সত্যেন্দ্রকুমার বসু
মন্তব্যগুলি কতকটা ইউরোপীয় মিশনারীদের মতন হল। পরের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি শ্যেনদৃষ্টি, নিজেদের বেলা যাই হোক না কেন! কয়েক মাস তিনি এই অঞ্চলে- আধুনিক দেরাদুন, হরিদ্বার, গাড়োয়াল ইত্যাদি স্থানে কাটান।
তার পর পশ্চিম রোহিলখণ্ডে, মতিপুর, অহিচ্ছত্র (বর্তমান রামনগর) ইত্যাদি স্থানে চার-পাঁচ মাস থেকে বৌদ্ধ প্রথামত বর্ষাবাস যাপন করেন ও স্থানীয় পণ্ডিতদের সঙ্গে নানা শাস্ত্র পাঠ করেন। তার পর দক্ষিণ-পূবে এসে গঙ্গাপার হয়ে আধুনিক ইটা জেলায় এলেন। এ প্রদেশে সে সময়ে ‘বীরাসন’ নামে একটি নগর ছিল আর তার কাছেই ‘কপিখ’ বা সঙ্কাশ্য।
বুদ্ধ একবার দেবতাদের আর তাঁর স্বর্গগতা মাতা মায়াদেবীকে ধর্মোপদেশনা দেবার জন্যে ত্রয়স্ত্রিংসৎ স্বর্গে তিন মাসের জন্যে গিয়েছিলেন। জম্বুদ্বীপে ফিরবার সময়ে দেবরাজ শত্রু তাঁর জন্যে স্বর্গ থেকে এই সঙ্কাশ্য পর্যন্ত তিনটা সিঁড়ি তৈরি করে দিয়েছিলেন।
মধ্যের সিঁড়িটা দিয়ে স্বয়ং বুদ্ধ, তাঁর ডান দিকের সিঁড়ি দিয়ে শ্বেতচামর হস্তে ব্রহ্মা, আর বাঁ দিকের সিঁড়ি দিয়ে ছত্র হস্তে শত্রুদেব নেমেছিলেন। ‘কয়েক শত বছর আগে এ তিনটা সিঁড়ি মাটির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যায়। সেজন্যে কাছাকাছি যে রাজারা ছিলেন, তাঁরা রত্নখচিত তিনটা ইটের সিড়ি যথাস্থানে তৈরি করে দিয়েছেন। এগুলি আন্দাজ সত্তর ফুট উঁচু।’
(চলবে)