০৭:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
গুলিস্তানের শপিং কমপ্লেক্সের ছাদে গুদামে আগুন তারেক রহমানের পক্ষে সাভারে শ্রদ্ধা জানাল বিএনপি প্রতিনিধিদল বিশ্ববাজারে পৌঁছাতে ভার্চুয়াল আইডলে বাজি কেপপ সংস্থার উষ্ণ শীত জাপানের ‘স্নো মাঙ্কি’দের আচরণ বদলে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে সরবরাহ ঝুঁকি বাড়ায় তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী নতুন iOS আপডেটে অন-ডিভাইস এআই জোরালো করল অ্যাপল রপ্তানি আদেশ কমায় দীর্ঘস্থায়ী স্থবিরতার সতর্কতা জার্মানির ব্রিজার্টন সিজন ৪ ট্রেলার: ‘সিন্ডারেলা’ ধাঁচের রোম্যান্স, দুই ভাগে মুক্তি দিচ্ছে নেটফ্লিক্স কুমিল্লায় পথচারী নিহতের পর বাসে আগুন ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া ও আরিচা–কাজীরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ

রণক্ষেত্রে (পর্ব-২৬)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
  • 128

আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

মনে হত, সুতোয় লাগানোর জন্যে ব্যবহার করার সময় ধারালো মোমের কানায় লেগে ক্ষতবিক্ষত হাতের ঘা ওঁর তখনও যেন শুকোয় নি, হাতের কালো কালির দাগও যেন ওঠে নি তখনও। আমাদের এই কম্যান্ডারটি ছিলেন অদ্ভুত চরিত্রের মানুষ।

দলের ছেলেরা ওঁকে যেমন শ্রদ্ধা করত, তেমনই ওঁর কিছু, কিছু, দুর্বলতার জন্যে হাসাহাসিও করত।

এমনই একটা দুর্বলতা ছিল ওঁর সদাসর্বদা লোক-দেখানো আড়ম্বরের ভাবটা।

ওঁর ঘোড়া সাজানো থাকত লাল ফিতে দিয়ে আর ওঁর গোড়ালিতে-বাঁধা ঘোড়সওয়ারের নালটা (ওটা সম্ভবত উনি কোনো যাদুঘর থেকে সংগ্রহ করেছিলেন!) ছিল অসম্ভব লম্বা আর বাঁকানো, এমন এক অস্বাভাবিক ব্যাপার যে একমাত্র ছবিতে মধ্যযুগীয় নাইটদের পায়ে ছাড়া আর কোথাও ও-জিনিস চাক্ষুষ করি নি।

এছাড়া, ওঁর নিকেলের গিল্টি-করা তরোয়ালখানা পৌঁছত মাটি পর্যন্ত, আর মাওজারের কাঠের খাপের গায়ে সাঁটা পেতলের চাকতিতে খোদাই-করা ছিল এই উপদেশবাক্যটি:

‘আমি মরব বটে, তবে, ওরে ঘৃণ্য, তোকেও বিনষ্ট করব!’ শোনা যেত, উনি স্ত্রী ও তিনটি সন্তানকে বাড়িতে রেখে এসেছেন। তার মধ্যে বড় ছেলেটি তখনই

চাকরিবাকরি করত। ফেব্রুয়ারি-বিপ্লবের পর উনি ফ্রন্ট থেকে পালিয়ে এসে জুতো-সেলাইয়ের কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু কাদেতরা যখন ক্রেমলিন আক্রমণ করল, উনি তখন ছুটির দিনের সেরা পোশাকটি গায়ে চড়িয়ে কোনো এক খরিদ্দারের ফরমায়েসমাফিক নিজেরই সদ্য-তৈরি উচু কানাওয়ালা বুটজোড়ায় পা গলিয়ে আরবাতের শ্রমিকদের সশস্ত্র বাহিনীর কাছ থেকে একটা রাইফেল সংগ্রহ করে নিলেন।

আর তখন থেকেই উনি, ওঁর নিজের ভাষায়, ‘বিপ্লবের সঙ্গে নিজের কপালটাও নিলেন জুড়ে’।

জনপ্রিয় সংবাদ

গুলিস্তানের শপিং কমপ্লেক্সের ছাদে গুদামে আগুন

রণক্ষেত্রে (পর্ব-২৬)

০৮:০০:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

মনে হত, সুতোয় লাগানোর জন্যে ব্যবহার করার সময় ধারালো মোমের কানায় লেগে ক্ষতবিক্ষত হাতের ঘা ওঁর তখনও যেন শুকোয় নি, হাতের কালো কালির দাগও যেন ওঠে নি তখনও। আমাদের এই কম্যান্ডারটি ছিলেন অদ্ভুত চরিত্রের মানুষ।

দলের ছেলেরা ওঁকে যেমন শ্রদ্ধা করত, তেমনই ওঁর কিছু, কিছু, দুর্বলতার জন্যে হাসাহাসিও করত।

এমনই একটা দুর্বলতা ছিল ওঁর সদাসর্বদা লোক-দেখানো আড়ম্বরের ভাবটা।

ওঁর ঘোড়া সাজানো থাকত লাল ফিতে দিয়ে আর ওঁর গোড়ালিতে-বাঁধা ঘোড়সওয়ারের নালটা (ওটা সম্ভবত উনি কোনো যাদুঘর থেকে সংগ্রহ করেছিলেন!) ছিল অসম্ভব লম্বা আর বাঁকানো, এমন এক অস্বাভাবিক ব্যাপার যে একমাত্র ছবিতে মধ্যযুগীয় নাইটদের পায়ে ছাড়া আর কোথাও ও-জিনিস চাক্ষুষ করি নি।

এছাড়া, ওঁর নিকেলের গিল্টি-করা তরোয়ালখানা পৌঁছত মাটি পর্যন্ত, আর মাওজারের কাঠের খাপের গায়ে সাঁটা পেতলের চাকতিতে খোদাই-করা ছিল এই উপদেশবাক্যটি:

‘আমি মরব বটে, তবে, ওরে ঘৃণ্য, তোকেও বিনষ্ট করব!’ শোনা যেত, উনি স্ত্রী ও তিনটি সন্তানকে বাড়িতে রেখে এসেছেন। তার মধ্যে বড় ছেলেটি তখনই

চাকরিবাকরি করত। ফেব্রুয়ারি-বিপ্লবের পর উনি ফ্রন্ট থেকে পালিয়ে এসে জুতো-সেলাইয়ের কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু কাদেতরা যখন ক্রেমলিন আক্রমণ করল, উনি তখন ছুটির দিনের সেরা পোশাকটি গায়ে চড়িয়ে কোনো এক খরিদ্দারের ফরমায়েসমাফিক নিজেরই সদ্য-তৈরি উচু কানাওয়ালা বুটজোড়ায় পা গলিয়ে আরবাতের শ্রমিকদের সশস্ত্র বাহিনীর কাছ থেকে একটা রাইফেল সংগ্রহ করে নিলেন।

আর তখন থেকেই উনি, ওঁর নিজের ভাষায়, ‘বিপ্লবের সঙ্গে নিজের কপালটাও নিলেন জুড়ে’।