সারাক্ষণ রিপোর্ট
গত ৯ মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতি এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এবং বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে । এই অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব আবাসন খাতেও স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার বৃদ্ধির প্রভাব
২০২৪ সালে গড় মূল্যস্ফীতি ৯.৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের ৯.০ শতাংশ থেকে বেশি । এই মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিগত সুদের হার ১০.০ শতাংশে উন্নীত করেছে, যা ঋণের খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে, আবাসন খাতে বিনিয়োগ কমে গেছে এবং নতুন প্রকল্পের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য আবাসন আরও দূরহ
ঢাকার অনেক বাসিন্দা তাদের আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ ভাড়া দিতে ব্যয় করছেন । উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার বৃদ্ধির ফলে আবাসন খরচ আরও বেড়েছে, যা মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য নিজস্ব বাসস্থান অর্জনকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বিনিয়োগের স্থবিরতা
বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অনেক সম্ভাব্য ক্রেতা ও বিনিয়োগকারী আবাসন খাতে বিনিয়োগ থেকে বিরত থাকছেন । ফলে, আবাসন বাজারে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে এবং সম্পত্তির দাম স্থির বা নিম্নমুখী হয়েছে।
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসলে এবং সুদের হার কমলে আবাসন খাত পুনরুদ্ধার হতে পারে। তবে, এর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নীতিগত সহায়তা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ প্রয়োজন।
সার্বিকভাবে, বাংলাদেশের আবাসন খাত বর্তমানে একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছে। অর্থনৈতিক সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, সুদের হার বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এই খাতের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে, সঠিক নীতিগত পদক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারলে, আবাসন খাত পুনরায় বিকাশ লাভ করতে পারে।