সত্যেন্দ্রকুমার বসু
‘তখন প্রধানমন্ত্রী ভাণ্ডী ও অন্যান্য রাজকর্মচারীরা হর্ষবর্ধনকে সর্বগুণে মণ্ডিত দেখে তাঁকেই রাজা হতে আমন্ত্রণ করলেন। হর্ষবর্ধন প্রথমে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, পরে সকলের অনুরোধে ‘কুমার শীলাদিত্য’ নাম নিয়ে সিংহাসনে আরোহণ করলেন।
তার পর বহু সৈন্যদল সংগ্রহ করে তিরিশ বছরে পূবে ও পশ্চিমে সমস্ত দেশ জয় করেন। গত ছয় বছর তাঁর আর যুদ্ধ করতে হয় নি। তখন থেকে শান্তিতে রাজত্ব করছেন। ২৩ তিনি নিজে সংযমী। আহার নিদ্রা ত্যাগ করে পুণ্যের বৃক্ষ রোপন করতে আগ্রহান্বিত। তাঁর সমস্ত রাজ্যে জীবহত্যা নিষিদ্ধ।
গঙ্গাতীরে তিনি সহস্র সহস্র ১০০ ফুট উঁচু স্তূপ নির্মাণ করেছেন। সেসব জায়গায় পান্থ ও দরিদ্র অধিবাসীদের জন্যে চিকিৎসক, ঔষধ ও আহার্য রাখা আছে। ‘প্রতি পাঁচ বছরে তিনি এক মহামোক্ষপরিষদ আহ্বান করেন।
এ সময়ে কেবল সৈন্যদের খরচ হাতে রেখে রাজকোষের অন্য সমস্ত অর্থ দান করেন। প্রতি বৎসর তিনি সমস্ত দেশের শ্রমণদের আহ্বানকরে চতুর্থ ও সপ্তম দিনে তাদের চার রকম দান (আহার্য, পানীয়, ঔষধ ও বস্ত্র) বিতরণ করেন।
তার পর বেদী সজ্জিত করে ভিক্ষুদের শাস্ত্র বিচার করতে বলেন আর নিজেই তর্কের ফল বিচার করেন। তিনি সাধুদের পুরস্কৃত করেন, অসাধুদের শাস্তি দেন, নির্গুণকে অবনত করান, গুণীকে উন্নত করেন।
সাধু ও জ্ঞানী ভিক্ষুদের সিংহাসনে বসিয়ে নিজে উপদেশ গ্রহণ করেন। সাধু জ্ঞানী না হলেও ভক্তির পাত্র হন, কিন্তু পূজিত হন না।
(চলবে)