে চললুম দক্ষিণদেশে দোবাস-অঞ্চল দখল-করে-রাখা জার্মান, গাইদামাক আর ক্রাস্স্নভপন্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত শ্রমিকদের ছোট-বড় নানা সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিতে।

আমাদের বাহিনীর বেশ একটা লম্বা-চওড়া নাম ছিল। নামটা হল, বিপ্লবী প্রলেতারিয়েতের বিশেষ সেনাবাহিনী। বাহিনীতে অবিশ্যি লোক ছিল না বেশি, মোটে দেড় শোর মতো হবে। আমরা ছিলুম পদাতিক বাহিনী, কেবল ফেদিয়া সিসভের নেতৃত্বে পনেরো জন অশ্বারোহীর একটি স্কাউট দল আমাদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আমাদের বাহিনীর কম্যান্ডার ছিলেন ওই পূর্বকথিত শেবালভ। পেশায় ইনি ছিলেন মুচি। সদ্য লড়াইয়ে নাম লিখিয়েছিলেন।

 

 

রণক্ষেত্রে (পর্ব-২৫)

০৮:০০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

টেবিলে আন্তে-আন্তে আঙুলের টোকা দিতে-দিতে কম্যান্ডার প্রস্তাবটা নিয়ে ভাবতে লাগলেন। পরে বললেন:

‘ঠিক আচে। চুবুক, তুমি ছেলেটিরে লিয়ে এক লম্বর কোম্পানিতে যাও। গিয়ে সুখারেভরে কও পাল্কা মারা পড়ার পরে যে রাইফেলটা পড়ে আচে সেটা ওরে দিতে। কিছু গুলিও দিতে কোয়ো মাথাপিছু যা বরাদ্দ আচে তাই। আমাদের বিপ্লবী বাহিনীর নামের খাতায় ওর নামটাও তুলে,লিতে কোয়ো।’

চিঙ্ক-চিঙ্ক! ক্লিঙ্ক-ক্লিক! আবার সেই তরোয়াল, গোড়ালির নাল আর মাওজারের মিলিত আওয়াজ উঠল। ঠেলে ঘরের দরজাটা খুলে কম্যান্ডার ধীরেসুস্থে ঘোড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন।

‘চলি এস না কেন,’ চুবুক বললেন। তারপর হঠাৎ আমার পিঠটা চাপড়ে দিলেন।

ফের বেজে উঠল বিউগুল, মিষ্টি নাচের ছন্দে। ঘোড়াগুলো আগের চেয়ে জোরে-জোরে নাকের মধ্যে দিয়ে আওয়াজ করে উঠল, গাড়িগুলোর ক্যাঁচকোঁচ শব্দও বেড়ে উঠল আগের চেয়ে। আর আমি-যে কী সুখী হলুম তা বলতে পারি না। হাসতে-হাসতে আমার নতুন কমরেডদের সঙ্গে দেখা করতে চললুম। সেদিন সারা রাত হাঁটলুম আমরা। সকালে রাস্তার ধারের একটা ছোট রেলস্টেশনে ট্রেনে চাপলুম।

সন্ধেবেলায় একটা রঙ-চটা এঞ্জিন আমাদের সৈন্যবাহী ট্রেনে জোতা হল, আর আমরা ট্রেনে করে চললুম দক্ষিণদেশে দোবাস-অঞ্চল দখল-করে-রাখা জার্মান, গাইদামাক আর ক্রাস্স্নভপন্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত শ্রমিকদের ছোট-বড় নানা সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিতে।

আমাদের বাহিনীর বেশ একটা লম্বা-চওড়া নাম ছিল। নামটা হল, বিপ্লবী প্রলেতারিয়েতের বিশেষ সেনাবাহিনী। বাহিনীতে অবিশ্যি লোক ছিল না বেশি, মোটে দেড় শোর মতো হবে। আমরা ছিলুম পদাতিক বাহিনী, কেবল ফেদিয়া সিসভের নেতৃত্বে পনেরো জন অশ্বারোহীর একটি স্কাউট দল আমাদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আমাদের বাহিনীর কম্যান্ডার ছিলেন ওই পূর্বকথিত শেবালভ। পেশায় ইনি ছিলেন মুচি। সদ্য লড়াইয়ে নাম লিখিয়েছিলেন।