১১:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫
সপ্তাহান্তের ছোটখাটো খুশি—ঢাকার হোটেলে একটি পরিবারের ডিনার পরিকল্পনা ট্রাম্প রাশিয়ার উত্তেজক বিবৃতির পর দুইটি পারমাণবিক সাবমেরিন স্থানান্তরের নির্দেশ দিলেন হিউএনচাঙ (পর্ব-১৬১) ড্রাগ বা ডায়েট ছাড়া কীভাবে চীনে এক ইনফ্লুয়েন্সার পাঁচ বছরে ৬০ কেজি ওজন কমিয়েছেন ট্রাম্পের ট্যারিফে আফ্রিকা চীনের কোলে মাশরাফি বিন মর্তুজা: বাংলাদেশের এক মহান ক্রিকেটারের জীবনগাথা ট্রাম্পের শুল্ক ভারতের ৪০ বিলিয়ন ডলারের রফতানির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে ফেডারেল তহবিল কাটা যাওয়ায় পাবলিক ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন বন্ধ, স্থানীয় গণমাধ্যমে বড় ধাক্কা ট্রেড আলোচনা স্থবির, শুল্ক হুমকি বাড়ছে: যুক্তরাষ্ট্র–ভারত অংশীদারিত্বে টানাপোড়ন  বাংলাদেশে দুই কোটি হিন্দুর ও প্রগতিশীল মুসলিমদের ভবিষ্যত কি?

দেশে তরুণীদের মধ্যে বাড়ছে মাদকাসক্তি

  • Sarakhon Report
  • ০৬:০০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • 60

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বাংলাদেশে তরুণীদের মধ্যে মাদকাসক্তির হার উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক গবেষণা ও প্রতিবেদনসমূহে দেখা গেছে, সামাজিক, মানসিক ও পারিবারিক নানা কারণে তরুণীরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এই প্রবণতা শুধু তাদের ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, সমাজের সার্বিক স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

মাদকাসক্তির কারণসমূহ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তরুণীদের মাদকাসক্তির পেছনে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • মানসিক ট্রমা ও অবসাদ: শৈশবের নির্যাতন, পারিবারিক অশান্তি ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা।
  • বন্ধু ও আত্মীয়দের প্রভাব: বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে গিয়ে বা তাদের প্ররোচনায় মাদক গ্রহণের সূচনা।
  • কৌতূহল ও উত্তেজনা খোঁজা: নতুন অভিজ্ঞতা লাভের ইচ্ছা থেকে মাদক গ্রহণ।
  • সহজলভ্যতা: অবৈধ ওষুধ ও মাদকের সহজ প্রাপ্তি।
  • সামাজিক কলঙ্ক: মাদকাসক্তি নিয়ে সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, যা পুনর্বাসনের পথে বাধা সৃষ্টি করে।

কেস স্টাডি ১: শারমিন (ছদ্মনাম)১৯ঢাকা

শারমিন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পারিবারিক অশান্তি ও প্রেমের সম্পর্কের জটিলতায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বন্ধুর পরামর্শে তিনি প্রথমে ঘুমের ওষুধ গ্রহণ শুরু করেন, যা পরবর্তীতে ইয়াবা সেবনে রূপ নেয়। মাদকাসক্তির কারণে তার পড়াশোনা ব্যাহত হয় এবং তিনি সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

কেস স্টাডি ২: রুবিনা (ছদ্মনাম)২২সিলেট

রুবিনা একটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গে পার্টিতে গিয়ে প্রথমবার মাদক গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি নিয়মিত মাদক সেবন করতে থাকেন। মাদক কেনার অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে তিনি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।

প্রতিরোধ ও করণীয়

  • সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: মাদকাসক্তির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
  • পারিবারিক সহায়তা: পরিবারের সদস্যদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা ও সমর্থন নিশ্চিত করা।
  • মানসিক স্বাস্থ্যসেবা: তরুণীদের জন্য সহজলভ্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান।
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরামর্শ কেন্দ্র: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরামর্শ ও সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন।
  • আইন প্রয়োগ ও পুনর্বাসন: মাদক চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং মাদকাসক্তদের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি।

উপসংহার

বাংলাদেশে তরুণীদের মধ্যে মাদকাসক্তি একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতনতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তরুণীদের সুস্থ ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

জনপ্রিয় সংবাদ

সপ্তাহান্তের ছোটখাটো খুশি—ঢাকার হোটেলে একটি পরিবারের ডিনার পরিকল্পনা

দেশে তরুণীদের মধ্যে বাড়ছে মাদকাসক্তি

০৬:০০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বাংলাদেশে তরুণীদের মধ্যে মাদকাসক্তির হার উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক গবেষণা ও প্রতিবেদনসমূহে দেখা গেছে, সামাজিক, মানসিক ও পারিবারিক নানা কারণে তরুণীরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এই প্রবণতা শুধু তাদের ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, সমাজের সার্বিক স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

মাদকাসক্তির কারণসমূহ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তরুণীদের মাদকাসক্তির পেছনে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • মানসিক ট্রমা ও অবসাদ: শৈশবের নির্যাতন, পারিবারিক অশান্তি ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা।
  • বন্ধু ও আত্মীয়দের প্রভাব: বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে গিয়ে বা তাদের প্ররোচনায় মাদক গ্রহণের সূচনা।
  • কৌতূহল ও উত্তেজনা খোঁজা: নতুন অভিজ্ঞতা লাভের ইচ্ছা থেকে মাদক গ্রহণ।
  • সহজলভ্যতা: অবৈধ ওষুধ ও মাদকের সহজ প্রাপ্তি।
  • সামাজিক কলঙ্ক: মাদকাসক্তি নিয়ে সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, যা পুনর্বাসনের পথে বাধা সৃষ্টি করে।

কেস স্টাডি ১: শারমিন (ছদ্মনাম)১৯ঢাকা

শারমিন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পারিবারিক অশান্তি ও প্রেমের সম্পর্কের জটিলতায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বন্ধুর পরামর্শে তিনি প্রথমে ঘুমের ওষুধ গ্রহণ শুরু করেন, যা পরবর্তীতে ইয়াবা সেবনে রূপ নেয়। মাদকাসক্তির কারণে তার পড়াশোনা ব্যাহত হয় এবং তিনি সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

কেস স্টাডি ২: রুবিনা (ছদ্মনাম)২২সিলেট

রুবিনা একটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গে পার্টিতে গিয়ে প্রথমবার মাদক গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি নিয়মিত মাদক সেবন করতে থাকেন। মাদক কেনার অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে তিনি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।

প্রতিরোধ ও করণীয়

  • সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: মাদকাসক্তির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
  • পারিবারিক সহায়তা: পরিবারের সদস্যদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা ও সমর্থন নিশ্চিত করা।
  • মানসিক স্বাস্থ্যসেবা: তরুণীদের জন্য সহজলভ্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান।
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরামর্শ কেন্দ্র: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরামর্শ ও সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন।
  • আইন প্রয়োগ ও পুনর্বাসন: মাদক চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং মাদকাসক্তদের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি।

উপসংহার

বাংলাদেশে তরুণীদের মধ্যে মাদকাসক্তি একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতনতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তরুণীদের সুস্থ ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।