০৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
‘ঢাকা লকডাউনে’র দিনে সকাল থেকে যে পরিস্থিতি দেখা গেল ডেভিল ওয়্যারস প্রাডা ২: টিজার ফিরল — পুরনো রাগ, নতুন অবস্থা হুট করে যাওয়ার সংস্কার — শেষ মুহূর্তের ভ্রমণে বাজার বদল এবারও থেমে গেল আসন্ন সোপ — অস্ট্রেলিয়ার COP বার্তা অনিশ্চিতে জুলাই সনদ থেকে নিজেই সরে এসেছেন প্রধান উপদেষ্টা—বললেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে মহাকাশে উড়ে গেল মারিও: ‘সুপার মারিও গ্যালাক্সি’ ছবিতে রোজালিনার ভূমিকায় ব্রি লারসন হ্যারিকেন মেলিসায় বিধ্বস্ত দ্বীপে ‘জামাইকা স্ট্রং’ কনসার্টে এগিয়ে শ্যাগি–শন পল ফসিল জ্বালানির নির্গমন আবারও বেড়েছে, COP৩০ আলোচনায় চাপ বাড়ল ব্ল্যাক ফ্রাইডে–সাইবার মানডে ধরে সুইচ বিক্রির আরেক দফা জোর দিচ্ছে নিন্টেন্ডো

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মামলার বাস্তবতা

  • Sarakhon Report
  • ১২:৫৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • 91

সারাক্ষণ রিপোর্ট

রাজনৈতিক প্রভাব এবং মেটার প্রস্তুতি

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গ ২.৩ কোটি ডলারের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন। এই বাসস্থানটি মেটার রাজনৈতিক লবিংয়ের প্রতীক। ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে ১০ লাখ ডলার অনুদান, একটি মামলার নিষ্পত্তিতে ২.৫ কোটি ডলার পরিশোধ এবং ডানা হোয়াইট ও ডিনা পাওয়েলের মতো ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠদের বোর্ডে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মেটা তাদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট।

এই সব উদ্যোগের মূল কারণ ১৪ এপ্রিল শুরু হওয়া একটি অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা, যা জাকারবার্গের ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য ভেঙে ফেলার হুমকি তৈরি করেছে।

মামলার অভিযোগ ও বাস্তবতা

২০২০ সালে মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (FTC) অভিযোগ করে, ফেসবুক (বর্তমানে মেটা) ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণের মাধ্যমে অবৈধভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একচেটিয়া বাজার তৈরি করেছে। যদিও অধিগ্রহণের সময় FTC নিজেই অনুমোদন দিয়েছিল, এখন তারা সেই চুক্তিগুলো বাতিল করতে চায়।

FTC মেটার বাজারকে ‘ব্যক্তিগত সামাজিক নেটওয়ার্কিং’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে, যা প্রতিযোগী হিসেবে এক্স, লিংকডইন, পিন্টারেস্ট বা রেডিটকে অন্তর্ভুক্ত করেনি। তাদের মতে, মেটার প্রতিদ্বন্দ্বী কেবল স্ন্যাপচ্যাট ও মি-উই—যারা তুলনামূলকভাবে অনেক ছোট।

প্রতিযোগিতা এখন আগের চেয়ে বেশি

FTC দাবি করে, বাজারে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে মেটা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক নতুন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এসেছে—ক্লাবহাউস ও বি-রিয়েল যেমন হঠাৎ আলোচনায় আসে, আবার ম্লান হয়ে যায়। ব্লুস্কাই বা ট্রুথ সোশ্যালের মতো অ্যাপগুলো এখনও সক্রিয়। আর টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্ম ১৫০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী পেয়েছে, যা একচেটিয়ার ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে।

এছাড়া ইউটিউবের ‘শর্টস’, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের রিলস—সবই টিকটকের আদলে তৈরি ভিডিও-ভিত্তিক কনটেন্টের অংশ। স্পটিফাই যেমন ভিডিওতে প্রবেশ করেছে, রোব্লক্সও তরুণদের জন্য সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা পালন করছে।

ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা এবং FTC-এর যুক্তি

FTC অভিযোগ করছে, প্রতিযোগিতার অভাবে মেটার অ্যাপে বিজ্ঞাপন বেড়েছে এবং ব্যবহারকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু ব্যবহারকারীদের ব্যবহারের ধরন বলে ভিন্ন কথা—বিশ্বজুড়ে মোবাইল ব্যবহারের প্রায় অর্ধেক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাটছে।

পিতামাতারা তাদের সন্তানদের সোশ্যাল অ্যাপ ব্যবহারের নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও কেউ বলছেন না যে অ্যাপের সংখ্যা কম। বরং বাস্তবতা হলো—মানুষ এসব অ্যাপ থেকে মুখ ফেরাতে পারছে না।

টিকটক এবং বিচারিক জটিলতা

এফটিসি যখন বলে মেটার প্রতিযোগী নেই, তখন টিকটক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই অনিশ্চয়তা। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় এটি নিষিদ্ধ হলেও এখন ৭৫ দিন বা ১৫০ দিনের সময় দিয়ে মার্কিন ক্রেতার কাছে বিক্রির চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে টিকটকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত—এ অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিযোগিতা নিয়ে কোনও সঠিক রায় দেয়া কঠিন।

উপসংহার

যে মামলা দুর্বল ভিত্তিতে শুরু হয়েছিল,সেটি এখন একেবারেই হাস্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। আদালতের উচিত দ্রুত এই মামলাকে ‘সুইপ’ করে সরিয়ে দেওয়া।

জনপ্রিয় সংবাদ

‘ঢাকা লকডাউনে’র দিনে সকাল থেকে যে পরিস্থিতি দেখা গেল

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মামলার বাস্তবতা

১২:৫৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

রাজনৈতিক প্রভাব এবং মেটার প্রস্তুতি

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গ ২.৩ কোটি ডলারের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন। এই বাসস্থানটি মেটার রাজনৈতিক লবিংয়ের প্রতীক। ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে ১০ লাখ ডলার অনুদান, একটি মামলার নিষ্পত্তিতে ২.৫ কোটি ডলার পরিশোধ এবং ডানা হোয়াইট ও ডিনা পাওয়েলের মতো ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠদের বোর্ডে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মেটা তাদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট।

এই সব উদ্যোগের মূল কারণ ১৪ এপ্রিল শুরু হওয়া একটি অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা, যা জাকারবার্গের ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য ভেঙে ফেলার হুমকি তৈরি করেছে।

মামলার অভিযোগ ও বাস্তবতা

২০২০ সালে মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (FTC) অভিযোগ করে, ফেসবুক (বর্তমানে মেটা) ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণের মাধ্যমে অবৈধভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একচেটিয়া বাজার তৈরি করেছে। যদিও অধিগ্রহণের সময় FTC নিজেই অনুমোদন দিয়েছিল, এখন তারা সেই চুক্তিগুলো বাতিল করতে চায়।

FTC মেটার বাজারকে ‘ব্যক্তিগত সামাজিক নেটওয়ার্কিং’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে, যা প্রতিযোগী হিসেবে এক্স, লিংকডইন, পিন্টারেস্ট বা রেডিটকে অন্তর্ভুক্ত করেনি। তাদের মতে, মেটার প্রতিদ্বন্দ্বী কেবল স্ন্যাপচ্যাট ও মি-উই—যারা তুলনামূলকভাবে অনেক ছোট।

প্রতিযোগিতা এখন আগের চেয়ে বেশি

FTC দাবি করে, বাজারে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে মেটা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক নতুন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এসেছে—ক্লাবহাউস ও বি-রিয়েল যেমন হঠাৎ আলোচনায় আসে, আবার ম্লান হয়ে যায়। ব্লুস্কাই বা ট্রুথ সোশ্যালের মতো অ্যাপগুলো এখনও সক্রিয়। আর টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্ম ১৫০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী পেয়েছে, যা একচেটিয়ার ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে।

এছাড়া ইউটিউবের ‘শর্টস’, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের রিলস—সবই টিকটকের আদলে তৈরি ভিডিও-ভিত্তিক কনটেন্টের অংশ। স্পটিফাই যেমন ভিডিওতে প্রবেশ করেছে, রোব্লক্সও তরুণদের জন্য সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা পালন করছে।

ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা এবং FTC-এর যুক্তি

FTC অভিযোগ করছে, প্রতিযোগিতার অভাবে মেটার অ্যাপে বিজ্ঞাপন বেড়েছে এবং ব্যবহারকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু ব্যবহারকারীদের ব্যবহারের ধরন বলে ভিন্ন কথা—বিশ্বজুড়ে মোবাইল ব্যবহারের প্রায় অর্ধেক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাটছে।

পিতামাতারা তাদের সন্তানদের সোশ্যাল অ্যাপ ব্যবহারের নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও কেউ বলছেন না যে অ্যাপের সংখ্যা কম। বরং বাস্তবতা হলো—মানুষ এসব অ্যাপ থেকে মুখ ফেরাতে পারছে না।

টিকটক এবং বিচারিক জটিলতা

এফটিসি যখন বলে মেটার প্রতিযোগী নেই, তখন টিকটক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই অনিশ্চয়তা। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় এটি নিষিদ্ধ হলেও এখন ৭৫ দিন বা ১৫০ দিনের সময় দিয়ে মার্কিন ক্রেতার কাছে বিক্রির চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে টিকটকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত—এ অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিযোগিতা নিয়ে কোনও সঠিক রায় দেয়া কঠিন।

উপসংহার

যে মামলা দুর্বল ভিত্তিতে শুরু হয়েছিল,সেটি এখন একেবারেই হাস্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। আদালতের উচিত দ্রুত এই মামলাকে ‘সুইপ’ করে সরিয়ে দেওয়া।