সারাক্ষণ রিপোর্ট
অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় আসার পর বৈদেশিক ঋণ প্রতিশ্রুতি দ্রুত কমে গেছে, বিপরীতে ঋণ পরিশোধ ও মুদ্রাস্ফীতি উভয়ই বেড়েছে। আইএমএফ‑সহ প্রধান দাতা সংস্থাগুলো রাজনৈতিক‑সামাজিক স্থিতিশীলতা, বিনিময়হার সংস্কার ও রাজস্ব পুনর্গঠনের শর্ত পূরণ না‑হওয়া পর্যন্ত নতুন অর্থ ছাড়ে অনীহা দেখাচ্ছে।
বৈদেশিক ঋণ‑প্রতিশ্রুতির বর্তমান চিত্র
• জুলাই‑মার্চে নতুন ঋণ‑প্রতিশ্রুতি ৩০০ কোটি ৫৩ লাখ ডলারে নেমেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৮ শতাংশ কম।
• আইএডিবি, বিশ্বব্যাংক, জাপান ইত্যাদির সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি আগের বছরের অর্ধেকেরও কম ।
• এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সর্বোচ্চ ৭০ কোটি ডলার প্রতিশ্রুতি দিলেও এটিও আগের বছরের চেয়ে কম ।
আইএমএফ কর্মসূচি
• ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের কর্মসূচির চতুর্থ‑পঞ্চম কিস্তি ১.৩ বিলিয়ন ডলার ঝুলে আছে; বিনিময়হার শিথিলকরণ ও ভ্যাট‑সংস্কার কৌশলে বিলম্বই বড় কারণ ।
চীনা ও ইউরোপীয় প্রতিশ্রুতি
• চীন ২.১ বিলিয়ন ডলার ঋণ‑বিনিয়োগ‑অনুদানের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে স্বল্পসুদে অবকাঠামো ও পানি‑সম্পদ প্রকল্পও আছে ।
• ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও মানবাধিকার অগ্রগতি সাপেক্ষে অর্থায়ন দ্বিগুণ করে ২ বিলিয়ন ইউরো করায় আগ্রহী ।
অর্থনীতির অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ
• এপ্রিল ২০২৫‑এ পয়েন্ট‑টু‑পয়েন্ট মুদ্রাস্ফীতি ৯.১৭ শতাংশ, যা দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হলেও এখনও উচ্চ ।
• বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ২২.০৪ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম৬ অনুযায়ী) ।
• ঋণ পরিশোধ জুলাই‑মার্চে ৩.২১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি ।
দাতা সংস্থার উদ্বেগ ও পর্যবেক্ষণ
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা—নির্বাচন সময়সূচি স্পষ্ট নয়; ২০২৫‑এর শেষ প্রান্তিকেও ভোট পিছোতে পারে ।
প্রকল্প বাস্তবায়ন শ্লথ—এডিপি অগ্রগতি দশ বছরে সর্বনিম্ন ।
কারেন্সি‑ম্যানেজমেন্ট—বহু বিনিয়োগকারী মার্কেট‑বেইজড রেট নিশ্চিত না‑হলে ঝুঁকি নেবে না ।
সম্ভাব্য ঝুঁকি
• রিজার্ভ ২০ বিলিয়নের ঘরে নেমে গেলে মূলদ্রব্য আমদানি ব্যাহত হতে পারে।
• আইএমএফ কিস্তি বন্ধ হলে অন্যান্য দাতাও ‘সিগন্যাল ইফেক্টে’ অর্থ ছাড় স্থগিত করতে পারে।
• হাইব্রিড অর্থে চীনা ঋণ দ্রুত নেওয়া হলে স্বচ্ছতা নিয়ে সমালোচনা বাড়তে পারে।