ইউক্রেন সংকটে পুতিনকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প
দ্য স্কটিশ সান,
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে তাকে অবশ্যই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং এপ্রিলের ৩০ তারিখের মধ্যে চুক্তিতে পৌঁছাতে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেন। তবে পুতিন সম্প্রতি সেন্ট পিটার্সবার্গে সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইউক্রেনে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছেন এবং অতিরিক্ত ১.৬ লাখ সেনা মোতায়েন করেছেন, যা যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাকে আরও অনিশ্চিত করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, রাশিয়া নতুন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং দখলকৃত অঞ্চল সংরক্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহায়তা দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ থাকায় সেখানে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ইউক্রেন সীমান্তে পাল্টা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং তারা রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধরত কিছু চীনা যোদ্ধাকে আটক করার দাবি করেছে। যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ১২৫% শুল্ক আরোপ করলো চীন
ব্যারন্স,
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫% শুল্ক আরোপের জবাবে চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে শুল্ক ৮৪% থেকে বাড়িয়ে ১২৫% করেছে। তবে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আর শুল্ক বাড়াবে না, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে দেশটিতে বাজার চাহিদা কম এবং অর্থনৈতিকভাবে তা কার্যকর নয়। মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র চীনের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা অব্যাহত রাখে, তাহলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরই মধ্যে এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। টেসলা চীনে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি কিছু মডেলের গাড়ির অর্ডার নেওয়া বন্ধ করেছে। চীন বর্তমানে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পের ঘোষিত ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পাল্টা প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন দ্রুত ৭০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে চাইছে, যদিও সেগুলোর ব্যাপ্তি ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যচুক্তির তুলনায় সীমিত হবে।
ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা ব্যর্থ হলে ইউরোপের ডিজিটাল বিজ্ঞাপন কর আরোপের হুমকি
নিউ ইয়র্ক পোস্ট,
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা ব্যর্থ হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গুগল ও মেটার মতো মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর নতুন কর আরোপ করতে পারে। ট্রাম্প ইউরোপের ওপর শুল্ক সাময়িকভাবে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছেন, তবে আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে ইউরোপ ডিজিটাল বিজ্ঞাপন রাজস্বের ওপর কর আরোপ করতে পারে, যা এই কোম্পানিগুলোর জন্য বড় আঘাত হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘অ্যান্টি-কোয়েরশন ইনস্ট্রুমেন্ট’ ব্যবহার করে এসব ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হতে পারে, তবে ২৭টি সদস্য দেশের সম্মতি প্রয়োজন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় গাড়ি, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০% বা তার বেশি শুল্ক আরোপ করেছে। পাশাপাশি, ইউরোপ ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (DMA) অনুসারে গুগল, অ্যাপল ও মেটার বিরুদ্ধে অ্যান্টি-কম্পিটিটিভ আচরণের অভিযোগে বিশাল অঙ্কের জরিমানা প্রস্তুত করছে। অনুমান করা হচ্ছে, মেটার জন্য এই জরিমানা এক বিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে। ট্রাম্প এবং মেটা সিইও মার্ক জাকারবার্গ এই আইনের সমালোচনা করলেও, ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলছেন যে বাণিজ্য আলোচনা এবং প্রতিযোগিতা আইন দুটি আলাদা বিষয়।
ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র তড়িঘড়ি আলোচনায়, বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে চায় দুই পক্ষ
দ্য আইরিশ সান,
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফচোভিচ যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে আলোচনা শুরু করেছেন। এই শুল্কগুলো মূলত ঘরোয়া কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অজুহাতে আরোপ করা হলেও বিশ্ববাজারে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে উভয় পক্ষ ৯০ দিনের একটি সাময়িক বিরতি দিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস একে ‘সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন। ইউরোপ একটি ‘জিরো ফর জিরো’ প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে দুই পক্ষই একে অপরের ওপর শুল্ক বাতিল করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো প্রস্তাব মেনে নেয়নি, কারণ ট্রাম্পের মতে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় বেশি লাভবান হচ্ছে। ওয়াশিংটনে হ্যারিস ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এদিকে, ওয়ারসতে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে তাঁরা একটি ঐক্যবদ্ধ, নিয়মভিত্তিক বাণিজ্য ব্যবস্থার পক্ষে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
জলবায়ু নীতিকে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত করার সুযোগ তৈরি করেছে ট্রাম্পের শুল্কনীতি
টাইম,
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী শুল্কনীতি বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় এক নতুন ধাক্কা দিয়েছে। এতে বিশেষ করে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও সবুজ প্রযুক্তির জোগান শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, কারণ এসব পণ্যের অনেকটাই চীন থেকে আসে এবং এখন সেগুলোর ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকটই জলবায়ু নীতিকে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত করার এক বিরল সুযোগ এনে দিয়েছে। ইউরোপ ইতিমধ্যেই কার্বন কর চালু করেছে, আর যুক্তরাষ্ট্রেও এই বিষয়ে নীতিগত আলোচনা শুরু হয়েছে। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ও বিল ক্যাসিডি একটি সীমান্ত কার্বন ফি প্রস্তাব করেছেন, যা উচ্চ-নিষ্কাশনকারী দেশগুলোকে প্রতিযোগিতায় সুবিধা পেতে বাধা দেবে। অন্যদিকে ভারত ও ব্রাজিলের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো এই ধরনের পদক্ষেপকে এক ধরনের বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছে। তবু বর্তমান প্রেক্ষাপটে জলবায়ু ও বাণিজ্য একে অপরের সঙ্গে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।