সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে ঘিরে বার বার অশান্ত হয়ে উঠছে ভারতের মুর্শিদাবাদের সুতি, সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ান। সকাল থেকেই থমথমে পরিবেশ থাকলেও পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে তিনজনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পর।
পুলিশকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শুক্রবার ও শনিবার ওয়াকফ আইনকে ঘিরে ওই অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, হামলা ও ভাঙচুর মিলিয়ে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, জাফরাবাদে নিহতরা বাবা ও ছেলে। তাদের বাড়িতে শনিবার হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে।
ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধের পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদ। এ দিন রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া গেলেও চিত্রটা বদলে যায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে।
ধুলিয়ান ও সুতির বিভিন্ন এলাকা থেকে শনিবার নতুনভাবে সহিংসতার খবর প্রকাশ্যে আসতে থাকে। ধুলিয়ানে আজ একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল বা এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাতে সুতিতেও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজনসহ দু’জনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
এদিকে, বারেবারে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা এলাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে রাস্তায় বিএসএফ নামানো হয়েছে। কড়া পুলিশি পাহারাও আছে। কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে।
সুতির এক বাসিন্দা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “ধুলিয়ান এবং সুতি গত কয়েকদিন ধরে অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে। এখানে ভয়ের পরিবেশ রয়েছে।” ওই স্থানীয় বাসিন্দা সরকারি দফতরের একজন পদস্থ কর্মচারী।
তিনি বলেছেন, “পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, বাস ভাঙচুর করা হয়েছে, আগুন লাগানো হয়েছে। সোনার দোকান, মিষ্টির দোকান, ব্যক্তিগত বাসভবনে লুট করা হয়েছে। পুলিশ বা প্রশাসন কিছুই করতে পারেনি। পরে বিএসএফ বাহিনী নামানো হয়। কিন্তু পরিস্থিতি ভালো নয়।”
অভিযোগ, লুটপাট চালানো হয়েছে একাধিক শপিং মলেও।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। স্পেশাল বেঞ্চে হওয়া সেই মামলার শুনানির পর কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তার আগে অবশ্য আদালত রাজ্যের কাছে মতামত জানতে চেয়েছিল।

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে। কলকাতাতেও বিক্ষোভ হয়েছে।
গত মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথপুরে সহিংসতা ঘটে। বুধবার সুতি থানা এলাকায়ও সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। কয়েকটি মুসলিম সংগঠনের বিক্ষোভের পরে এই দুটি থানা এলাকায় পাঁচ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ওই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
এক দিন পর শুক্রবার আবার পরিবেশ অশান্ত হয়ে ওঠে। মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় বিক্ষোভকে ঘিরে বেশ উত্তপ্ত হয়ে যায় পরিস্থিতি। মুর্শিদাবাদের উমরপুর, সুতি, সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ানে দফায় দফায় সহিংসতা সৃষ্টি হয়।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জন্য তৃণমূলের সরকারকেই দায়ী করেছে বিজেপি, কংগ্রেস এবং বামেরা।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শুক্রবার রাতেই একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, “প্রতিবাদ মেনে নেওয়া যায়, তবে তাণ্ডব নয়। রাজ্য পুরোপুরি প্রস্তুত। আইন ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।”
এই পরিস্থিতিতে শনিবার দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী একটি বিবৃতি দেন। সেখানে তিনি বলেছেন, “সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনো অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না।”
“প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান, রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না। দাঙ্গা যারা করছেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন।”
“মনে রাখবেন, যে আইনের বিরুদ্ধে অনেকে উত্তেজিত, সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে। আমরা এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে বলেছি – আমরা এই আইনকে সমর্থন করি না। এই আইন আমাদের রাজ্যে লাগুও হবে না। তাহলে দাঙ্গা কীসের?”

পুলিশ কী বলছে?
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনকে ঘিরে শুক্রবার সুতি, ধুলিয়ান, উমরপুরে দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এর জেরে দু’পক্ষেরই অনেকে শুক্রবার আহত হন বলে খবর পাওয়া গেছে।
সুতিতে শুক্রবার একজন অপ্রাপ্তবয়স্কসহ দুইজন গুলিবিদ্ধ হয় বলে পুলিশ নিশ্চিত করে।
অভিযোগ ওঠে, সুতির সাজুর মোড়ে বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরে গুরুতর জখম হন ফারাক্কার এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান। রাতে ওই অঞ্চলেরই ট্রাফিক পুলিশের একটি চৌকিতে ভাঙচুর চালানোর পর সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।
এদিকে, পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না প্রশাসন–– এই অভিযোগ তুলে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার যেমন তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির প্রসঙ্গ এনে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ তুলেছেন, তেমনই পুলিশি ‘বলপ্রয়োগের’ অভিযোগ জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

এই পরিস্থিতিতে শনিবার বেলা একটা নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করেন পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। তিনি বলেছেন, “সরকারের তরফ থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট করে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কোনোরকম গুন্ডাগিরি মেনে নেওয়া হবে না। আমরা কঠোরভাবে এর মোকাবিলা করছি।”
গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনোরকম কমিউনাল সিচুয়েশন (সাম্প্রদায়িক অশান্তির পরিস্থিতি) তৈরি হলে ভেস্টেড ইন্টেরেস্ট (কায়েমি স্বার্থ) নিয়ে চলা লোকেরা তার সুযোগ নেয়। কালকের ঘটনার সূত্রপাত হয় একটা বিক্ষোভ প্রদর্শনের মাধ্যমে, তারপর সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়, তারপর তা সাম্প্রদায়িক মোড় নেয়। “
পুলিশের ভূমিকার বিষয়েও কথা বলেন তিনি। মি. কুমার বলেছেন, “আমি সাধারণ মানুষকে জানাতে চাই যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রথমে মিনিমাম ফোর্স (ন্যুনতম বল) ব্যবহার করে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা অ্যাকশন শাই (প্রয়োজনে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হব)।”
“মানুষের প্রাণ সংশয় হয় এমন পরিস্থিতি এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি কোনোমতেই সহ্য করা হবে না। আমরা কড়া হাতে এর মোকাবিলা করব। সে যেই হোক, যারা অশান্তি সৃষ্টি চেষ্টা করবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেব।”
এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মি. শামিম। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার সুতি ও ধুলিয়ান অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৫ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন, এর মধ্যে একাধিকজনের আঘাত গুরুতর।

পরিস্থিতি সামাল দিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারে পক্ষ থেকে এডিজি সিআইএফ, এএসপি মালদহসহ একাধিক কর্মকর্তাকে মুর্শিদাবাদে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার রাতেই বিএসএফ বাহিনী নামানো হয়।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর ডিআইজি (পিআরও) নীলোৎপল কুমার পান্ডে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা বদ্ধপরিকর। অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনীও মোতায়েন করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা কী বলেছেন?
সুতির এক বাসিন্দা বলেছেন, “গত কয়েকদিন ধরে বার বার এখানে সংঘর্ষকে ঘিরে ভয়ের পরিবেশ রয়েছে। আজও একই পরিস্থিতি আছে।”
একই কথা জানিয়েছেন আরও একজন স্থানীয় বাসিন্দা। বার্তা সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেছেন, “আতঙ্কে কাল আমরা গোটা রাত ঘুমাতে পারিনি, জেগে বসেছিলাম।”
“একাধিক দোকান লুট করেছে, আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কাল হোটেল ও লজে ভাঙচুর চালানো হয়েছে, আগুন লাগানো হয়েছে। কাছেই পুরানো ডাকবাংলোর কাছে আমার মামার দোকান রয়েছে। সেখানে ভাঙচুর চালানোর পর, সেখানে লুটপাট চালানো হয়। কী হবে জানি না।”
অভিযোগ উঠেছে, রেলপথও অবরোধ করেছিল বিক্ষোভকারীরা। সেই সময় তারা ভাঙচুর চালায়, রেলের সম্পত্তি নষ্ট করা হয়, লুটপাটও চালানো হয়। রেল চলাচল ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়।
ধুলিয়ানের রেলের গেটকিপার হিসাবে কর্মরত পিন্টু মাঝি বার্তাসংস্থা এএনআইকে বলেছেন, “কাল জমায়েতের সময় রেলের গেট ফেলতে দেওয়া দিচ্ছিল না। ভিড় বাড়তে থাকে। এরপর মেশিনপত্র, সিগন্যাল প্যানেল ভাঙচুর করে। সিগন্যাল না হওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়, কিন্তু ট্রেন চলাচল শুরু হতে হতে রাত হয়ে যায়।”
রেলের রিলে রুমেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। “কিছুই নষ্ট করতে বাকি রাখেনি। টেকনিক্যাল জিনিসপত্র তো নষ্ট করেছেই, বসার চেয়ারও নিয়ে গেছে।”

কী ঘটেছিল শুক্রবার
চলতি সপ্তাহে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মুর্শিদাবাদ জেলার একাধিক অঞ্চল। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে একাধিক মুসলিম সংগঠন। সুতি, সামশেরগঞ্জে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল দেখা গিয়েছে শুক্রবার।
বিক্ষোভকারীরা ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে তাদের পুলিশি বাধার মুখোমুখি হতে হয়। অভিযোগ, সেই সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর এবং বোমাও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চার্জ করে, কাঁদানে গ্যাসের সেলও ছোঁড়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ইটের আঘাতে জখম হয়েছেন একাধিক পুলিশকর্মী। এদিকে, বিক্ষোভকারীদের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশ ব্যাপক মারধর করেছে, বিক্ষুব্ধদের অনেকে আহত হয়েছেন।
জাতীয় সড়কে একাধিক যান বাহনে ভাঙচুর চালানো এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই তালিকায় সরকারি বাস, অ্যাম্বুলেন্সও রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রোগীকে উত্তরবঙ্গে পৌঁছে দিয়ে ফিরছিল ওই অ্যাম্বুলেস। সেই সময় তার চালককে মারধর করে বিক্ষোভকারীরা। এরপর অ্যাম্বুলেন্স অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ট্রাফিক পুলিশের চৌকিতে, ধুলিয়ান এবং সুতির একাধিক দোকান ও ভবনে বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর চালায় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন। একাধিক মোটরবাইকে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এদিকে শুক্রবার রাতে সুতিতে দু’জনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এর মধ্যে একজন নাবালক। তার আত্মীয় ওই সময় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “মাসির বাড়ি থেকে ফিরছিল ছেলেটা। সেই সময় বিক্ষোভ চলছিল। গুলি লেগেছে। ও (আহত কিশোর) আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছে।”

সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে।
এদিকে রাজ্যে চলতে থাকা বিক্ষোভের মাঝেই আগামী বুধবার এই নিয়ে বৈঠকের ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এই আইনের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি প্রথম থেকেই সোচ্চার ছিলেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জোর করে আইন পাশ করার অভিযোগ তুলে তিনি জানিয়েছেন যে পশ্চিমবঙ্গে তা (সংশোধিত ওয়াকফ আইন) তিনি জারি হতে দেবেন না।
কলকাতায় আগামী সপ্তাহের ওই বৈঠকে এই বিষয়ে তিনি আলোচনা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। ইমাম-মোয়াজ্জেনদের পাশাপাশি সমাজের বিশিষ্টজনদেরও সেখানে থাকার কথা।

ত্রিপুরায়ও সহিংসতা
ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে শনিবার ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার কৈলাশহর কুবঝার এলাকায় সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। একটি বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি হয়। এসময় পুলিশের সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
পরে কাঁদানো গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী।
এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ডিআইজি রতিরঞ্জন দেবনাথ, জেলার পুলিশ সুপার কান্তা জাহাঙ্গীরসহ কর্মকর্তারা।
ডিআইজি জানান, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়া হয়েছে, তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়েছে। এতে করে পুলিশের বেশ কিছু সদস্য আহত হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের ব্যাপারে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিবিসি বাংলা