০৭:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
চিতা-বাঘের শেষ আলোঝলক ঢাকা শহরের বাস সেবা: আধুনিকায়নের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির আর প্রসাদ বিতরণ নিয়ে কেন রাজনৈতিক বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গে? মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ও গঙ্গা জলচুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: বাংলাদেশের বড় একটি ভুল, প্রতিশোধ বনাম সংস্কার সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অমর কিংবদন্তি বাংলা নাটকের সুপারস্টার অপূর্বের জন্মদিন আজ শিবসা নদী: শতবর্ষী এক প্রাণপ্রবাহ ও তার সুন্দরবনের প্রভাব ইরান যুদ্ধ ও ‘ট্রাম্প নীতি’ চীনের বহুমুখী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছে

ভারতের সহায়তায় ভিয়েতনাম থাইল্যান্ডের পর্যটন-মুকুটকে চ্যালেঞ্জ করছে

  • Sarakhon Report
  • ১১:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫
  • 34

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ভিয়েতনাম এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি হয়ে উঠতে চাইছে। দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ড এই অঞ্চলের পর্যটনের শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও, ক্রমবর্ধমান ভ্রমণকারীর সংখ্যা ভিয়েতনামের সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে ভারতীয় পর্যটকদের উত্থান ভিয়েতনামের লক্ষ্য পূরণে বড় ভূমিকা রাখছে।

থাইল্যান্ডের বর্তমান অবস্থা

  • থাইল্যান্ড এখনও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আকর্ষণ করে,২০২৪ সালে দেশটিতে ৩৫.৫ মিলিয়ন ভিনদেশি ভ্রমণকারী এসেছে।
    • ২০১৯ সালে চীন ছিল থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় পর্যটক সরবরাহকারী; ওই বছরে থাইল্যান্ডে আগত পর্যটকের ২৮% ছিলেন চীনা। ২০২৪ সালে তা ১৮.৯%-এ নেমে আসে।
    • দেশটি ২০২৫ সালে ৪০ মিলিয়ন পর্যটক আকর্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, যা ২০১৯ সালের ৩৯ মিলিয়নের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা। তবে চীন থেকে পর্যাপ্ত পর্যটক না এলেও দেশটি অন্য উৎস থেকে পর্যটক পেতে আগ্রহী।

ভিয়েতনামের দ্রুত অগ্রগতি
• ভিয়েতনাম গত বছর ১৭.৫ মিলিয়ন পর্যটক পেয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪০% প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে।
• ২০২৫ সালে ২৩ মিলিয়ন ভ্রমণকারীকে আকর্ষণ করার লক্ষ্য নিয়ে ভিয়েতনাম এগোচ্ছে, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ২৮% বৃদ্ধি।
• ভারতীয় পর্যটকদের আগমন ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধিকে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। নতুন ফ্লাইট রুট ও সহজতর ভিসা-ব্যবস্থা এর পেছনে বড় কারণ।

চীনা পর্যটকের পরিবর্তনশীল প্রবণতা
• চীন এখনও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যটক-উৎস হলেও ২০২৪ সালে চীনা ভ্রমণ বেড়েছে অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে, এবং চীনা পর্যটকদের সামগ্রিক বিদেশ ভ্রমণ এখনো ২০১৯ সালের সর্বোচ্চ পর্যায়ের তুলনায় ৮০%।
• চীনা অর্থনীতির তুলনামূলক শ্লথগতি এবং নতুন অভিজ্ঞতার সন্ধান চীনা পর্যটকদের অন্য দেশে আকর্ষণ করছে।
• অন্যদিকে, থাইল্যান্ডে চীনা পর্যটক আগমন আগের তুলনায় কমেছে, কারণ চীনা ভ্রমণকারীরা জাপানসহ নতুন গন্তব্যে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

ভারতীয় পর্যটনের উত্থান

  • চীনা পর্যটক কমে যাওয়া সত্ত্বেও ভারতীয় পর্যটকের উত্থান এই অঞ্চলের জন্য নতুন আশা নিয়ে এসেছে।
    •ভারতের অর্থনীতি যথেষ্ট গতিতে এগোচ্ছে; ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৬.৪% প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা যা মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
    • অনুমান করা হচ্ছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে ভারতীয়রা বছরে প্রায় ১২০ বিলিয়ন ডলার বিদেশ ভ্রমণে ব্যয় করবে। এতে করে তারা বৈশ্বিকভাবে চতুর্থ বৃহত্তম পর্যটন খাতে ব্যয়কারী হিসেবে আবির্ভূত হবে (যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জার্মানির পরে)।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় পর্যটকদের আগমন

  • কোভিড-পরবর্তী সময়ে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ভারতীয় পর্যটকদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের সুবিধা দেয়,যার ফলে সেখানে ভারতীয় পর্যটক আগমন বেড়েছে।
    • ব্যাংকক ভারতীয়দের পছন্দের শীর্ষ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে, এমনকি দুবাইকেও পেছনে ফেলেছে।
    • ভিয়েতনাম নতুন ফ্লাইট ও সহজতর ভিসা-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সংযোগ বাড়িয়েছে, যার ফলে ২০২৪ সালে ভিয়েতনামে ভারতীয় পর্যটক আগমন ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৬৩% বৃদ্ধি পেয়েছে।

নতুন বাস্তবতা ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ

  • ভিয়েতনাম,থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় এখন একই সঙ্গে চীনা ও ভারতীয় পর্যটক আগমনের জোয়ার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে অর্থনৈতিকভাবে দুই দিক থেকে সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।
    • থাইল্যান্ডে চীনা পর্যটক হ্রাস পেলে ভারতীয় পর্যটক আগমন ওই ঘাটতি মেটাতে সহায়তা করছে।
    • ভ্রমণকারীদের রুচি ও চাহিদা ভিন্ন হওয়ায় স্থানীয় পর্যটন-ব্যবস্থাকে নতুন করে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতীয়রা কেনাকাটায় বেশি ব্যয় করে, যাই হোক চীনারা বেশি ব্যয় করে অভিজ্ঞতা বা বিনোদনের ক্ষেত্রে (ইভেন্ট, নাইটলাইফ ইত্যাদি)।
    • পর্যটন খাতের এই বৈচিত্র আঞ্চলিক পর্যটন-নির্ভর অর্থনীতিকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে, কারণ পর্যটক-নির্ভরতায় বৈচিত্র আসার ফলে স্থিতিশীলতাও বাড়ছে।

উপসংহার
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনে চীনের ভূমিকা এখনো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে ভারতীয় পর্যটকদের উত্থান নতুন গতিপথ তৈরি করছে। চীন ও ভারতের বাজার একযোগে কাজ করায় থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামসহ পুরো অঞ্চলের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হতে পারে। এভাবে ভিয়েতনাম নিজেকে দ্রুত বিকশিত পর্যটন গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলছে, এবং থাইল্যান্ডের দীর্ঘস্থায়ী আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত হয়ে উঠছে।

চিতা-বাঘের শেষ আলোঝলক

ভারতের সহায়তায় ভিয়েতনাম থাইল্যান্ডের পর্যটন-মুকুটকে চ্যালেঞ্জ করছে

১১:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ভিয়েতনাম এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি হয়ে উঠতে চাইছে। দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ড এই অঞ্চলের পর্যটনের শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও, ক্রমবর্ধমান ভ্রমণকারীর সংখ্যা ভিয়েতনামের সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে ভারতীয় পর্যটকদের উত্থান ভিয়েতনামের লক্ষ্য পূরণে বড় ভূমিকা রাখছে।

থাইল্যান্ডের বর্তমান অবস্থা

  • থাইল্যান্ড এখনও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আকর্ষণ করে,২০২৪ সালে দেশটিতে ৩৫.৫ মিলিয়ন ভিনদেশি ভ্রমণকারী এসেছে।
    • ২০১৯ সালে চীন ছিল থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় পর্যটক সরবরাহকারী; ওই বছরে থাইল্যান্ডে আগত পর্যটকের ২৮% ছিলেন চীনা। ২০২৪ সালে তা ১৮.৯%-এ নেমে আসে।
    • দেশটি ২০২৫ সালে ৪০ মিলিয়ন পর্যটক আকর্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, যা ২০১৯ সালের ৩৯ মিলিয়নের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা। তবে চীন থেকে পর্যাপ্ত পর্যটক না এলেও দেশটি অন্য উৎস থেকে পর্যটক পেতে আগ্রহী।

ভিয়েতনামের দ্রুত অগ্রগতি
• ভিয়েতনাম গত বছর ১৭.৫ মিলিয়ন পর্যটক পেয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪০% প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে।
• ২০২৫ সালে ২৩ মিলিয়ন ভ্রমণকারীকে আকর্ষণ করার লক্ষ্য নিয়ে ভিয়েতনাম এগোচ্ছে, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ২৮% বৃদ্ধি।
• ভারতীয় পর্যটকদের আগমন ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধিকে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। নতুন ফ্লাইট রুট ও সহজতর ভিসা-ব্যবস্থা এর পেছনে বড় কারণ।

চীনা পর্যটকের পরিবর্তনশীল প্রবণতা
• চীন এখনও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যটক-উৎস হলেও ২০২৪ সালে চীনা ভ্রমণ বেড়েছে অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে, এবং চীনা পর্যটকদের সামগ্রিক বিদেশ ভ্রমণ এখনো ২০১৯ সালের সর্বোচ্চ পর্যায়ের তুলনায় ৮০%।
• চীনা অর্থনীতির তুলনামূলক শ্লথগতি এবং নতুন অভিজ্ঞতার সন্ধান চীনা পর্যটকদের অন্য দেশে আকর্ষণ করছে।
• অন্যদিকে, থাইল্যান্ডে চীনা পর্যটক আগমন আগের তুলনায় কমেছে, কারণ চীনা ভ্রমণকারীরা জাপানসহ নতুন গন্তব্যে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

ভারতীয় পর্যটনের উত্থান

  • চীনা পর্যটক কমে যাওয়া সত্ত্বেও ভারতীয় পর্যটকের উত্থান এই অঞ্চলের জন্য নতুন আশা নিয়ে এসেছে।
    •ভারতের অর্থনীতি যথেষ্ট গতিতে এগোচ্ছে; ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৬.৪% প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা যা মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
    • অনুমান করা হচ্ছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে ভারতীয়রা বছরে প্রায় ১২০ বিলিয়ন ডলার বিদেশ ভ্রমণে ব্যয় করবে। এতে করে তারা বৈশ্বিকভাবে চতুর্থ বৃহত্তম পর্যটন খাতে ব্যয়কারী হিসেবে আবির্ভূত হবে (যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জার্মানির পরে)।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় পর্যটকদের আগমন

  • কোভিড-পরবর্তী সময়ে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ভারতীয় পর্যটকদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের সুবিধা দেয়,যার ফলে সেখানে ভারতীয় পর্যটক আগমন বেড়েছে।
    • ব্যাংকক ভারতীয়দের পছন্দের শীর্ষ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে, এমনকি দুবাইকেও পেছনে ফেলেছে।
    • ভিয়েতনাম নতুন ফ্লাইট ও সহজতর ভিসা-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সংযোগ বাড়িয়েছে, যার ফলে ২০২৪ সালে ভিয়েতনামে ভারতীয় পর্যটক আগমন ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৬৩% বৃদ্ধি পেয়েছে।

নতুন বাস্তবতা ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ

  • ভিয়েতনাম,থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় এখন একই সঙ্গে চীনা ও ভারতীয় পর্যটক আগমনের জোয়ার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে অর্থনৈতিকভাবে দুই দিক থেকে সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।
    • থাইল্যান্ডে চীনা পর্যটক হ্রাস পেলে ভারতীয় পর্যটক আগমন ওই ঘাটতি মেটাতে সহায়তা করছে।
    • ভ্রমণকারীদের রুচি ও চাহিদা ভিন্ন হওয়ায় স্থানীয় পর্যটন-ব্যবস্থাকে নতুন করে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতীয়রা কেনাকাটায় বেশি ব্যয় করে, যাই হোক চীনারা বেশি ব্যয় করে অভিজ্ঞতা বা বিনোদনের ক্ষেত্রে (ইভেন্ট, নাইটলাইফ ইত্যাদি)।
    • পর্যটন খাতের এই বৈচিত্র আঞ্চলিক পর্যটন-নির্ভর অর্থনীতিকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে, কারণ পর্যটক-নির্ভরতায় বৈচিত্র আসার ফলে স্থিতিশীলতাও বাড়ছে।

উপসংহার
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনে চীনের ভূমিকা এখনো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে ভারতীয় পর্যটকদের উত্থান নতুন গতিপথ তৈরি করছে। চীন ও ভারতের বাজার একযোগে কাজ করায় থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামসহ পুরো অঞ্চলের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হতে পারে। এভাবে ভিয়েতনাম নিজেকে দ্রুত বিকশিত পর্যটন গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলছে, এবং থাইল্যান্ডের দীর্ঘস্থায়ী আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত হয়ে উঠছে।